বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখা উপজেলার বর্নী ইউনিয়নের আনোয়ারা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শনিবার ভোর চারটার দিকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজন ও দমকল বাহিনী দীর্ঘ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। তবে, এর আগেই মাদ্রাসা ভবনের তিনটি শ্রেণিকক্ষ, অফিসরুম, পাঁচটি সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ গাড়ির গ্যারেজ সম্পুর্ণ পুড়ে অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুবর্ৃৃত্ত অথবা বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে।
এর আগে ২০২২ সালে একইভাবে এই মাদ্রাসার বাণিজ্যিক মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে। এতে মার্কেটের ৬টি দোকান পুড়ে অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। তিন বছরের মধ্যে একই কায়দায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার ২৬ এপ্রিল ভোরের দিকে স্থানীয় লোকজন আনোয়ারা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ভবনে আগুন জলতে দেখেন। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় মাদ্রাসায় কেউ ছিলেন না। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে মাদ্রাসার পার্শবর্তী বাসিন্দারা আগুন নেভাতে ছুটে আসেন। তারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে খবর দেন। সকাল সোয়া পাঁচটায় দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, এর আগেই মাদ্রাসার ভবনটি আগুনে পুড়ে অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
মাদ্রাসার মোহতামীম (প্রধান শিক্ষক) হাফেজ মো. ময়নুল হক জানান, শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকায় কেউ মাদ্রাসায় ছিলেন না। মাদ্রাসার আয়ের জন্য ভবনের পাশে একটি গ্যারেজ নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। অগ্নিকান্ডে গ্যারেজে থাকা পাঁচটি সিএনজি, আসবাবপত্রসহ তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও অফিসকক্ষ সম্পুর্ণ পুড়ে গেছে। আগুন লাগার কারণ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
ফায়ার সার্ভিসের বড়লেখা স্টেশন অফিসার মোল্যা মো. শামীম আহমদ জানান, খবর পেয়েই দমকল বাহিনী নিয়ে তিনি রওয়ানা দেন। বেশ দূরবর্তী হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লেগেছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে, এর আগেই মাদ্রাসার ভবনসহ অনেকগুলো কক্ষ পুড়ে গেছে। অধিকতর তদন্ত ছাড়া অগ্নিকান্ডের সঠিক কারণ নিশ্চিত করতে পারছেন না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান জানান, ধারণা করা হচ্ছে রাত তিনটার দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ভোর সোয়া চারটার দিকে তিনিসহ স্থানীয় লোকজন মাদ্রাসায় ভয়াবহ আগুন দেখে তা নেভাতে এগিয়ে যান। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে ২০২২ সালে একইভাবে অগ্নিকান্ডে মাদ্রাসার বাণিজ্যিক মার্কেট পুড়ে যায়। তখন মাকের্টভবন ও মালামালসহ ছয়টি দোকান পুড়ে অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে নাকি দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে মাদ্রাসায় অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলো ঘটছে প্রশাসনের তা তদন্ত করে দেখা জরুরি।
বড়লেখা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (কম) আশরাফ হায়দার জানান, বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে নয়, দুর্বৃত্তের অগ্নিসংযোগে বর্ণী আনোয়ারা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটেছে।
Leave a Reply