বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকের চালান নিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রমরমা মাদক বাণিজ্য চালাচ্ছে। গত ৩ বছরে র্যাব-পুলিশ বেশ কয়েকজন ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীকে বিয়ানীবাজারের গজুকাটা ও মুড়িয়া হাওর থেকে গ্রেফতার করেছে। এসময় তাদের নিকট থেকে বিপুল পরিমান ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
সোমবার বিকেলে বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির বড়াইল সীমান্ত এলাকা থেকে সিলেট আর্মড পুলিশের এসআই মো. আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আয়নুর রহমান মামন (২১) নামক ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ী যুবককে গ্রেফতার করেছে। সে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার মালেগড় বিএসএফ চৌকির পার্শবর্তী লাতুকান্দি গ্রামের তুতিউর রহমানের ছেলে। তবে গ্রেফতারের পর সে নিজের নাম মামুন উদ্দিন এবং বড়লেখার বড়াইল গ্রামের বাসিন্দা বলে মিথ্যা তথ্য দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে বড়লেখা পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
সীমান্ত সুত্রগুলো জানায়, বিয়ানীবাজারের গজুকাটা, মুড়িয়া এবং বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুরের বড়াইল, পাল্লাথল ও বোবারথল সীমান্তের দুর্গম এলাকা দিয়ে ভারতীয় মাদক চোরকারবারীরা মাদকের চালান নিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। স্থানীয় মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় সীমান্তবর্তী বাজারগুলোতে অবস্থান করে সিলেট, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীর নিকট ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ-গাঁজা বিক্রির পর নির্বিঘেœ সীমান্ত অতিক্রম করে তারা ভারতে চলে যায়। বিভিন্ন সময় ক্রেতা সেজে র্যাব, পুলিশ ও আর্মড পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদকের চালান জব্দ, দেশীয় ও ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে থাকে। সোমবার বিকেলে ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয়-বিক্রয়কালে সিলেট আর্মড পুলিশ বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির বড়াইল ত্রিমূখী বাজারে অভিযান চালিয়ে ২০০ পিস ইয়াবাসহ ভারতীয় নাগরিক আয়নুর রহমান মামনকে গ্রেফতার করেছে। এসময় বড়াইল গ্রামের মাদক কারবারী কবির আহমদ (৩৫) পালিয়ে যায়। আয়নুর রহমান মামন গ্রেফতারের পর পুলিশকে ভুল নাম ও বড়াইল গ্রামের বাসিন্দা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালায়। এদিকে গত বছরের ২৫ জানুয়ারী সিলেটের বিয়ানীবাজারে অভিযান চালিয়ে লাফসাইল-গজুকাটা সীমান্ত থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ করিমগঞ্জ লাফসাইলের মৃত ইরমান আলীর ছেলে মাদক কারবারি ফকির আলীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর আগে ২৯ ডিসেম্বর বিয়ানীবাজারের সীমান্তবর্তী দুর্গম মুড়িয়া হাওর দিয়ে ইয়াবা পাচারের সময় বিনন্দ নমঃশুদ্র (৫৯) নামে আরেক ভারতীয় নাগরিককে আটক করে কারাগারে পাঠায় র্যাব-৯। বিনন্দ নমঃশূদ্র করিমগঞ্জের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত হরেন্দ্র নমঃশুদ্রের ছেলে। গ্রেফতারকালে র্যাব তার কাছ থেকে ৬৭০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।
বড়লেখা থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, ইয়াবাসহ আটক ভারতীয় যুবকের বিরুদ্ধে সিলেট আর্মড পুলিশের এসআই মো. আশরাফুল আলম বাদী হয়ে থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারের পর পুলিশকে সে ভুল নাম ঠিকানা প্রদান করে। পরে এব্যাপারে আদালতে পরোয়ার্ডিং প্রেরণ করেছেন।#
Leave a Reply