আব্দুর রব, বড়লেখা ::
বড়লেখায় অজ্ঞতাবশত বন্যপ্রাণী হত্যার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক ১ মাস সাজাভোগী হতদরিদ্র সেই ২ সাওতাল যুবককে সরকারী পাকা ঘর দিচ্ছেন ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান। গৃহহীন এ ২ যুবকসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা ভাসমান জীবন-যাপন করছে। সোমবার তাদের বরাদ্দ দেয়া সরকারী ঘরের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ইউএনও, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
এসময় সদর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন ও ইউপি মেম্বার ফখরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি পাকা ঘর নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউপির বিওসি কেছরিগুল এলাকার সাওতাল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর হত দরিদ্র সুবল ভোমিজ সিংহ (২৫), জগ সাওতালসহ (২৫) ৯ সাওতাল যুবক গত ১৪ নভেম্বর আনন্দ-উন্মাদনায় মাধবকু- ইকোপার্ক এলাকা থেকে একটি শজারু শিকার করে। স্থানীয় বনপ্রহরী তাদেরকে আটক করে। রাতে ঘটনাস্থলে অনুষ্ঠিত ইউএনও মো. শামীম আল ইমরানের ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্যপ্রাণী ও সংরক্ষণ আইনে সুবল ভোমিজ সিংহ ও জগ সাওতালকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও অপর ৭ জনকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৭০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেন। কারাদন্ডিত ২ সাওতাল যুবকের সাজার মেয়াদ গত ১৪ নভেম্বর শেষ হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন জানান, এসব সাওতাল ছেলেরা কালিপুজা উপলক্ষে একটি শজারু শিকার করেছিল। বন্যপ্রাণী শিকার করা দন্ডনীয় অপরাধ তা তারা জানতো না। আটককৃতরা অত্যন্ত নিরীহ, হতদরিদ্র ও ভদ্র প্রকৃতির। ইচ্ছে করলে পালিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু তা না করে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত একজন বনপ্রহরীর হেফাজতে থেকেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতও আইনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাশীলতার প্রশংসা করেছেন। ১ মাসের কারাদন্ডপ্রাপ্ত ২ সাওতাল যুবকের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র, অন্যের বাড়িতে কোনমতে থাকার বিষয়টি জেনে ইউএনও স্যার তাদের দু’জনকে দু’টি সরকারী ঘর বরাদ্দ দিয়ে মানবিকতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান জানান, অসচেতনতা ও অজ্ঞতার কারণেই তারা শজারুটি শিকার করেছে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জেনেছেন ৯ সাওতাল যুবকের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত দু’জন অত্যন্ত দরিদ্র। বাবা-মাসহ তারা অন্যের বাড়িতে থাকে। গৃহহীন হওয়ায় তাদেরকে দু’টি পাকা ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন।#
Leave a Reply