বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::
বড়লেখায় ভরণপোষন না দেওয়া, শারীরিক নির্যাতন, গুম ও পুড়িয়ে হত্যার হুমকির বিচার চেয়ে পৌরসভার হাটবন্দ এলাকার মৃত মনজ্জীর আলীর ছেলে ফয়ছল আহমদ সাগরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারই স্ত্রী সাহেদা আক্তার সাকি (৩৪)।
শুক্রবার বিকেলে পৌরসভা মিলনায়তনে অনুষ্টিত সংবাদ সম্মেলনে সাকি অভিযোগ করেন তার স্বামী ফয়ছল ৮ বছর ধরে সিলেটে অবস্থান করে সাংবাদিক পরিচয়ে মাদক ব্যবসা, নারী ব্যবসায়সহ নানা অপকর্ম চালাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিল তাদের এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে ইসরাত জাহান সুমাইয়া, এক শিশুপুত্র ও এক শিশুকন্যা।
লিখিত বক্তব্যে সাহেদা আক্তার সাকি (৩৪) জানান, ২০০২ সালে ফয়ছল আহমদ সাগরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর সংসার ভালোভাবে চলছিল। তাদের সংসারে চার সন্তান রয়েছে। প্রায় ৮ বছর আগে বড়লেখায় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার পর সিলেটে আত্মগোপন করেন তার স্বামী ফয়ছল আহমদ সাগর। সেখানে চাকরী করছেন জানিয়ে কয়েক মাস যোগাযোগ রাখেন। কিন্তু এরপর আর কোনো যোগাযোগ রাখেননি। তখন তিনি ৪ ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালাতে থাকেন। অসহায় হয়ে পড়েন। অনেক দিন পর মানুষের মাধ্যমে জানতে পারেন সিলেটে তিনি গোপনে বিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমার সাথে খারাপ আচরণ, মারধর শুরু করেন। সংসার খরচতো দেনই না, বরং মাঝেমধ্যে বাড়িতে এসে অমানবিক নির্যাতন চালান, বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। ৪ বাচ্চার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি তার সব নির্যাতন-অত্যাচার সহ্য করে যান। যৌতুক দাবী ও নির্যাতনের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেলে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জুলাই বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলার খবর জেনেই বাড়িতে এসে আমাকে ও বাচ্চাদের অমানসিক নির্যাতন চালান। বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাকে ও বাচ্চাদের গুম করার হুমকি দেন আর বলেন, তিনি একজন বড় সাংবাদিক, মামলা করে কিছুই করতে পারবি না। পুলিশের বড় বড় লোকজন উনার পকেটে। ভালোয় ভালোয় মামলা তুলে নেয়, নইলে পুড়িয়ে হত্যা করবেন।#
সাহেদা আক্তার (৩৪) আরো বলেন, ফয়ছল আহমদ সাগর সিলেটে অবস্থান করে একটি ভুয়া সাংবাদিক বাহিনী গড়ে তুলেছে। তার নেতৃত্বে এরা মানুষকে হয়রানি, প্রতারণাসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। যাদের কেউই পঞ্চম শ্রেণি পাশ নয়। সাংবাদিক পরিচয়ে সে ও তার বাহিনী ইয়াবা, গাঁজা, নারী ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম চালাচ্ছে। নিরাপত্তার কারণে এতদিন তিনি এসব অপকর্ম ফাঁস করেননি। তিনি ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে ফয়ছল আহমদ সাগর বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমার স্ত্রীকে প্রায় ৫ মাস আগে তালাক দিয়েছি। তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। নির্যাতনের অভিযোগও সঠিক নয়। পুলিশ আমার পকেটে থাকে, একথা বলিনি। কাউকে হুমকিও দেইনি। আমার সন্তানদের ভরণপোষণ সবই দিচ্ছি। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ইয়াবা, গাঁজা, নারী ব্যবসার বিষয়ে বলেন, আমি ১৭ বছর ধরে একটি জাতীয় পত্রিকায় কাজ করছি। আমার কোনো বাহিনী নেই। আমি কাউকে হয়রানিও করিনি। এসব মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র।
বড়লেখা থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, এ সংক্রান্ত নির্যাতনের কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply