ড্রাইভার
তৌহিদুর রহমান
ড্রাইভার নাকি ছোট জাত?
সর্ব লোকে কয়;
তাদের নাকি আচার আচরণ
মোটেই ভালো নয়।
কথায় তারা রুক্ষ অতি,
চোখ দুটো তার লাল;
সবাই বলে তারা নাকি
মদ খেয়ে হয় টাল।
অনেকেতো বলেই ফেলে
বজ্জাত সব তারা;
মেয়ে দেখলেই তারা নাকি
হয়ে যায় টেরা।
দুনিয়ার যত মন্দ কথা,
আসে তাদের মুখে;
টাকা পেলেই তাদের মুখে
হাসি নাকি ফুটে।
মানছি আমি সব কথাই,
তবুও কথা থাকে;
সবার মাঝেই ভালো মন্দ
মিলে মিশে থাকে।
তোমরা সবাই মন্দ টুকুই
দেখলে বড় করে;
বিবেকটাকে নেড়ে দেখ
তারা বাঁচে কেমন করে?
কত শত চাপে থাকে,
কষ্ট সীমাহীন;
এদিক সেদিক হলেই একটু
জীবন হয় বিলীন।
রাস্তায় যখন থাকে তারা
আমাদেরকে নিয়ে;
সবার চাপ একাই সে
বহন করে নিজে।
কেউ বলছে ড্রাইভার ভাই
চালাও আরো জোরে;
আমার আবার তাড়াতাড়ি
অফিস ধরতে হবে।
কেউ বলে ভয় লাগে ভাই,
গতি কমাও দ্রুত;
সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি
এইটা আগে বুঝো।
রাস্তায় যখন যানজট হয়,
দাঁড়িয়ে থাকে ঠাঁয়;
একচুলও নড়িবার তার
ক্ষমতা যে নাই।
তুমি আমি সাইকেল বা মোটরসাইকেলে
ফাঁকে ফাঁকে ঢুকি;
কখনো আবার ফুটপাতে
সোজা গিয়ে উঠি।
আর যদি পায়ে চলো
তাহলে তো রাজা;
সাপের মতো এঁকে বেঁকে
সামনে চলো সোজা।
ভেবেছ কি ড্রাইভার যে
বসে আছে ঠাঁয়;
মনের ভিতর তার কতো
ঝড় বয়ে যায়।
মালিককে দিবে জমা,
রাস্তায় আছে কতো চাঁদা;
সব মিটিয়ে তার আয়
হয়ে যায় আধা।
থাকতে হয় খুব সর্তক,
আশেপাশে যত গাড়ি;
একটু দাগ পরলেই
মালিক দিবে জারি।
কখনো কখনো এমনও হয়
দিতে হয় টাকা ;
তা নাহলে চাকুরী তার
যাবে যে কাটা।
ঘরে তার অনেক মুখ
বসে আছে আশায়;
বাজার সদাই হলে কিছু
রান্না যদি চড়ায়।
তার বউটা মা হবে,
টাকা কিছু চাই;
বাচ্চা দুইটা প্রাইভেটে
সেখানেও তাই।
মা-বাবা তার সাথেই খায়,
বয়স হয়েছে;
তাদেরও যে মাঝে মধ্যে
চিকিৎসা লাগে।
কিন্তু এখন গাড়ির সংখ্যা
অনেক বেড়েছে;
আগের থেকে আয় অনেক
কমে এসেছে।
ভাবো একবার কতো চাপে
রাস্তায় থাকে সে;
তোমার আমার জীবন নিয়ে
থাকে টেনশনে।
Leave a Reply