এইবেলা, বড়লেখা :
বড়লেখা উপজেলার রতুলী-লক্ষীছড়া ভায়া মাধবকুণ্ড সড়কের এক কিলোমিটার কাচা রাস্তা ৯ মাসে সম্পন্নের চুক্তি করে মেয়াদ উত্তীর্ণের ৪ মাস পরও প্রকল্পের ৩ ভাগ কাজও সম্পন্ন করেনি রাজনগর উপজেলার আওয়ামী লীগ দলীয় ঠিকাদার জুবেল আহমদ। রাস্তার বক্সকাটিং করে এক বছর ধরে ফেলে রেখেছে। ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতা ও গাফিলতে চরম দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন এলাকাবাসি। অভিযোগ রয়েছে, বক্সকাটিংকালে ঠিকাদারের লোকজন রাস্তার মাটি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। বাধা দিলে পুলিশের ভয় দেখানো হয়।
জানা গেছে, উপজেলার রতুলী-লক্ষীছড়া এলজিইডি সড়কটি দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মাধবকুণ্ড যাতায়াতের লিং রোড। বড়লেখার দক্ষিণ দিক থেকে আগত পর্যটকরা ওই সড়ক দিয়ে তুলনামুলক কম দূরত্ব ও কম সময়ে মাধবকুণ্ডে পৌঁছতে পারেন। এতে মেইন সড়কে যানজটও অনেকাংশে কমার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্ত সড়কটির পূর্ব হরিপুর এলাকা থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার কাচা থাকার কারণে পর্যটক ও এলাকাবাসি এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। গত বছর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর রতুলী-লক্ষীছড়া রাস্তার কাচা অংশ পাকাকরণে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। প্রকল্পের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত রয়েছে কয়েকটি বক্স কালভার্ট, ড্রেন কালভার্ট ও ড্রেনেজ নির্মাণ। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় জেলার রাজনগর উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা জুবেল আহমদ। ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে চলিত বছরের ১৮ জুলাই রাস্তাটির পাকার কাজ শেষ করার চুক্তি থাকলেও আওয়ামী লীগ দলীয় ঠিকাদার জুবেল আহমদ রাস্তাটির বক্সকাটিং করেই ফেলে রেখেছেন। এরপর আর কোনো কাজ না করায় প্রায় ১ বছর ধরে হরিপুর, সোনাতনপুর, লক্ষীছড়া, মনিপুরি পাড়াসহ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন। গত বর্ষায় রাস্তাটি ছড়ায় পরিণত হয়। না চলে গাড়ি, না চলা যায় পায়ে হেটে। এমন এক অবস্থা করে রাখা হয়েছে কোনো মানুষ চলাচল করতে পারছেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্ব হরিপুর গ্রামের শেলু মিয়ার বাড়ির সম্মুখ থেকে রাস্তাটিতে খাল খনন করে রাখা। গত বর্ষায় পানির ¯্রােতে রাস্তাটি ছড়া/খালে পরিণত হয়েছে। কাদায় ভরা রাস্তাটি একেবারেই চলাচল অনুপযোগি। এখন পর্যন্ত রাস্তাটির ২/৩ ভাগও কাজ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা নুর উদ্দিন, আব্দুল মানিক, প্রসদ দেবি, মীরা দেবী, আইকন সিংহ প্রমুখ জানান, কয়েক বছর ধরেই রাস্তাটি পাকা করার জন্য এলাকাবাসি সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের কাছে ধর্না দিয়ে আসছিলেন। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি রাস্তাটির পাকার কাজ উদ্বোধন করেন। ঠিকাদার রাস্তায় খাল খনন করে ফেলে যায়। এক বছর ধরে আমাদের কষ্টের সীমা নেই। আগেই ভাল ছিল, অন্তত চলাচল করা যেন। পাকার কাজ শুরু করে ফেলে রাখায় মোটেও চলাচল করা যায় না। সাবেক মন্ত্রীর কাছে আমরা পাকা রাস্তা চেয়েছিলাম। তিনি আমাদের রাস্তায় গর্ত খুঁড়ে খাল উপহার দিয়েছেন। এই কষ্ট কার কাছে বলবো।
উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম সিকদার জয় জানান, চলিত বছরের ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে এই রাস্তার পাকাসহ প্রকল্পভুক্ত অন্যান্য কাজ শেষ করার ব্যাপারে ঠিকাদার চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। কিন্ত এখন পর্যন্ত তিনি ৫ ভাগ কাজও করেনি। দ্রুত কাজ সম্পন্নের জন্য অনেকবার তাকে তাগিদ দেওয়া হয়। তবে, সম্প্রতি ঠিকাদারকে চুড়ান্ত নোটিশ দেওয়ায় বুধবার থেকে কাজ শুরু করেছে ।
Leave a Reply