এইবেলা, মৌলভীবাজার ::
মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের নিরাপত্তার স্বার্থে গাছ কাটা হয়েছে বলে জানান ড. ফজলুল আলী। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখা দিতে গিয়ে বলেন-
সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়-তুফান আঘাত করে। এতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘর-বাড়ি, গাছপালা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে। মৌলভীবাজার জেলায়ও এর প্রভাবে বেশ কিছু এলাকায় গাছ ভেঙ্গে পড়ে। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অভ্যন্তরে পাওয়ার সাবস্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল স্থাপনা।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় প্রচন্ড ঝড় তুফানে পাওয়ার সাবস্টেশনের উপর একটি গাছ এবং কলেজের অভ্যন্তরে যে বিদ্যুৎ লাইন ঢুকেছে ওই লাইনের উপর আরেকটি গাছ এমনভাবে হেলে পড়ে – যার ফলে, যেকোনো সময় বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে- এমন আশঙ্কায় কিছু গাছ কাটা হয়।
কর্তৃপক্ষ হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষ এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা রক্ষা, বিশাল ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা, পাশে অবস্থিত মসজিদ ও কলেজে সার্বিক নিরাপত্তাসহ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার বিষয়টি জরুরি বিবেচনায় গাছ কাটার ব্যবস্থা করেন। অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব গাছ কাটতে হয় কলেজ কর্তৃপক্ষের। করোনা কালীন অফিস ও কলেজে সাধারণ ছুটি থাকায় ও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এসময় অন্য শিক্ষকদের ডেকে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি।
তাছাড়া সারাদেশে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী অফিস বন্ধ থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে বন বিভাগের অনুমতি নেয়ার সুযোগ ছিল না বলে জানান মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ড. ফজলুল আলী।
সেই সময়ে বন বিভাগের অনুমতির অপেক্ষা করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার পাশাপাশি কলেজের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাই জরুরি ভিত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ হিসেবে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হন বলে জানান তিনি।
অধ্যক্ষ ড. ফজলুল আলী আরো জানান, কলেজের অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক লাইনটি এইচ টি লাইন হওয়ায় বৈদ্যুতিক সমস্যা হলে বিদ্যুৎ বিভাগ এর সমাধান করতে আসে না। কলেজের নিজস্ব উদ্যোগে বৈদ্যুতিক লাইনে কাজ করাতে হয়। তাঁর তত্ত্বাবধানে কর্তনকৃত বৃক্ষ দু’টির পাশে পরের দিনই উন্নত জাতের দুটি কাঁঠাল চারা রোপণ করা হয়।
তাছাড়া, এক সপ্তাহের মধ্যেই কলেজের উত্তর পাশে ১২০ টি উন্নত জাতের চারা রোপন করে একটি কাঠাল বাগান সৃজন করা হয়। আগামীতে সে বাগান সৌন্দর্য, পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কলেজ অডিটোরিয়ামের পূর্ব পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের আরেকটি বাগান সৃজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা করতে গিয়ে অব্যাহত পরীক্ষার্থী বৃদ্ধির কারনে বেঞ্চের সংকটে পড়তে হয় বিধায় কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নতুন বেঞ্চ-ডেস্ক নির্মাণ ও মেরামতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় । এরই ধারাবাহিকতায় ১০০ টি নতুন বেঞ্চ-ডেস্ক নির্মাণ করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ বলেন, কলেজের সম্মুখে নতুন সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, অত্যাধুনিক গেট নির্মাণ, সৈয়দ মুজতবা আলী হলের নামকরণ, ওই হলেরই আবাসিক শিক্ষার্থী ও শেখ হাসিনা একাডেমিক ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নে তার সহকর্মীদের নিয়ে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
অধ্যক্ষের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ প্রকল্প ‘কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ (CEDP) এর অন্তর্ভুক্ত হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নসহ সামগ্রিকভাবে কলেজের চেহারা পাল্টে যাবে।
অধ্যক্ষ যখন উপাধ্যক্ষ পদে ২০১৫ সালে যোগদান করেন তখনও (অধ্যক্ষের পরামর্শে) তিনি তিনটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর প্রথম পর্ব এবং সাতটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ পর্ব কোর্স চালু করতে সক্ষম হন। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ সচেতনমহল মনে করেন উন্নয়ন কর্মকান্ডে অধ্যক্ষ মহোদয়ের অসামান্য অবদান ও তার সুনাম ক্ষুন্ন করার যে অপতৎপরতা একটি কুচক্রী মহলের – এটা সবার কাছে পরিষ্কার।
তিনি বলেন তিনি যা করেছেন কলেজের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থেই করেছেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের গাছ কাটা নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গাছ কাটার প্রকৃত কারণ সেসব সংবাদে পুরোপুরি উপস্থাপন না করায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে কলেজ অধ্যক্ষ এসব কথা বলেন।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply