বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখায় আফনান বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। শুক্রবার বিকেলে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। গৃবধুর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চলছে নানামূখি গুঞ্জন।
তবে, গৃহবধু আফনানের বাবা মো. আব্দুস শুকুরসহ স্বজনদের অভিযোগ, প্রবাসী স্বামীর নির্দেশে শ্বাশুড়ি, ভাসুরসহ শ্বশুড় বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে আফনানকে হত্যার পর লাশ শিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়। অন্যদিকে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, আফনান আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ বলছে, পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝসড়ার জেরে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেন। তবে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিহত গৃহবধু আফনান উপজেলার দক্ষিণ গ্রামতলা (ব্রাক্ষণপাড়া) গ্রামের দুবাই প্রবাসী সাহিদ আহমদের স্ত্রী এবং বিওসি কেছরিগুল (ডিমাই) গ্রামের আব্দুস শুকুরের মেয়ে। ২০২৩ সালে প্রবাসী সাহিদ আহমদ ভালবেসে আফনান বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের ৩ মাস পর তিনি প্রবাসে চলে যান। এরপর আফনান বেগমের সাথে স্বামীর বনিবনায় ছিড় ধরে।
থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রেম করে পরিবারের অমতে উপজেলার দক্ষিণ গ্রামতলা (ব্রাক্ষণপাড়া) গ্রামের সাহিদ আহমদকে বিয়ে করেন বিওসি কেছরিগুল (ডিমাই) গ্রামের শুক্কুর আলমের মেয়ে আফনান বেগম। বিয়ের ৩ মাস পর স্বামী দুবাই চলে যান। এরপর মুঠোফোনে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আফনারে প্রায়ই ঝগড়া হতো আফনানের। বৃহস্পতিবারও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে ওইদিন বেলা ২টা থেকে ৩টার মধ্যে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের শিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন আফনান। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে লাশ মর্গে প্রেরণ করে।
নিহত আফনানের বাবা আব্দুস শুকুর শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। স্বামীর নির্দেশে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতনে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। আমি আমার মেয়ের দাফনকাজে ব্যস্ত। পরে আমি থানায় মামলা করব।
থানার এসআই সুব্রত দাস জানান, সুরতহালের সময় গলায় ফাঁসের চিহ্ন দেখা গেছে। যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। শরীরে আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাননি। ময়নাতদন্ত শেষে নিহত গৃহবধুর লাশ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করেছেন। এব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তখন সে অনুযায়ি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply