কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে তিন পদে নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় পরীক্ষার পর একমাসেও ফলাফল ঘোষণা হয়নি। ফলাফল প্রকাশের জন্য এক পরীক্ষার্থী ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। নানা অব্যবস্থাপনার কারণে একের পর এক বিদ্যালয়ে নিয়োগ ও গভার্নিং বডি, ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ নানা কাজে ব্যাপক ত্রুটি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ১২ ডিসেম্বর বিদ্যালয়টিতে তিন পদে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়।
অভিভাবক ও শিক্ষকদের অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের রামপুর এলাকার ইউনিয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে শূন্যপদে একজন কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, একজন অফিস সহায়ক ও একজন নৈশপ্রহারী নিয়োগের জন্য গত ১২ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ নিয়োগ কমিটি লিখিত পরীক্ষা শেষে নৈশ প্রহরী ও অফিস সহায়ক পদে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করেন। অভ্যন্তরিন ফলাফলের ভিত্তিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নোমান আহমেদের পছন্দমতো প্রার্থী নিয়োগপ্রাপ্ত না হওয়ায় তিনি ও শিক্ষানুরাগী সদস্য কক্ষ থেকে বেরিয়ে পড়েন। তাদের ডাকানোর পরও পরীক্ষা কক্ষে তারা আসেনি। পরে ফলাফল ঘোষণা না করেই মহাপরিচালকের প্রতিনিধিসহ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় থেকে চলে যান।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন অভিভাবক সদস্য জানান, তিন পদে তিনজনকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার আশ^াস দিয়ে তিনটি পরিবারের কাছ থেকে বড় ধরণের অর্থ আদায় করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পরীক্ষা শেষে ভাইভা চলাকালীন সময়ে তাদের মনোনীত পরীক্ষার্থীর নিয়োগ হচ্ছে না বুঝে বিষয়টি বুঝতে পেরে শিক্ষা কর্মকর্তার ইশারায় সভাপতি নোমান আহমেদ বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান বলে অভিযোগ তোলেন। বিগত ২০২০ সাল থেকেই প্রতিষ্ঠানটি এডহক কমিটির মাধ্যমেই পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতি ৬ মাস অন্তর কমিটি পুর্নগঠন করা হচ্ছে।
উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা শামছন্নাহার পারভীন টানা ছয় বছর যাবত এখানে অবস্থান করছেন। ফলে নিরবে ও সূক্ষ্ম কৌশলে নিয়োগ ও কমিটি গঠনে ব্যাপক বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন্নাহার পারভীন বলেন, ইউনিয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে লিখিত পরীক্ষা শেষে মৌখিক পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে সভাপতি নোমান আহমেদ কথাকাটাকাটি করেন। পরে সভাপতি ও একজন সদস্য সেখান থেকে বেরিয়ে যান। পরবর্তীতে আর ফলাফল ঘোষণা হয়নি। ডিজি মহোদয়ের প্রতিনিধির সাথে আমিও বেরিয়ে আসি।
ইউনিয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নোমান আহমেদ বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বড় বড় নেতাদের ফোন আসছিল। এই নিয়ে কিছু সমস্যা হওয়ায় আমি বেরিয়ে যাই। কোন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে কি-না সে বিষয়ে আপনারাই জানেন। তবে পরীক্ষায় যারা পাশ করেছে তাদেরই নিয়োগ দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মৌলভীবাজার আলী আমজদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈনুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন পদে নিয়োগ পরীক্ষায় কিছু ঝামেলা হওয়ার কারণে কার্যক্রম বাতিল হয়েছে।#
Leave a Reply