কৃষকের ঐতিহ্যবাহী কৃষিজ সরল যন্ত্র কুস্শি এখন বিলুপ্তির পথে কৃষকের ঐতিহ্যবাহী কৃষিজ সরল যন্ত্র কুস্শি এখন বিলুপ্তির পথে – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রাজনগরের ফতেহপুর ইউপি চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাস সাময়িক বরখাস্ত কুলাউড়ায় ওয়াশ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন কমলগঞ্জে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের মতবিনিময় কুলাউড়া শাহ্জালাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষের বিদায়ী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ আত্রাইয়ে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন কুলাউড়ায় ইউনিয়ন ওয়াটসান কমিটির ওয়াশ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন মৌলভীবাজারে আগর-আতর শিল্পের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সেমিনার-উৎপাদন ও রপ্তানির জটিলতা নিরসনের দাবি ওসমানীনগরে লক্ষ টাকার চেয়ারম্যান কাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন কালবৈশাখী ঝড়ে লাউয়াছড়ায় গাছ পড়ে দুই ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধের পর চালু কুলাউড়ায় চাচা-ভাতিজা মুখোমুখি, চলছে বাকযুদ্ধ

কৃষকের ঐতিহ্যবাহী কৃষিজ সরল যন্ত্র কুস্শি এখন বিলুপ্তির পথে

  • রবিবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২১
রতি কান্ত রায়, কুড়িগ্রাম ::
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এ দেশের শতকরা ৮০ জন কৃষিজীবী, অবশিষ্ট ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী ও বুদ্ধিজীবী হলেও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের অর্থনীতির পুরো কাঠামোই কৃষি নির্ভর এবং কৃষির সঙ্গে এ দেশের অধিবাসীদের ভাগ্য অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
আগে কৃষকের ছিল গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর গোলা ভরা ধান। কৃষকরা জমি চাষের জন্য এক সময় লাঙ্গল, জোয়াল, মই ও হালের বলদ বা মহিষ ব্যবহার করতেন। চাষাবাদের এসব উপকরণ হাজার বছর ধরে ব্যবহার করে অাসছেন কৃষকরা ।
আধুনিকথার ছোঁয়ায় ও বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে কৃষি ক্ষেত্রেও।
তাই আর আগের মত প্রাণ মাতানো কৃষককে কুস্শী দ্বারা মাটির ডেলা ভাঙ্গার চটুল দৃশ্য চোখে পড়ে না পল্লীবাংলায়।
শুকনো মৌসুমে কৃষকরা গরুর হাল বা মহিষ দিয়ে জমি চাষ করার পরে জমিতে বড় বড় মাটির ডেলা হত। মইয়ের সাহায্যে ভূমি সমানকরণ করার পরেও যদি ডেলা না ভাঙ্গাতো তখন ওই মাটির ডেলা ভাঙ্গার জন্য কৃষক এক ধরনের গ্রীমীণ সরল যন্ত্র কুস্শি ব্যবহার করতেন। এই গ্রীমীণ যন্ত্রটির অাঞ্চলিক নাম কুস্শি। মাটির ডেলা ভাঙ্গার কাজে এটি  গ্রামাঞ্চলে অহরহ ব্যবহার হত ।
গ্রামাঞ্চলে কুস্শি চিনে না এমন লোক খুজে পাওয়া দুষ্কর।  গ্রামবাংলার প্রত্যেক কৃষকের ঘরে ঘরে ৩-৪টি করে কুস্শি থাকতো।
সরেজমিন ঘুরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ঘোগারকুটি গ্রামের বাসিন্দা অবসর প্রাপ্ত  বিজিবি সদস্য হাবিলদার কৃষ্ণ চন্দ্র রায়(দয়ালকে) গ্রীমীণ সরল যন্ত্র কুস্শি দিয়ে মাটির ডেলা ভাঙ্গাতে দেখা যায়। তার কাছে কুস্শি সম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন বড় বড় মাটির ডেলা ভাঙ্গার সনাতন পদ্ধতি এটি। শুকনো মৌসমে লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করলে  মাটি শুকিয়ে বড় বড় ডেলায় পরিণত হয়। এই ডেলা মই দিয়ে ভাঙ্গাতে না পারলে কৃষক কুস্শি ব্যবহার করতেন।মাঘমাস থেকে চৈত্রমাস পর্যন্ত চলতো ডেলা ভাঙ্গা। এক সময়ের জনপ্রিয় বিতরি ধান, কাউন, গম ইত্যাদি ক্ষেতে ডেলা ভাঙ্গাতে এই যন্ত্র ব্যবহার করা হত।
 কিন্তু বর্তমানে যান্ত্রিক পাওয়ার টিলার আর ট্রাক্টর  দিয়ে জমি চাষ করলে, জমিতে মাটির ডেলা হয় না। শাহবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক খোরশেদ আলম ও ফুলবাড়ী আবেদিয়া দাখিল মাদসার কৃষি শিক্ষক মিজানুর  রহমান জানান, কুস্শি (মুগুর) দুই ধরনের বড় হাতল বিশিষ্ট কুস্শি (মুগুর) ও ছোট হাতল বিশিষ্ট কুস্শি (মুগুর)। তারা আরও জানান বড় বড় ডেলা ভাঙ্গার জন্য মুগুর ব্যবহার হত। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে কুস্শির ব্যবহার অনেকটাই কমে গেছে।
গ্রামবাংলার এক সময়কার কৃষকের হাতের কৃষিজ সরল যন্ত্র কুস্শি এখন কালের স্রোতে হারিয়ে যেতে বসেছে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews