আব্দুর রব :
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার নয়াগ্রাম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসার জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম আয়াকে দিয়ে আদালতে মিথ্যা মামলা করানোর সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এব্যাপারে মাদ্রাসার সভাপতিসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদা আকতার। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আয়া তকমিনা বেগম বেতন ভাতা ফিরে পাওয়া এবং মাদ্রাসার সভাপতি-সুপারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে স্বামী-সন্তান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। অবস্থান কর্মসূচিতে আয়া তকলিমা বেগম, স্বামী মহীউদ্দীন, দুই শিশু সন্তান রাবেয়া আক্তার (৮), জুনায়েদ আহমদ (৫) মানবিক আর্তি সম্বলিত নানা প্লেকার্ড প্রদর্শণ করেন।
জানা গেছে, নয়াগ্রাম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসার আয়া তকলিমা বেগম কয়েক মাস আগে ঐ মাদ্রাসায় নিয়োগ পান। মাদ্রাসার কিছু জমি নিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির সাথে মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতির দ্ব›দ্ব চলছিল। দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে সুপার ও সভাপতি তকমিনাকে বেতন সংক্রান্ত কাজ আছে বলে মৌলভীবাজার আদালতে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একই গ্রামের মঈনুল ইসলাম মনু মাষ্টারের ছেলে জুমন মিয়ার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করান। পরবর্তীতে সুপার ও সভাপতির সাথে এই মামলার বিরুদ্ধে কথা বলায় এবং আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করায় তার বেতন বন্ধ করে দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। বেতন বন্ধের বিষয়টি সুরাহার জন্য আয়া তকমিনা বেগম জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদনে এসব অভিযোগ করেন। আকলিমা বেগম জানান, বেতন ভাতা বন্ধ হওয়ায় বিগত পবিত্র ঈদুল ফিতরে শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামী ও ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে তিনি মানবেতার জীবন যাপন করেন।
এদিকে ওই নারী নির্যাতন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জুড়ী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদা আকতার সম্প্রতি আয়াকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানোর সত্যতা পেয়ে মাদ্রাসার সভাপতি মনিরুল ইসলামসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
জুড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহেদা আকতার মঙ্গলবার দুপুরে জানান, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে তিনি মামলাটি তদন্ত করেন। এতে আয়াকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানোর সত্যতা পান। এব্যাপারে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলামসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ৯ মে তিনি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। একই সাথে মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতি যাতে ষড়যন্ত্রের শিকার আয়া তকলিমা বেগমের কোন ধরনের ক্ষতিসাধন করতে না পারেন সে ব্যাপারে নজর রাখতে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছেন।
জুড়ী ইউএনও রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, বেতন ভাতা বন্ধের প্রতিবাদে আয়ার অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply