এম.আতিকুর রহমান আখই ::
সৈয়দ জামাল উদ্দিন রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, ক্রীড়া সংগঠনক ও ৭১ এর বীর সেনানিসহ গুণে গুণান্বিত একজন ব্যক্তি। সাদা মনের মানুষ হিসাবে সর্ব মহলেই প্রশংসিত ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ করলেও কুলাউড়ার সকল সঙ্কটকালিন সময়ে ভুমিকা রেখেছেন দল মতের উর্ধে্ব উঠে। তাঁর কথা বা আচরণে হেয়ো করেননি কাউকে। কোন কারণে কেউ তাঁর উপর মনঃক্ষন্ন হয়েছেন এটা জানার পর কি ভাবে ঐ মানুষটাকে খুশি করা যায় এর জন্য তিনি উদগ্রীব হয়ে যেতেন।
হযরত শাহ কামাল (রহঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহ্যবাহী জয়পাশা গ্রামে জন্মগ্রহণকারি সৈয়দ জামাল উদ্দিন এর সাথে আমার সম্পর্কটা দীর্ঘদিনের, মোটামুটি নিজের বোধগম্যতা হওয়ার পরেই জামাল ভাইয়ের সান্নিধ্যে চলে যাই। তাঁর মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সাথেই ছিলাম। অত্যন্ত নিরহংকারী ও পরোপকারী এই মহান মানুষটি উত্তম ব্যবহার দিয়ে খুব সহজেই চরম দুশমনকে আপন করে নিতে পারতেন নিমিষেই। আওয়ামী যুবলীগ এর প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান শেখ মনি এর সাথে ছিলো তাঁর বিশেষ সম্পর্ক। শেখ মনির ইন্তেকালের পর মুলত তিনি রাজনীতিতে কোনঠাশা হয়ে যান। কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন ও পরবর্তীতে কুলাউড়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, কিন্তুু প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ করতে না পারায় পরাজিত হয়েছেন।
সৈয়দ জামাল উদ্দিন এর সাথে আমার রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক না থাকলেও সামাজিক সম্পর্কটা ছিলো অত্যন্ত গভীর, বিশেষ করে শিক্ষার মান সংরক্ষণ ও নকল প্রতিরোধ আন্দোলন কুলাউড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তাঁর নেতৃত্বে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে তাঁর ভুমিকা অবিস্মরণীয়। তিনি কুলাউড়া সরকারি কলেজ, নবীন চন্দ্র মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। মরহুম সৈয়দ জামাল উদ্দিন প্রায় দু’যুগ কুলাউড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন সভাপতি হিসাবে। জামাল ভাই কুলাউড়ার সকলের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। জননেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, জননেতা নবাব আলী আব্বাস খান ও জননেতা এম এম শাহীনসহ অনেক বাঘা বাঘা নেতা জামাল ভাইকে শ্রদ্ধা করতেন বড় ভাই হিসাবে। যে কোন বড় ধরনের সংকট বা দুর্ঘটনাস্থলে জামাল ভাই উপস্থিত হলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসত সহজে। কোন মানুষ মহাবিপদে পড়েও তাঁর কাছে গেলে তিনি তাঁর মেধা ও কৌশল দিয়ে বাতিয়ে দিতেন সমাধানের সহজ পথ। সে জন্য আজও অনেকের চোখে জল বয়ে আনে তাঁর স্মরণে। রাব্বে কারিম যেনো তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের আলা মাকাম দান করেন, আমিন।
উল্লেখ্য যৌথ ছবিটি ২০০০ সালের ৮ এপ্রিল আমার প্রথম প্রকাশনা কবিতা কাপেঁনা ভয়ে, সংকলনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানের। সৈয়দ জামাল উদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত এবং বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক জনাব এ এইচ মোফাজ্জল করিম।#
লেখক পরিচিতিঃ বার্তা প্রধান কেবিসি নিউজ।
Leave a Reply