তহশিলদারের বিরুদ্ধে হাকালুকির কালাপানি বিলের মাছ লুটের অভিযোগ তহশিলদারের বিরুদ্ধে হাকালুকির কালাপানি বিলের মাছ লুটের অভিযোগ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আমার বিদ্যালয়, আমার স্বপ্ন আমার অহংকার কুলাউড়ায় সরকারি জলমহাল জবরদখল করে মাছ লুটের অভিযোগ বড়লেখায় নিসচা’র উপদেষ্ঠা ও দায়িত্বশীলদের সংবর্ধনা ওসমানীনগরে ঈদে মীলাদুন্নবী (সা:)’র মোবারক র‍্যালী উৎসবমূখর পরিবেশে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে.. কমলগঞ্জে জেলা প্রশাসক কুলাউড়ায় শতবর্ষী মসজিদ সম্প্রসারণে বাঁধা জমি দখল ও টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদে মানববন্ধন কুলাউড়ার ভাটেরা স্টেশন এলাকায় রেললাইন থেকে ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার কুলাউড়ার আমতৈলে প্রবাসীদের সংবর্ধনা আত্রাইয়ে ব্রিজের নির্মাণ কাজে ধীরগতি : দুর্ভোগে এলাকাবাসী শ্রীমঙ্গলে এসএমই ফাউন্ডেশনের ঋণ ম্যাচমেকিং কর্মসূচি ও ব্যাংকার-উদ্যোক্তা মত বিনিময় সভা

তহশিলদারের বিরুদ্ধে হাকালুকির কালাপানি বিলের মাছ লুটের অভিযোগ

  • বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২

বড়লেখা প্রতিনিধি::

হাকালুকি হাওরের বড়লেখা উপজেলাধীন এলাকার প্রায় ২৮৬ একরের কালাপানি জলমহালের খাস কালেকশনের নামে চলছে হরিলুট। হাকালুকি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার টাকার মাছ লুটের অভিযোগ ওঠেছে। প্রভাবশালী মহল ও জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে মাছ লুটের এই ঘটনায় একদিকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় প্রকৃত মৎস্যজীবী, অপরদিকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

এদিকে খাসকালেকশনের নামে তহশিলদার সিন্ডিকেটের নিয়ম বর্হিভুতভাবে কালাপানি সরকারি জলমহালের মাছ আহরণের বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তা উত্থাপিত হয়। কমিটির সদস্যরা এব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইউএনও’কে অনুরোধ জানিয়েছেন।

উপজেলা ভূমি অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২৮৬ একরের কালাপানি জলমহাল ইজারায় এবার কাঙ্খিত মূল্য না পাওয়ায় কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। এরপর জেলা প্রশাসকের রাজস্ব বিভাগ থেকে বড়লেখা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) মাধ্যমে স্থানীয় তহশিলদারকে মাছ আহরণ করে বিক্রির পর প্রাপ্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে মৌখিকভাবে এই নির্দেশনা পান হাকালুকি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার আব্দুল হান্নান। তিনি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে সরকারি জলমহালের মাছ লুটের নীল নকসা তৈরী করেন। বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিজের পছন্দের কুলাউড়া উপজেলার বাসিন্দা ইলিয়াছ আলীকে খাস কালেকশনের দায়িত্ব দেন। এরপর গত ১৩ দিন ধরে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে জলমহাল থেকে মাছ শিকার করে বিভিন্ন পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তহশিলদার সিন্ডিকেট প্রায় ১৩ দিন ধরে এই জলমহাল থেকে হাজার হাজার টাকার মাছ ধরে বিক্রি করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাস কালেকশনের নামে সিন্ডিকেট সদস্যদের দ্বারা মাছ আহরণ করে বিক্রি করলেও তহশিলদার মাছ বিক্রির অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেননি। এমনকি মাছ আহরণ করছেন বলেও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেননি। সূত্র জানায়, জেলা রাজস্ব বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তহশিলদার সিন্ডিকেট ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে জলমহালটি মাছ লুটেরা সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দিয়েছেন। পরে যৎসাম্যান্য অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে তা আত্মসাৎ করবেন।

কোন সরকারি জলমহালের ইজারা দরপত্রে উপযুক্ত মূল্য পাওয়া না গেলে স্থানীয় ভূমি প্রশাসনের কোন কর্মকর্তাকে দিয়ে খাস কালেকশনের নিয়ম রয়েছে। এতে বলা হয়েছে প্রতিদিন জেলে দিয়ে ওই ভূমি কর্মকর্তা বিল থেকে মাছ আহরণ করাবেন। বিলের পাড়েই তা নিলামে বিক্রি করবেন। পরে মাছ আহরণের ব্যয় পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিবেন। কিন্তু তহশিলদার আব্দুল হান্নান খাস কালেকশনের প্রাত্যহিক নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে তার পছন্দের এক ব্যক্তির নিকট জলমহালটি ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে তহশিলদার আব্দুল হান্নান জানান, এখনও খাস কালেকশন শুরু করেননি। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মাছ ধরে বিক্রি করছেন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এমন তথ্য রয়েছে বলার একপর্যায়ে তিনি মাছ আহরণের সত্যতা স্বীকার করেন এবং বলেন, ‘খাস কালেকশনের জন্য দুই সপ্তাহ আগে এসিল্যান্ডের মৌখিক নির্দেশনা পেয়ে মাছ ধরাচ্ছেন। ইলিয়াছ আলী নামে এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ পর্যন্ত খরচ বাদে ১২ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। এগুলো জমা দেননি, পরে দেবেন।’

ইলিয়াছ আলী বলেন, ‘আমরা হাকালুকি তহশিলে যাই। তহশিলদারকে জলমহাল থেকে মাছ ধরতে সব টাকা পরিশোধ করেছি। তহশিলদার বলেছেন মাছ ধরেন কোন বাধা নেই। সরকারের পক্ষে খাস কালেকশনের জন্য পরে চিঠি দিবেন। আর কিছু বলতে পারব না। যা জানার তহশিলদার ও ডিসির কাছ থেকে জানুন।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘জেলা পর্যায় থেকে খাস কালেকশনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় বিধি মোতাবেক তহশিলদারকে মৎস্য আহরণ করে বিক্রিত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে। তহশিলদার এখনও আমাকে কিছু জানান নি।’

ইউএনও সুনজিত কুমার চন্দ জানান, বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় কয়েকজন সদস্য তহশিলদারের বিরুদ্ধে নিয়ম বর্হিভুতভাবে কালাপানি বিলের মৎস্য আহরণ ও বিক্রির অভিযোগ উত্থাপন করেন। সভা শেষেই তিনি তহশিলদারকে মৌখিকভাবে কারণ দর্র্শাতে বললে, তহশিলদার আব্দুল হান্নান জানান, তিনি যা করছেন তা কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই করছেন। ইউএনও বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews