এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার প্রথিমপাশা ইউনিয়নে পপি হত্যাকান্ডের জন্য তার পিতা দিগিন্দ নম (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার ০১ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় ও পুলিশের কাছে সে নিজেই তার মেয়েকে হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়।
০২ অক্টোবর রোববার দুপুরে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুছ ছালেক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের ১২ বছর বয়সী মেয়ে পপি সরকারকে হত্যা করেন দিগিন্দ নম। সে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জের গুমগুমিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
দিগিন্দ নম পেশায় কুঁচিয়া মাছ শিকারী। কুচিয়া শিকার করে বিভিন্ন খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে বিক্রি করতো। সেই সুবাদে গত ৫ মাস ধরে উপজেলার পৃথিমপাশার সুলতানপুর গ্রামে বাসিন্দা সাবেক শিক্ষক কামাল আহমদ চৌধুরীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন স্ত্রী আশুলতা ও তিন সন্তানসহ। ওই এলাকায় নিজেকে দিগেন্দ্র সরকার নামে পরিচয় দেন।
অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুছ ছালেক জানান, দিগিন্দ মাদকাসক্ত ছিলো। প্রায়ই মদ্যপান করে স্ত্রী সন্তানকে নির্যাতন করতো। বেশ কয়েকদিন আগে থেকে ওই এলাকার বাসিন্দা সুরমান মিয়া ও কাজল আলীর সাথে দিগিন্দ’র বিরোধ সৃষ্টি হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ঘটনার রাতে তাঁর পরিবারের সবাই খাওয়া দাওয়া শেষে ১২টার দিকে ঘুমোতে যায়। গভীর রাতে সবার অজান্তে নিজের বড় মেয়ে পপিকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যায়। ঘরে পেছনে খালি জায়গায় মেয়েকে গলায় ওড়ান পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে তার স্ত্রী ঘরে মেয়েকে না পেয়ে খোঁজ করতে গেলে ঘরের পেছনে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মাটিতে পপির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। দিগিন্দ তাঁর মেয়েকে হত্যায় সুরমান মিয়া ও কাজল আলী জড়িত দাবি করে মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন মামলার প্রধান অভিযুক্ত সুরমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বিস্কুটের প্রলোভন দেখিয়ে পপিকে অভিযুক্তরা হত্যা করেছে, এমন নাটক সাজায় দিগিন্দ। ওই বিস্কুটের মোড়কে কোম্পানীর নাম দিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম ও এসআই হারুনুর রশীদ জানতে পারেন পার্শ্ববর্তী একটি মুদি দোকান থেকে দিগিন্দ নিজেই ওই বিস্কুট ক্রয় করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে দিগিন্দ বিষয়টি স্বীকার করে। এ হত্যাকান্ডে প্রধান আসামী করে দিগিন্দকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, দিগিন্দর সাথে বিরোধ নিয়ে ইউনিয়নের ২ জন মেম্বার সালিশও করেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মুল কাহিনী বেরিয়ে আসবে।
সুরমান ও কাজলের সাথে দিগিন্দ’র বিরোধ কিসের জেরে জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, এ বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। তদন্ত করছি আমরা। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছেন কিনা তদন্তের পর জানা যাবে।#
Leave a Reply