সালাউদ্দিন: কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দা মতিলাল ভর। দীর্ঘদিন তার এক একর জায়গা পতিত অবস্থায় ছিল। পতিতজমি আবাদ করে ব্যাবহারের সুযোগ ও জ্ঞান ছিল না তার। সম্প্রতি তিনি পতিতজমিতে কাসাভা চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন। পতিতজমির ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে সফল হয়েছেন তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় কাসাভা চাষ করের সাফল্য পেয়েছেন তিনি।
মতিলালের মত আরও ২৫ জন কৃষককে কাসাভা চাষে কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। এম-৪ জাতের এ কাসাভার ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা। বাণিজ্যিকভাবে কাসাভা উৎপাদন করে আয়ের সুযোগ দেখছে কৃষি অফিস।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গতবছর এ প্রকল্পের আওতায় ২৫ জন কৃষক কাসাভার চাষ করে। ৫ একর জমিতে প্রায় ৩০ টন কাসাভার চাষ হয়। অনাবাদি জমিতে কাসাভা চাষ করে ২৪ জন কৃষক প্রায় ২ লাভ ৫৫ হাজার টাকা আয় করেন। সবমিলিয়ে এবার কুলাউড়ায় ৫০ একর জমিতে কাসাভার চাষ হয়েছে। একর প্রতিকাসাভা উৎপাদন হয় ৭ টন । বর্তমানে প্রতিকেজি কাসাভা বিক্রি হয় সাড়ে আট টাকা দরে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে কুলাউড়ায় উৎপাদিত কাসাভা বাজারজাত করতে কৃষকদের সহযোগিতা করেছে কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এসব চাষিদের কাসাভা চাষে সহযোগীতা করা হয় ।
গাছ প্রতি ১৫ থেকে ১৮ কেজি এবং হেক্টর প্রতি ২৫ থেকে ৩০ টন কাসাভার ফলন পাওয়া যায়। কাসাভাকে প্রক্রিয়াজাত করে আটা পাওয়া যায়। যা দিয়ে রুটি তৈরি করা যায়। এছাড়াও প্রক্রিয়াজাত করে আরও তৈরি করা যায় সুজি, নুডুলস, ক্র্যাকার্স, কেক, পাউরুটি, বিস্কুট, চিপসসহ বিভিন্ন ধরণের খাদ্য। কাসাভার অবশিষ্ট অংশ দিয়ে জৈব সার উৎপাদন করা যায়। কাসাভার পুষ্টিগুণ নিয়ে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাধারণভাবে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ শর্করা, ১ থেকে ২ ভাগ প্রোটিন এবং ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ জলীয় অংশ রয়েছে। কাসাভায় আলু থেকে দ্বিগুণেরও বেশি শর্করা পাওয়া যায়। এ জন্য কাসাভা আলুর চাইতে বেশি পুষ্টিকর।
কাসাভা চাষি বিপ্রভূষন বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ৩০ শতক জায়গায় কাসাভা চাষ করে প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় করেছি । অল্প খরছে কাসাভা চাষে বেশি আয় করা সম্ভব। তাছাড়া পতিতজমি ব্যবহার করতে কাসাভা চাষের বিকল্প নেই। কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা মো. আব্দুল মোমিন জানান, কাসাভা চাষে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। কাসাভা বাজারজাত করার জন্য কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সঙ্গে সংযোগ করানো হয়েছে। তারা সেখানে কাসাভা বিক্রি করেন। প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা সফলভাবে চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
Leave a Reply