– ১০৮ পদের মধ্যে ৮১টি শূন্য
আজিজুল ইসলাম ::
বিদ্যুতের আসা যাওয়া নিয়ে মানুষের ক্ষোভ চরমে। শহর থেকে গ্রামে বিদ্যুতের কথা বললেই মানুষ যেন বিতৃষ্ণা প্রকাশ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিদ্যুৎ নিয়ে গালিগালাজ করা হয় জনপ্রতিনিধিদের। সেখানে মানুষের একটা কথা বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলার মতো জনপ্রতিনিধি নাই। এসব নিত্যকার ঘটনা।
ক্ষুব্ধ হয়ে কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির এবং কুলাউড়া পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে সাংবাদিকরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষের সাথে পরিস্থিতি উন্নয়নে একাধিক বৈঠক করেও কোন সুরাহা হচ্ছে না।
দূরবস্থার কথা স্বীকার করে এ জন্য লোকবলের সঙ্কটের কথা জানান নির্বাহী প্রকৌশলী ওসমান গনি।
এমন দূরবস্থার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকৃত অর্থে লোকবলের সঙ্কটের কারণে প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কুলাউড়া জোনাল বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আওতাধীন কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার ৪০ সহ¯্রাধিক গ্রাহক।
কুলাউড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র সুত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের এই জোনাল অফিসে লোকবল থাকার কথা ১০৮ জন। এরমধ্যে কর্মরত আছে মাত্র ৪০ জন। এই ৪০ জনের মধ্যে আবার দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড ৩ জন। ফলে ১০৮ পদের মধ্যে ৭১ পদ শূন্য। ফলে জোনাল এই বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রটি ৭৫ ভাগ অচল। সেবা বলতে কোন বিষয় নেই। উল্টো প্রতিনিয়ত হয়রানির অভিযোগ প্রকট।
এই বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আওতায় ১১কেভি ৩৫৫ কিলোমিটার এলটি লাইন ও ৩৩ কেভি ৬০ কিলোমিটার এইচটি লাইন রয়েছে। সেই সাথে গ্রাহকদের হাজার হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন রয়েছে। এসব লাইন সচল রাখার জন্য ৬০ জনের বেশি লাইন ম্যান ও লাইন হেলপার থাকার কথা। কিন্তু সেখানে কর্মরত আছে মাত্র ১২ জন। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যুৎ লাইনে প্রতিদিনকার সমস্যা সমাধানে হিমশিম খেতে হয়। ৩টি গ্রুপে ভাগ করেও বিরামহীনভাবে কাজ করে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয় না।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এই বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে ৭টি গাড়ী রয়েছে। কিন্তু এসব গাড়ীগুলোর জন্য কোন চালক বরাদ্ধ নেই। ফলে গাড়ীগুলো ব্যবহারের জন্য ব্যক্তিগত ড্রাইভার অথবা লাইনম্যান কেউ গাড়ী চালানো জানলে তার শরণাপন্ন হতে হয়। ফলে জরুরি মেরামত কাজে দ্রুত মাঠে যাওয়া সম্ভব হয় না।
জোনাল অফিসের আওতাধীন ৪০ হাজার গ্রাহকের মিটারের বিপরীতে কোন মিটার রিডার নেই। মিটার রিডিং ও বিল বিতরণের জন্য চুক্তিভিত্তিক ২০ জন মাঠ কর্মি রয়েছে। এরা কোনদিন কোন মিটার দেখেনা। নিজের মনগড়া ও অনুমান ভিত্তিক বিল দেয়। আবার সঠিক সময়ে গ্রাহকের কাছে বিলও পৌছে দেয় না। তাই ভুতুড়ে বিল গ্রহাকদের প্রথম ও প্রধান অভিযোগ। এদের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ক্ষোভ সবচেয়ে বেশি। এসব ভুতুড়ে বিল সমন্বয়ে অফিসে গেলে গ্রাহকদের হয়রানির শিকার হতে হয়।
বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের পুঞ্জিভুত ক্ষোভ যেকোন সময় বিক্ষোভে রূপ নিতে পারে। বিদ্যুতের বিড়ম্বনায় অতিষ্ঠ কুলাউড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে ক্ষুব্ধ। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের পক্ষে ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ গত ২৯ জুলাই নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করেন। ০৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় প্রতিনিধি দল বিদ্যুৎ ব্যবস্থার দূরবস্থা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানান। কম লোকবল দিয়ে আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানের আহ্বান জানান। সেই সাথে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের রোষানল থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
এব্যাপারে কুলাউড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী ওসমান গনি বিদ্যুৎ সরবরাহের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে জানান, লোকবল সঙ্কটের কারণে বিদ্যুৎ সরবারাহ কেন্দ্র অচল হওয়ার সম্মুখীন। তিনি লোকবলের চাহিদা জানিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। তারপরও এই লোকবলে যতটা সম্ভব সেবা দেয়া যায় সে চেষ্টা করবেন বলে জানান।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply