ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা :: কুড়িগ্রামের নদ নদীগুলোতে ফের বাড়ছে পানি,শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীর তীরবর্তী ভাঙন কবলিত মানুষজন।গত দুই সপ্তাহে জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙা ইউনিয়নের গোরকমন্ডপ গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়ি ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে শতাধিক পরিবারের।অনেকে বাপ দাদার ভিটে মাটি ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছে অন্য জায়গায়।কেউবা সহায় সম্বল হারিয়ে ঠাঁই নিচ্ছে সরকারি বাঁধ কিংবা অন্যের জমিতে।গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ রক্ষা চেষ্টা করলেও এ বছর নিরব ভুমিকায় রয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নাওডাঙা ইউনিয়নের গোরকমন্ডপ এলাকায় রয়েছে দুটি মাদ্রাসা, স্কুল ও দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হচ্ছে একটি মুজিব কেল্লা।অথচ খামখেয়ালীপনার কারনে উপজেলা যাওয়ার একমাত্র বাঁধটি ভেঙে যেতে বসেছে।এ অবস্থায় দ্রুত ভাঙন রক্ষা ব্যবস্থা না নিলে বিলীন হয়ে যাবে সকল স্থাপনা।করাল গ্রাসী ধরলার ভাঙন থেকে মুক্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।এছাড়াও তিস্তার ভাঙনের কবলে পড়েছে উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নসহ রাজারহাটের ঘড়িয়াল ডাঙার সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক বসতবাড়ি।
চর মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আবু বক্কর বলেন,ধরলা নদী যে হারে ভাঙতেছে দু একদিনের মধ্যে গোরকমন্ডপ জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
চর গোরকমন্ডপ এলাকার বাসিন্দা মোঃ আজিজুল ইসলাম বলেন,গত একমাসে এ গ্রামের প্রায় ১৫০টি ঘর বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।চলাচলের এক মাত্র বাঁধটিও বিলীনের পথে।এ মহুর্তে সরকারি কোন ব্যবস্থা না নিলে বাঁধটিও রক্ষা করা যাবে না।এ বাঁধটি ছিড়ে গেলে এ অঞ্চলের ৮-১০টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
ভাঙনের স্বীকার মোঃ আহাদ আলী বলেন, খুব ইচ্ছে ছিল বাপদাদার ভিটেমাটিতে আজীবন থাকবো।কিন্তু ধরলার ভাঙন সেই আশা শেষ করে দিলো।গত কাল ভিটেমাটি নদীতে চলে গেছে।উপায় না পেয়ে বাপদাদার ভিটেমাটি ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছি।জানি না কপালে কি আছে।
নাওডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাসেন আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডপ বাঁধটি অর্ধেক নদীতে চলে গেছে। গ্রামটির প্রায় দুইশো পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে। এছাড়া হুমকির মুখে আছে হাজার পরিবার। এ মহুর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এছাড়া তিনি আরো বলেন, ভাঙনের মুখে পড়েছে দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মানাধীনমুজিবকেল্লা,স্কুল,মাদ্রাসা,মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা।দু একদিনের মধ্যে ভাঙন ঠেকাতে না পারলে ওই গ্রামগুলোর মানুষেরা বিশাল দূর্ভোগে পড়বে।এমন এক অবস্থা চলছে ঘর বাড়ি সরানোর সামান্য ব্যয়টুকু করার সামর্থ নেই ওই পরিবারগুলোর।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চরগোরকমন্ডল এলাকায় ধরলা নদীর বাম তীরে ভাঙন কবলিত হচ্ছে। আমরা নজরদারীতে রেখেছি। এছাড়াও জেলায় ২৬টি পয়েন্টে প্রায় ২৫কিলোমিটার অতি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা সাড়ে চার কিলোমিটার নদী ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলমান আছে। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের পর্যাপ্ত মালামাল রয়েছে।#
since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in
Leave a Reply