বিশেষ প্রতিনিধি :: বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের চরকোনা গ্রামের একটি নিরীহ পরিবারের স্বামীর বাড়িতে থাকা দুই বোনসহ পাঁচ সহোদরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জোরপূর্বক বসত বাড়ির একাংশের মাটি কেটে ডোবা বানিয়ে নিজের ফিসারী দাবী করে সুলেমান আহমদ সুরমান নামক প্রভাবশালী এক শিক্ষকের নিরীহ ভূমি মালিকদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরকোনা গ্রামের নুর উদ্দিন ও তার আরো তিন ভাই মিলে ১৯৮১ সালে হাসিদ আলী গংদের নিকট থেকে ৪৪ শতাংশ বাড়ি শ্রেণির ভূমি ক্রয় করে (দলিল নং-৩৫৬৮) বসবাস করছেন। নুর উদ্দিন তার অংশের ভূমিতে বাড়ি তৈরী করে স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে নির্বিঘেœ বসবাস করছেন। বাঘেরকোনা গ্রামের মৃত মজর আলীর ছেলে স্থানীয় কেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক কয়েক বছর আগে এসকেভেটর লাগিয়ে নুর উদ্দিনের বাড়ির উত্তর পাশ কেটে জোরপূর্বক মাটি নিয়ে যান। এর বিপরীত দিকের আরেক ভূমি মালিক মৃত ইদ্রিস আলীরও জমির একাংশ কেটে মাটি নেওয়ায় সেখানে জলাশয়ের সৃষ্টি হয়। এলাকাটি হাকালুকি হাওর সংলগ্ন হওয়ায় বর্ষাকালে উক্ত জলাশয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আটকা পড়ে। প্রভাবশালী সুলেমান আহমদ সুরমান জলাশয়টি নিজের দাবী করে ভূমির মুল মালিকদের মাছ ধরতে বাধাবিঘœ করে। এমনকি নুর উদ্দিনের গৃহপালিত হাঁস এখানে বিচরণ করলেও সুরমান বাধা-নিষেধ করে। এ নিয়ে নুর উদ্দিনের ছেলেদের সাথে সুলেমান আহমদ সুরমানের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই আক্রোসে প্রভাবশালী সুরমান নুর উদ্দিনের ছেলে শামীম আহমদ, রুবেল আহমদ, শাহিন আহমদ, মেয়ে লিলি বেগম ও রোমানা বেগমের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৭ জানুয়ারী ফিসারির মাছ চুরি ও মারধরের অভিযোগে থানায় জিডি করেন। পুলিশ ঘটনা তদন্তের অনুমতি প্রার্থনা করে জিডিটি বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করে।
বুধবার বিকেলে সরেজমিনে গেলে গ্রামের বাসিন্দা মানিক মিয়া, সাইদুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, ফারুক আহমদ প্রমুখ জানান, কেজি স্কুলের শিক্ষক সুলেমান আহমদ সুরমান খুবই প্রভাবশালী ব্যক্তি। সে নুর উদ্দিনের বাড়ির একাংশ কেটে মাটি নেয়। অপরাংশের ভূমির মালিক রফিনগর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির। ওখান থেকেও সে মাটি কেটে নিয়ে যায়। এতে জলাশয়ের সৃষ্ঠি হয়েছে। সুরমান যে জায়গাকে নিজের ফিসারি দাবী করে শামীম আহমদ, রুবেল আহমদ, শাহিন গংদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সেই ভূমির মালিকই সে নয়। এমনটি এটা কোন ফিসারীও নয়। শুধুমাত্র নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানী করতেই সে মামলা করেছে। স্বামীর বাড়িতে থাকা দুই বোনকেও আসামী দিতে ছাড়েনি। মামলায় ঘটনার উল্লেখিত তারিখে লিলি বেগম ও রোমানা বেগম তাদের স্বামীর বাড়ি ছিল। নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে সুরমানের এমন মিথ্যা মামলায় এলাকার লোকজনও চরম ক্ষুব্দ।
Leave a Reply