কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকার ভেতর ঢাকাগামী কালনী ট্রেন থামিয়ে একটি গলাকাটা মায়া হরিণ উদ্ধারের ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লাউয়াছড়া ফরেষ্টার আনিসুজ্জামান শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানায় এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন। এর আগে গত বুধবার সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্ত:নগর কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন রুমের কাছ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় গলাকাটা মায়া হরিণটি উদ্ধার করা হয়।
বনবিভাগের জিডিতে উল্লেখ করা হয়, সিলেট থেকে ঢাকাগামী এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া বনাঞ্চল অতিক্রম করার সময় ট্রেনের ইঞ্জিনের সাথে ধাক্কা লেগে একটি মায়া হরিণ ছটফট করতে থাকে। এ সময় ট্রেনের গতি কম থাকায় কে বা কারা হরিণটিতে জবাই করে নিয়ে যাচ্ছিল। জিআরপি পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হরিণটি বস্তায় ভর্তি অবস্থায় উদ্ধার করে।
কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আতিকুর রহমান শিবলু বলেন, লাউয়াছড়া বনাঞ্চল এলাকায় হঠাৎ করে কালনী ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয়। পরে দেখা যায় একটি হরিণকে জবাই করে কয়েকজন ট্রেনে নিয়ে আসছেন। এ সময় হরিণ দেখার জন্য ট্রেনের কিছু যাত্রী নেমে পড়েন।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার সহকারী উপ পরিদর্শক তালেব হোসেন জানান, ট্রেনটি শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে পোঁছালে ইঞ্জিন বগিতে বস্তা দেখে রেলপুলিশের সন্দেহ হয়। পরে বস্তাটি খুলে সেখান থেকে একটি গলাকাটা মায়া হরিণ উদ্ধার করা হয়। পরে স্থানীয় বনভিাগকে খবর দিলে বনভিাগের সহযোগিতায় হরিণটিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। তিনি আরো বলেন, গলাকাটা হরিণ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় জিডি করা হয়েছে। বনভিাগের সহযোগিতায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র মল্লিক বলেন, ময়নাতদন্তে করে ধারণা করছি প্রাণিটিকে ধারালো কোন অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। আমরা রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি।
মৌলভীবাজার বণ্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, লাউয়াছড়া বনে সবসময় হরিণ ঘুরে বেড়ায়। ধারণা করা হচ্ছে, কোনও শিকারী সেখান থেকেই প্রাণিটি ধরে জবাই করে হত্যা করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে তদন্ত চলছে। মৃত হরিণটিকে শ্রীমঙ্গলস্থ বন্যপ্রাণীর রেঞ্জ কার্যালয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়। তবে হরিণ জবাই কারীদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. সাখাওয়াত বলেন, ‘ট্রেন কেন থেমেছিল এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার তদন্ত চলছে। যারা হরিণকে জবাই করেছে তাদেরকে সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#
Leave a Reply