কমলগঞ্জে টেস্টের নামে গলাকাটা ব্যবসা দিশেহারা রোগী কমলগঞ্জে টেস্টের নামে গলাকাটা ব্যবসা দিশেহারা রোগী – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন

কমলগঞ্জে টেস্টের নামে গলাকাটা ব্যবসা দিশেহারা রোগী

  • সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: : পেটব্যথা নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা শহরে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে এসেছিলাম। ডাক্তার সাহেব প্রেসক্রিপশনে কোন ঔষধ না লিখেই আমাকে ৭ হাজার ৫০০ টাকার পরীক্ষা দিয়েছেন। ধান বিক্রির টাকা দিয়ে সবগুলো পরীক্ষার রিপোর্ট করে আবার নিয়ে গেলাম। ডাক্তার সাহেব রিপোর্ট দেখে বললেন আমার সব রিপোর্ট ভালো কোন সমস্যা নেই পেট ব্যথা গ্যাস্ট্রিকের কারনে হচ্ছে। এই কথাগুলো বলছেন রোগী হেলাল মিয়া। এমন অপ্রয়োজনীয় টেস্টের অভিযোগ একদিনে একশো’র ওপরে পাওয়া গেছে কমলগঞ্জ উপজেলা সহ জেলা সহরের কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আগত রোগিদের কাছ থেকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান সময়ে ডাক্তারেরা রোগীর কথা চিন্তা না করে কমিশনের আসায় বেশিরভাগ অপ্রয়োজনীয় টেস্ট লিখে দিচ্ছেন। প্রায় শতভাগ প্রেসক্রিপশনে কমপক্ষে তিন থেকে চারটি টেস্ট লিখা থাকে। এমনকি শিশুদের সর্দি জ্বর হলেও টেস্ট করানোর কথা বলা হচ্ছে।নিদিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শতকরা ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ কমিশনের আসায় রোগিদেরকে টেস্ট করাতে বাধ্য করছেন। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে কোন নিয়মনীতি না মেনেই মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় টেস্টের কারণে ডাক্তার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাভবান হলেও মধ্যবিত্ত ও গরিব রোগীরা পথে বসছেন। এ ছাড়া বিশেষ জালিয়াতির মাধ্যমে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে বলে জানা যায়।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বলছেন, অনেক রোগ আছে টেস্ট ছাড়াই সমাধান করা যায়। চিকিৎসকদের অপ্রয়োজনীয় পরিক্ষা লিখা বন্ধ করতে হবে। রোগের লক্ষণ দেখে রোগীকে পরিক্ষা করাতে হবে। যেভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও টেস্টের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে রোগীদের ভরসা দিনদিন কমে যাবে চিকিৎসকের প্রতি।

কাঁধের ব্যাথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া আলমিনা বেগম বলেন, আমার হাই পেসার থাকায় মৌলভীবাজার জেলা শহরে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম তিনি আমাকে,

সিবিসি, আরবিসি, এস ক্রিয়েটিনিন, ইকো, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, এমআরআইসহ দশটি টেস্ট দিয়েছেন। সবগুলো টেস্টে ৯ হাজার টাকার উপরে গেছে। টেস্ট করার পর নতুন কোন ঔষধ না লিখেই ডাক্তার সাহেব বললেন আগের ঔষধ চলবে। পরে অন্য একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি বলেন কয়েকটি টেস্ট ছাড়া বাকি গুলো অপ্রয়োজনীয় ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুইজন পরিচালক বলেন, আমাদের নিদিষ্ট ডাক্তারের সাথে কন্ট্রাক করা আছে। তাদের সব রোগী আমাদের এখানে আসে। প্রয়োজনের পাশাপাশি মাঝে মধ্যে কিছু টেস্ট অপ্রয়োজনীয় আসে বলে তাঁরা জানান।

সচেতন নাগরিকরা বলেন নিত্যপ্রোজনীয় জিনিসপত্রের দাম ভাড়ায় পরিবারের খরচ সামলাতেই মানুষ যেখানে হিমসিম খাচ্ছে। সেই সুযোগে নিয়মিত চিকিৎসকেরা চেম্বারে বসে রোগীদের সাথে টেস্ট বাণিজ্য করছেন। বেশিরভাগ রোগীরা নিরুপায় হয়ে পরিক্ষা করছেন কিন্তু কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা না। গ্রামের পল্লী চিকিৎসকরাও প্রেসক্রিপশনে একাধিক টেস্ট লিখেন।

টেস্ট বাণিজ্যের বিষয়ে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দীন মুর্শেদ বলেন, অপ্রয়োজনী টেস্ট ও ভূল রিপোর্টের অভিযোগে আমরা একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করেছি। আমাদের কাছে এসব অভিযোগ আসলে যথাযথ পদেক্ষপ গ্রহন করা হয়। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকরা রোগীদের পরিক্ষার বিষয়ে আরও একটু সচেতন হতে হবে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews