বড়লেখা প্রতিনিধি::
বড়লেখায় আবারও জনতার হাতে একটি সংকটাপন্ন লজ্জাবতী বানর (নিশাচর) ধরা পড়েছে। সোমবার (১লা মে) সন্ধ্যায় উপজেলার চুকারপুঞ্জি গ্রামের লোকজন বানরটিকে আটক করেন। বনবিভাগের পরামর্শে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বানরটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত পহেলা এপ্রিল রাতে উপজেলার দক্ষিণভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন আরো একটি লজ্জাবতী বানরকে আটক করেন। পরে ওইদিন রাতেই বানরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক স¤পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বনজঙ্গল ও গাছপালা উজাড় হওয়ায় প্রায় সময় খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে বেরিয়ে এসে স্থানীয়দের হাতে লজ্জাবতী বানর ধরা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন করতে হবে।
জানা গেছে, সোমবার (১লা মে) উপজেলার চুকারপুঞ্জি গ্রামের কালভার্টের পাশে স্থানীয় লোকজন একটি লজ্জাবতি বানরকে দেখতে পান। পরে তারা সেটিকে ধরে এলাকার বাসিন্দা আকমল আলীর বাড়িতে আটকে রাখেন। বানরটি খাবার না খাওয়ায় মঙ্গলবার (২রা মে) রাত আটটার দিকে আকমল আলীর বাড়ির লোকজন বানরটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেন।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী সাঈব আহমদ ইয়াসের বুধবার বিকেলে বলেন, প্রায় সময় কোথাও না কোথাও লজ্জাবতি বানর ধরা পড়ছে। কারণ অবাধে বনজঙ্গল ও গাছপালা কেটে উজাড় হচ্ছে। এর ফলে এসব প্রাণি আবাসস্থল হারাচ্ছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। এতে খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে লোকালয়ে এসে এসব প্রাণী স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে। তবে মানুষজন আগের চেয়ে কিছুটা সচেতন হচ্ছে, তাই কেউ এসব প্রাণিকে ধরে আবার ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস বলেন, লজ্জাবতী বানর নিশাচর প্রাণি। পরিবেশের জন্যও ভালো। কারও ক্ষতি করেনা। এসব প্রাণিদের ধরা উচিত নয়। ধরা পড়লে আমাদের দ্রুত জানাবেন। আমরা উদ্ধার করব। আর কেউ যদি ধরে হত্যা করে, তবে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply