এইবেলা কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার আশ্বাসে দরিদ্র অসহায় মহিলার ভিক্ষার অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্ত সেই ইউপি সদস্য আজাদ মিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।
শনিবার (১৩ জুলাই) উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের উত্তর কৌলা গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় অভিযোগের তদন্ত করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন। তদন্তকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেনের সাথে ছিলেন কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম মিঠু, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস শহীদ।
এদিকে গত ১২ জুলাই এইবেলাসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে এ তদন্ত শুরু করে। এর আগে গত ৭ জুলাই উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের নিছমারুণ নামের এক মহিলা মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে ইউপি সদস্য আজাদ মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, কাদিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের অছির আলী স্ত্রী নিছমারুনের কাছ থেকে উত্তর কৌলা গ্রামে নির্মিত আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্ধ দেওয়ার জন্য ৪৫ হাজার টাকা দাবি করেন। নিছমারুন তার স্বামীর ভিক্ষা করে জমানো টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা তুলে দেন মেম্বার আজাদ মিয়াকে। পরে আজাদ আশ্রয়ণের ২৩ নম্বর ঘরের চাবি তুলে দেন নিছমারুনের হাতে। ভাইয়ের অসুস্থতার কারণে তিনি ঘরে তালা দিয়ে তাকে দেখতে যান। ফিরে এসে দেখেন তার ঘরের তালা ভেঙে ছালই বেগম নামক এক মহিলাকে ঢুকানো হয় টাকার বিনিময়ে।
সরেজমিনে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গেলে জানা যায়, এই আশ্রয়ণে ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া, চুনঘর গ্রামের দুলাল মিয়া, কাদিরপুর গ্রামের রুবেল, আশ্রয়ণে বসবাসকারী ইউসুফসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। তারা তাদের পছন্দমত লোকদের টাকার বিনিময়ে ঘরে ঢুকাচ্ছে আবার বের করছে। এভাবে টাকা নিয়ে ভাড়া দিয়েছেন বলে ঘরগুলোতে বসবাসকারীরা জানান। পুরো আশ্রয়ণ প্রকল্পে ইউপি সদস্য আজাদ মিয়ার একটা শক্ত সিন্ডিকেট রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগ যদি তদন্তক্রমে সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে যেকোন শাস্তি আমি মাথা পেতে নিবো।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহরুল হোসেন বলেন, তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। তদন্তের সময়ে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িতদের লিখিত জবানবন্দি ও উপস্থিত স্বাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি। পুরো তদন্তকাজ শেষে প্রতিবেদন ইউএনও স্যারের কাছে জমা দিব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহি উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে তদন্ত করছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply