এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে দক্ষিণ ভাটগাঁও জামে মসজিদ সম্প্রসারণ ও মসজিদের মুসল্লীদের নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচারের বন্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দক্ষিণ ভাটগাঁও মসজিদের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে মসজিদের মুসল্লীগণ। এদিকে প্রতিকার চেয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুল আরেফীন কামাল বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এর আগে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী শিক্ষক এম এস জামানের কবল থেকে মসজিদের জমি উদ্ধার ও তার বিচারের দাবিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন মসজিদের মুসল্লীগণ।
অবস্থান কর্মসূচিতে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুল আরেফীন কামাল অভিযোগ করে বলেন, শনিবার নিজ বাড়িতে মনগড়া সংবাদ সম্মেলন করেন স্থানীয় বাসিন্দা এম এস জামান ওরফে কামাল। তিনি মসজিদ সম্প্রসারণ করতে এলাকার একটি পক্ষকে নিয়ে বাধা দিয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে দীর্ঘদিন থেকে শতবর্ষী মসজিদটি নতুন করে সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। তাঁর নেতৃত্বে ভূয়া দলিল সম্পাদন করে মসজিদের জমি নিজ কবলে রেখেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মনগড়া যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে মসজিদ নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলছে। প্রতিপক্ষ এম এস জামান তাঁর পিতা আব্দুস শুকুরসহ ২০ জনকে দাতা বানাতে গিয়ে মসজিদের নামে সকল রেকর্ডীয় কাগজপত্র থাকার পরও তাঁর শশুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনুর প্রভাব খাটিয়ে ৩ শতক ভূমি ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি কুলাউড়া সাবরেজিস্ট্রারী কার্যালয়ে ১৪৪/২২নং দানপত্র দলিল সম্পাদন করেন।
ওই দলিলে উল্লেখ করা হয়, দলিলের দাতা কিংবা দাতাগণের ওয়ারিশানের মধ্যে হতে আজীবন মসজিদের মোতাওয়াল্লী থেকে মসজিদ পরিচালনা করবেন। ওই স্বার্থ হাসিলের জন্যই ভূয়া দলিলের সৃষ্টি করা হয়। মসজিদ নিয়ে আমরা কোন রাজনীতি চাইনা। আমরা শান্তিশৃঙ্খলা চাই। এম এস জামান একজন শিক্ষক হয়ে কিভাবে আমাদের এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, এলাকার মুসল্লীদের স্বার্থে অতিদ্রুত দীর্ঘদিনের বিরোধনিষ্পত্তি করে মসজিদ সম্প্রসারণে যেন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম সিকন, কোষাধ্যক্ষ রিয়াদ উল্লাহ, মুসল্লী আব্দুর রহিম, জাহিদুল আরেফীন সুমেল, ইউসুফ মিয়া, রমিজ উদ্দিন, মফিজ মিয়া, ইসরাব আলী, কিফাত উল্ল্যাহ, মনর মিয়া, ফজলু মিয়া, রিপন মিয়া, হারুন মিয়া, মনিরুল ইসলাম তানিম প্রমুখ। এসময় মসজিদের প্রায় শতাধিক মুসল্লী উপস্থিত ছিলেন।
এম এস জামান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মসজিদ সম্প্রসারণ কাজ করতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমরা চাই মসজিদ সম্প্রসারণ হউক। কিন্তু আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে কি মসজিদের জন্য জায়গা নেয়া যাবে। মসজিদের পাশের জমি আমাদের রেকর্ডীয়। আমার শ্বশুরের কোন প্রভাব খাটিয়ে দলিল তৈরি করা হয়নি। দলিলদাতারা স্থানীয় মুসল্লীদের সাথে আলোচনাক্রমে সভা করে রেজুলেশনের মাধ্যমে মসজিদের নামে জমিটি দানপত্র করে দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অভিযোগটি তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।#
Leave a Reply