এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে দুই নেত্রীর লড়াই বেশ জমে উঠেছে। দু’জনেই নারী, পড়নে শাড়ী, হাতে চুড়ি। কিন্তু এরপরেও ঘরে বসে নেই তাঁরা। পুরুষ প্রার্থীর পাশাপাশি তাঁরাও কর্মী-সমর্থক নিয়ে দিনরাত চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে ওপর প্রান্তে। আবার দু’জনেই একবার করে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
জানা যায়, আগামী ৮ মে কুলাউড়ায় প্রথমধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন দু’জন। একজন হলেন আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রী, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস চৌধুরী পপি (হাঁস প্রতীক) এবং অপরজন হলেন জাসদের নারী নেত্রী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নেহার বেগম (ফুটবল প্রতীক)। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন নেহার বেগম। এরপর ২০১৯ সালে তাকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন ফাতেহা ফেরদৌস চৌধুরী পপি। এবার প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই দুই নেত্রী উপজেলার প্রতিটি এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন। পুরুষ প্রার্থীদের সাথে পাল্লা দিয়ে তাঁরাও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার হাঁটবাজার ও বাসাবাড়িতে পথসভা, উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করে নির্বাচনী মাঠকে সরগরম রেখেছেন।
এদিকে ভোটের মাঠেও দু’জনের অবস্থান উনিশ-বিশ। একঅঞ্চলে ফুটবলের গণজোয়ার দেখা গেলেও আরেক অঞ্চলে হাসের জয়জয়কার। সাধারণ ভোটারের মুখেও দুই নেত্রীর আলোচনা বেশি। দুই নেত্রীর বিগত দিনের কর্মকা- নিয়ে চায়ের দোকানে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিগত ভোটের পরে কোন নেত্রীকে মাঠে পাওয়া গেছে আর কোন নেত্রীকে পাওয়া যায়নি, কাকে খরায়- বণ্যায়, বিপদে-আপদে পাওয়া গেছে আর কাকে পাওয়া যায়নি, তা নিয়ে চলছে তুমুল বাকবিতন্ডা। তবে সবদিক মিলিয়ে
ভোটের মাঠে সাধারণ মানুষের মুখে হাঁসের চাইতে ফুটবলের সুর একটু বেশিই শোনা যাচ্ছে। যদি এই সুর ভোটে পরিণত হয়, তাহলে শেষ হাসিই ফুটবলের প্রার্থী হাসতে পারেন। সবমিলিয়ে অন্যান্য পদের প্রার্থীদের তুলনায় দুই মহিলা নেত্রীর লড়াই বেশ জমে উঠেছে।
নির্বাচন বিষয়ে নারী নেত্রী নেহার বেগম বলেন, দলমত নির্বিশেষে ২০১৪ সালে বিপুল ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করেছেন উপজেলার লোকজন। তিনিও সেসময় নিজের সর্বস্ব দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে নারীদের কল্যাণে সর্বচ্ছো কাজ করেছেন। গত ৫ বছর তিনি দায়িত্বে না থাকার পরও বণ্যা, খরা ও করোনার মহামারিতে মানুষের পাশে ছিলেন। যারফলে এবারও নিজ সংগঠনের কর্মী-সমর্থক ছাড়াও নির্দলীয় সাধারণ মানুষের দোয়া, পরামর্শ ও সমর্থন নিয়েই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হলে তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
নির্বাচন বিষয়ে ফাহেতা ফেরদৌস চৌধুরী পপি বলেন, গত ৫ বছর তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। দীর্ঘ করোনা ও ভয়াবহ বণ্যায় উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ ছাড়াও নিজের ব্যক্তি তহবিল থেকে অসহায় মানুষের সাহায্যে পাশে ছিলেন। পরিষদ থেকে পাওয়া সামান্য বরাদ্দ দিয়ে ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করেছি। অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে আবারও সকলের সহযোগীতা চাচ্ছেন তিনি।#
Leave a Reply