বড়লেখায় সোয়া ৩ কোটি টাকার নদী খননে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ইউটিউব দেখে আত্রাইয়ে মাশরুম চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে “শাহাজাদী” কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার রাজস্ব তহবিলের অর্থ আত্মসাত- বড়লেখা উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক বরখাস্ত, বিভাগীয় মামলা বড়লেখায় নবপল্লব প্রকল্পের ‘প্রকল্প অবহিতকরণ’ সভা একদল অপকর্ম করে পালিয়েছে, আরেকদল সেই অপকর্মের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে : শফিকুর রহমান আধ্যাত্মিক, মানবিক দর্শন ও লোক ক‌বি সাধক হাসন রাজার মৃত্যুবার্ষিকী আজ আজ বড়লেখা মুক্ত দিবস : মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আলোচনা সভা প্রয়াত ডা. পবন চন্দ্র দেবনাথের ছোট ভাই ব্রজেন্দ্র দেবনাথ আর নেই কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

বড়লেখায় সোয়া ৩ কোটি টাকার নদী খননে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ

  • শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১

Manual5 Ad Code

আব্দুর রব, বড়লেখা  ::

বড়লেখা উপজেলার ধামাই নদীর খনন কাজে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের দাবী পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার নদী খনন কাজের সিংহভাগই লুটপাট হয়েছে। সঠিকভাবে কাজ সম্পাদন না করার ফলে নদী তীরবর্তী সুজানগর ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডের মানুষের দূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান নছিব আলী গত ৭ অক্টোবর খনন কাজের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প (১ম পর্যায়) এর আওতায় ধামাই নদীর ৯ম কিলোমিটার হতে ১৫তম কিলোমিটার পযর্ন্ত মোট ৬ কিলোমিটার নদী ৩ কোটি ২৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৯২ টাকা ব্যয়ে পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হয়। কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঢাকার মতিঝিলের মেসার্স শহিদ ব্রাদার্স নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের মে মাসের মধ্যে কাজ সম্পাদন করার কথা। তবে করোনার কারণে কাজ সম্পন্নে বিলম্ব হয়।

Manual8 Ad Code

সুজানগর ইউপি চেয়ারম্যান তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, খনন কাজে ঠিকাদার চরম অনিয়ম করেন। নদী থেকে মাটি খনন করে নদীর তীরে এলোমেলোভাবে ফেলে রাখেন এবং নদীর মাটি নদী তীরের রাস্তায় না দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকটও বিক্রি করেন। ঠিকাদার সবোর্চ্চ ৫০-৬০ লাখ টাকার কাজ করেছেন। কোথাও কোথাও রাস্তার পাশ খাড়াভাবে খনন করায় রাস্তায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের বসতবাড়ির সম্মুখে খননকৃত মাটি ড্রেসিং না করে উঁচু টিলার মতো করে ফেলে রাখেন। চলাচলের স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে নিজস্ব অর্থায়নে মাটি ড্রেসিং করেন। কাজের অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ঠিকাদারের লোকজনকে রাস্তাটি যেভাবে ভেঙ্গে না যায় এবং জনগণের দূর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সেভাবে করার দাবী জানান। সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহারের পরামর্শ দিলে ঠিকাদারের লোকজন তা না মেনে অনিয়ম রেখেই কাজ সমাপ্ত করে চলে যায়। রাস্তায় মারাত্মক ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিতে ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আসবেন এবং লোক পাঠানোে আশ্বাস দিলেও অদ্যাবধি রাস্তার ভাঙ্গনরোধ ও সঠিকভাবে খনন কাজ সম্পন্নের ব্যবস্থা নেননি।

ভুক্তভোগীরা জানান, সুজানগর ইউনিয়নের ০৩নং ওয়ার্ডের পাটনা গ্রাম ও ০২নং ওয়ার্ডের বাগেরকোনা গ্রামের মইজ উদ্দিনের বাড়ির সম্মুখের রাস্তা দিয়ে দুই গ্রামের জনসাধারণ চলাচল করেন। এই দুই এলাকায় প্রায় ৪ হাজার লোকের বসবাস। ধামাই নদীর উত্তর পার দিয়ে পাটনা গ্রামের সমস্ত জনসাধারণ ও বাগেরকোনা গ্রামের জনসাধারণ ইউনিয়ন পরিষদ, আজিমগঞ্জ বাজার ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। উল্লেখিত রাস্তাটি ওইসব এলাকার মানুষের একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা। বর্তমানে উক্ত রাস্তা দিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রী, এলাকার জনসাধারণ এমনকি রিকশা, অটোরিকশা বা ঠেলাগাড়িও চলাচল করতে পারছে না। নদী তীরবর্তী বাসিন্দা বাবুল মিয়া জানান, ঠিকাদারের লোকজন নদীর মাটি কেটে তাদের চলাচলের দীর্ঘ রাস্তায় উঁচু টিলার মতো করে ফেলে রাখে। বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তা ড্রেসিং করেনি। পরে বাধ্য হয়ে প্রায় প্রত্যেকে ব্যক্তিগত টাকায় শ্রমিক লাগিয়ে নিজেদের বাড়ির সামনের রাস্তার মাটি ড্রেসিং করেছেন।

ধামাই নদীর পানি দ্রুত নিষ্কাষন ও তীরবর্তী মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে সরকার নদী খননেন প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্ত ঠিকাদারের চরম অনিয়মে তা ভেস্তে গেছে। সুবিধার চেয়ে জনদূর্ভোগই সৃষ্টি হয়েছে। নদী খননের প্রকল্পভুক্ত পাটনা গ্রামের ফয়জুর রহমানের বাড়ির পশ্চিম পাশ হইতে দুধু মিয়ার বাড়ির পূর্ব পর্যন্ত প্রায় ৭০ মিটার ও বাগেরকোনা গ্রামের আছার মিয়ার বাড়ির পশ্চিম পাশ হইতে ইসু মিয়ার বাড়ির পূর্বপাশ পযর্ন্ত প্রায় ৪০ মিটার রাস্তা ঠিকাদারের অনিয়মে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্যান্য স্থানেও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গ্রামবাসির চলাচলে স্থানীয় জনসাধারণ চাঁদা তুলে ভাঙ্গনস্থলে বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী (গড়) মেরামত করেন। ইতোমধ্যে বাঁশের গড়টিও ভেঙ্গে মাটিসহ নদীতে বিলীন। ভাঙ্গনস্থলের পাশেই কয়েকটি বাড়ি ও একটি মসজিদ রয়েছে, আরো কয়েকফুট ভেঙ্গে গেলে বাড়িগুলো ও মসজিদ নদীতে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।

Manual3 Ad Code

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহিদ ব্রাদার্সের পরিচালক আব্দুস সহিদ যুগান্তরকে জানান, অনেক আগেই প্রকল্প কাজ সম্পন্ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিকট বুঝিয়ে দিয়েছেন। কাজে কোনো অনিয়ম করেননি। তাছাড়া দু’টি প্যাকেজে ধামাই নদীর খনন কাজ পৃথক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করেছে। যেসব স্থানে ভাঙ্গন সমস্যা ও কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, আদৌ সেখানের খনন কাজ তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করেছে কি না নিশ্চিত হতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. খোরশেদ আলম শনিবার বিকেলে যুগান্তরকে জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কিছু স্থানে ভাঙ্গন ও খনন কাজের অনিয়মে জনদুর্ভোগের অভিযোগ করেছেন। খননকৃত মাটি নদী তীরবর্তী স্থানে বা রাস্তায় ঠিকাদারের ড্রেসিং করে দেওয়ার কথা সিডিউলে উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের টাকায় মাটি ড্রেসিংয়ের কথা নয়। সরেজমিনে পরিদর্শন করে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজে অনিয়ম হয়ে থাকলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকেই এর দায় নিতে হবে।

Manual8 Ad Code

ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী যুগান্তরকে জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরই তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন।#

Manual4 Ad Code

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!