বড়লেখা প্রতিনিধি::
বড়লেখায় গত জুন-জুলাইয়ের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রোপা আমনের বীজতলা তৈরীর জমি নিমজ্জিত থাকায় এবার ব্যাপক জমি অনাবাদি থাকার আশংকা দেখা দেয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির পরামর্শ ও দিক নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিশেষ ব্যবস্থায় উপজেলার উঁচু এলাকার প্রায় ৪৮ বিঘা জমিতে বীজ বপন করেছে। আর এসব চারায় (হালি) প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিতে রোপা আমন আবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। যা বন্যার কারণে অনাবাদি থাকার আশংকা বিদ্যমান ছিল। কিন্তু প্রশাসনের আগাম তৎপরতায় জমিগুরো আবাদের আওতায় নিয়ে আসায় ৫৭৬ মেট্টিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ আশা করছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় উপজেলার কৃষির ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ, যুগান্তর প্রতিনিধি সাংবাদিক আব্দুর রব, কালেরকন্ঠ প্রতিনিধি লিটন শরীফ, ইত্তেফাক প্রতিনিধি তপন কুমার দাস, সাংবাদিক মস্তফা উদ্দিন প্রমুখ।
জানা গেছে, এবারের জুন-জুলাইয়ে বন্যায় উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ব্যাপক এলাকা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে উপজেলার তালিমপুর, বর্নি ও সুজানগর ইউনিয়নের কৃষি জমিতে রোপা আমনের বীজ বপনের কোন জমি শুকনো পাওয়া যায়নি। পানি নামার পর ধান রোপনের মৌসুমও থাকছে না দেখে প্রান্তিক কৃষকরা হতাশায় ভোগেন। ঠিক তখনই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির পরামর্শ ও দিক নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের মাঠে বীজতলা তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করে। ৩১ জুলাই থেকে সেসব বীজ তলায় বীজ বপন শুরু হয়। আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চারা রোপন সম্পন্ন করার লক্ষে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ১২টি প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে ১৮ বিঘা জমিতে বীজতলা তৈরী করা হয়েছে। এছাড়া কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির বীজ ও রাসায়নিক সার সহায়তায় আরো ২২টি প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন স্থানে প্রায় ৩০ বিঘায় বীজতলা করা হয়েছে। যেখানে লেট জাতের বিআর-২২ ও বিআর-২৩ ধানের বীজ বপন করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার জানান, তিনি ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে বীজতলা তৈরি করেছেন। ২টি কর্মসূচির সহায়তায় ৪৮ বিঘা নাবী জাতের রোপাআমন বীজতলা করা হয়েছে যার দ্বারা ৯৬০ বিঘা জমি রোপন করা সম্ভব হবে। প্রতি বিঘায় গড় ফলন ০.৬ মে. টন হিসাবে ৯৬০ বিঘা জমিতে মোট ৫৭৬ মেট্টিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজার মূল্য হবে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
Leave a Reply