কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানের বাঘিছড়া এলাকার নারী শ্রমিক বুদুনি মুন্ডা। বয়স ৫৮ বছর। বৃষ্টির সময়ে চা বাগানের সেকশনে পাতি উত্তোলনকালে পা পিছলে মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে চা বাগান হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গত মঙ্গলবার দুপুর সোয়া একটায় কানিহাটি চা বাগানের ৬ নম্বর সেকশনে এ ঘটনা ঘটে। তবে নারী চা শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় চা শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার বাঘিছড়া চা বাগানের নারী শ্রমিকরা কানিহাটি চা বাগানের ৬ নম্বর সেকশনে পাতি উত্তোলন করেন। নারী শ্রমিকরা পাতি উত্তোলনকালে ভারী বৃষ্টিপাতের সময়ে আশপাশ এলাকায় কোন সেড না থাকার কারণে সেকশনে ভিজেও কাজ করেন। কারো কারো শরীরে পলিথিন মোড়ানো থাকায় বৃষ্টিপাত থেকে কিছুটা আত্মরক্ষা সম্ভব হয়েছে। আবার অনেকেরই সে ব্যবস্থাও ছিল না। মঙ্গলবার দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে বৃষ্টিপাতে ভিজে পাতি উত্তোলন করেন বুদুনি মুন্ডা। একপর্যায়ে দুপুরের দিকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে চা বাগানের ক্যামেলিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত বুদুনি মুন্ডা বাঘিছড়া চা বাগানের প্রয়াত মদন মুন্ডার স্ত্রী। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কর্মরত অবস্থায় মৃত বুদুনি মুন্ডার সন্তানদের কোম্পানী ও সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তার দাবি জানান স্থানীয়রা।
বাঘিছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি লছমন রবিদাস জানান, সেকশনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘসময় ধরে পাতি উত্তোলনকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ভিজে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বুদুনী মুন্ডা। বৃষ্টি থেকে রক্ষায় তার শরীরে পলিথিনও এবং সেকশনে কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল না। নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে বৃষ্টিপাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব ছিল। নারী চা শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রদান ও বুদুনি মুন্ডার পরিবার সদস্যদের আর্থিক সহায়তার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে শমশেরনগর চা বাগানের হেড টিলা ক্লার্ক গোপাল কানু বলেন, বৃষ্টির সময়ে প্লাকিংরত অবস্থায় দুপুর সোয়া ১টায় বুদুনি মুন্ডা মাটিতে পড়ে যান। তার মাথায় গামছা ছিল। এসময়ে দৌঁড়ে তাকে উদ্ধার করে ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন হাসপাতালে প্রেরণ করি। পরে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টির সময়ে সাধারণত নরমালি আমরা সেকশনে কাজ করি। আর বজ্রপাত হলে শ্রমিকদের ছেডে নিয়ে যাই। মঙ্গলবার বৃষ্টির সময়ে ভিজে আমি নিজেও কাজ করেছি। তবে যথাসাধ্য শ্রমিকদের নিরাপত্তা দিতে আমরা চেষ্টা করি।#
Leave a Reply