রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা ফতেপুর ইউনিয়নে একই রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুইজনকে খুন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৯৫-৯৬ জন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতদের দাফন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বেতাহুঞ্জা গ্রামের আওয়ামী লীগ ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুন নূরের সাথে দীর্ঘদিন ধরে একটি মৎস খামার নিয়ে একই গ্রামের কমর উদ্দিনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩২) ও মোঃ তজমুল হকের ছেলে মোঃ জাবেদ আহমেদ সুজন (২৪) এর বিরোধ চলছিল। পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন নির্বাচনে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে উভয়পক্ষের মধ্যে পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়। এসব ঘটনার জেরে গত মঙ্গলবার (২৪ জুলাই ২০১৮) গভীর রাতে সিরাজুল ইসলাম ও মোঃ জাবেদ আহমেদ সুজনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আব্দুন নূরের মৎস খামারে হামলা চালায় বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়।
এসময় তাদের বাঁধা দিতে গেলে খামারের পাহারার দায়িত্বে থাকা আব্দুর রুফের ছেলে আব্দুর রহমান (৩৫) ও মৃত মইন মিয়ার ছেলে রজাক মিয়া (৩৭) তাদেরকে বেধরক মারধর করা হয়। তাদের হাল্লা-চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। হামলায় ঘটনাস্থলেই আং রহমান ও রজাক মিয়া মারা যান। ঘটনার দুইদিন পর ২৬ জুলাই আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুন নূর বাদী হয়ে রাজনগর থানায় মামলা (নং ১০/জিআর ১৯৫/১৮ (রাজঃ) দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলেন-রাজনগর উপজেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম (৩২), রাজনগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রদলের সদস্য মোঃ জাবেদ আহমেদ সুজন (২৪), উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ছামাদ মিয়া (২৭), উপজেলা বিএনপির সদস্য হাসিম মিয়া (৩৫), যুবদল নেতা মিজানুর রহমান (৪২), উপজেলা ছাত্রদলের অর্থ সম্পাদক রাজা মিয়া (২৪), উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সভপাতি জামাল মিয়া (২৬) সহ অজ্ঞাত আরো ৯৫-৯৬ জন।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুন নূর ও নিহতদের স্বজনরা এই ঘটনায় জড়িত সিরাজুল ইসলাম, মোঃ জাবেদ আহমদ সুজন, ছামাদ সহ আসামীদের গ্রেফতার ও মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আসামীরা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তারা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply