কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: কুলাউড়ার সর্ববৃহৎ ব্যবসা কেন্দ্র ঐতিহ্যবাহী রবিরবাজারে একের পর এক চুরির ঘটনা সংঘটিত হওয়ায় আতঙ্ক বেড়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। প্রায় দুই হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এই রবিরবাজারে মাত্র সাত জন নৈশ প্রহরী থাকলেও মেরামতের অভাবে দীর্ঘদিন থেকে অকেজো রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো। এতে গত এক বছরে ৮-১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি সংগঠিত হলেও উদ্ধার হয়নি চুরি হওয়া কোন মালামাল ও অর্থ। একের পর এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
১ আগষ্ট ভোর রাতে উত্তর রবিরবাজারের সুলতানা ভেরাইটিজ স্টোরে দুঃসাহসিক এক চুরির ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। এতে ওই দোকানের নগদ বারো লক্ষ টাকা ও ওই দোকানে থাকা রবিরবাজার মসজিদের দান বাক্সের প্রায় পনেরো হাজার টাকা চোরেরা নিয়ে যায়।
দোকানে চুরি হওয়ার পর কুলাউড়া থানায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী সৈয়দ মিজানুর রহমান পারভেজ বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, দোকানের মালিক প্রতিদিনের মতো রাতে দোকান বন্ধ করে দোকানের উপরে তার নিজস্ব বাসায় চলে যান। পরের দিন সকালে দোকান খোলার সময় দেখতে পান দোকানের সাটারের তালা ভাঙা। দোকানের ভেতরের মালামাল এলোমেলো ও ক্যাশ ড্রয়ারে রক্ষিত বারো লক্ষ টাকা সহ মসজিদের আরো পনেরো হাজার টাকা নেই।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন দোকানে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখতে পান ভোর রাত ৪ ঘটিকায় পাশ^বর্তী নির্মাণাধীন একটি বিল্ডিং থেকে আমার বিল্ডিংয়ের ছাদ দিয়ে এসে সিড়ি ঘরে নেমে লোহার গেইট ভেঙে দোকানের সাটারের তালা ভেঙে দোকানে প্রবেশ করে। এ সময় এক চোরকে ক্যামেরার ফুটেজে চুরি করতে দেখা যায়। তার পরণে একটি লুঙ্গি, মাথায় ক্যাপ ও মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক চুরি হওয়া দোকানগুলো হচ্ছে মঞ্জুর টেলিকম, আছকির মিয়া শপিং সিটির একটি কাপড়ের দোকান, রুশনা এন্টারপ্রাইজ, বেঙ্গল ইলেকট্রনিক্স, বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ, উস্তার ভেরাইটিজ স্টোর, লামাবাজারের একটি জুয়েলার্সের দোকান। চুরি হওয়া এসব দোকানে একই পদ্ধতিতে চুরি সংগঠিত হলেও এর কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল হেকিম, জাহিদ আহমদ, মঞ্জুর আহমদ প্রমুখরা জানান, কুলাউড়া উপজেলার সর্ববৃহৎ ব্যবসা কেন্দ্র রবিরবাজারে ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন না। এতো বড় একটি বাজারে একটি সিসিটিভি ক্যামেরাও সচল না থাকা, প্রায় তিন কিলোমিটার বিস্তৃত বাজারে মাত্র ৭ জন নৈশ প্রহরী দায়িত্ব পালন ও পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট না থাকার কারণে চুরের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুক আহমদ জানান, ব্যবসায়ীদের দোকানে চুরির ঘটনা অনাকাঙ্কিত। সমিতির পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া অর্থের অভাবে নৈশ প্রহরীর সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। রবিরবাজারের নানা সমস্যা সমাধানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের কাছে সমস্যা সমূহ তুলে ধরে লিখিত আবেদন করেছি। বাজার এলাকায় পুলিশি টহল জোরদারের দাবি জানাচ্ছি।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, রবিরবাজারের চুরির ঘটনায় পুলিশি তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছে। ##
Leave a Reply