এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয়দের হাতে খুন হওয়া বাংলাদেশি কৃষক আহাদ আলীর পরিবার ভয়ে এখনো নিজ বাড়িতে ফিরছে না। আহাদ আলী খুনের ঘটনায় কান্না থামছে না পরিবারের। এ হত্যাকান্ডের ঘটনার পর থেকে এখনো আতঙ্কে রয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তানরা।
নিহত আহাদ আলীর মৃত্যুর পর স্ত্রী জমিরুন নেছা, একমাত্র ছেলে আশরাফুল আলী এবং মেয়ে রাছনা বেগম নিয়ে রড় মেয়ে রাহেলা বেগমের স্বামীর বাড়িতে বর্তমানে রয়েছেন। বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে তারা দিনযাপন করছেন। পরিবারের সদস্যরা ভয়ে সীমান্তঘেষা বাড়িতে ফিরছেন না কেউ। আসামিরা কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। ভারতীয় এবং বাংলাদেশি খুনিদের ভয়ে সীমান্তবর্তী নির্জন বাড়িটি এখন জনমানবহীন। ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে বাড়িতে।
নিহত আহাদ আলী স্ত্রী জমিরুন নেছা জানান, ভারতীয় আসামিরা শুনেছি এখনো তাদের বাড়িতে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। এবং ওইখান থেকে আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। যেহেতু কাটাতার টপকিয়ে তারা বাংলাদেশে এসে আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আবার ফিরেও গেছে নির্বিঘেœ। এখন যদি আমরা বাড়ি ফিরি তাহলে ওই আসামিরা রাতের আধাঁরে এসে আবারও আমাদের ওপর হামলা চালাতে পারে। তাই ভয়ে কেউই বাড়ি ফিরছি না।
আহাদ আলীর মেয়ে অষ্টম শ্রেণী পড়–য়া রাছনা বেগম বলেন, বাবার মৃত্যুর শোক এখনো আমরা ভুলতে পারছি না, সবাই এখনও আতঙ্কে আছি। বাবা মারা যাওয়ার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও দেশে থাকা কোনো আসামি এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় আমরা আতঙ্ক উৎকণ্ঠায় রয়েছি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: গোলাম আপছার বলেন, আসামি আটক করতে আমরা বেশ কয়েকবার পাহাড়ী অঞ্চল হানা দিয়েছি। দেশে থাকা আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এব্যাপারে বিজিবি শ্রীমঙ্গল সেক্টর কমান্ডার লে: কর্নেল জাকারিয়া জানান, ওই পরিবার আতঙ্কের বিষয়ে আমরা অবগত নই। তবে সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে। ভারতে থাকা আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে ইতোমধ্যে আমরা পতাকা বৈঠক করে চিঠি দিয়েছি। আসামী গ্রেফতারে ভারতীয় বিএসএফ এবং পুলিশ সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশাবাদী।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি দুপুরে কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কর্মধা ইউনিয়নের দশটেকি (নতুন বস্তি) এওলাছড়া এলাকায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উনকুটি জেলার ইরানী থানার পূর্ব ইরানী গ্রাম থেকে হায়দার আলীর নেতৃত্বে ৫-৬ জনের একটি দল অবৈধভাবে বাংলাদেশ সীমান্তের নোমেন্স ল্যান্ডে অনুপ্রবেশ করে রাম দা ও লাঠিসোঠা দিয়ে কৃষক আহাদ আলীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আহাদ আলীর শ্বশুরের কিছু কৃষি জমি রয়েছে বাংলাদেশ অংশে জিরো লাইনে। সেগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন জামাতা আহাদ। মূলত ওই জায়গাকে কেন্দ্র করে মুলত এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। #
Leave a Reply