এইবেলা ডেস্ক ::
বড়লেখার দক্ষিণভাগ বাজারের ‘জামাল প্লাজা’র কথিত মালিক সেই প্রতারক তাজ উদ্দিন অবশেষে ১০ লাখ টাকার প্রতারণা মামলায় কারাগারে গেলেন। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার করম উল্লাহপুর গ্রামের মৃত আনর মিয়ার ছেলে মো. নওশাদ মিয়ার প্রতারণা মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা নিয়ে প্রায় ৪ মাস পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চাইতে সে হাজির হয়। বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বাদি পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট মো. ইমরান মিয়া লস্কর।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ বাজারস্থ কাতার প্রবাসী জামাল উদ্দিনের মালিকানাধীন ‘জামাল প্লাজায়’ বসবাস করেন তারই ছোটভাই নানা অপকর্মের নায়ক প্রতারক তাজ উদ্দিন। বড়ভাইয়ের মালিকানাধীন ‘জামাল প্লাজা’ নিজের বলে চালিয়ে কখনও ভাড়া, সাব-লীজ এমন কি বিক্রয়ের কথা বলে বিভিন্ন সহজ সরল ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক তাজ উদ্দিন। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার করম উল্লাহপুর গ্রামের মৃত আনর মিয়ার ছেলে মো. নওশাদ মিয়া ও হবিগঞ্জের তানজিম আহমদকে মাসিক ৬০ হাজার টাকা ভাড়ায় ১২ বছরের জন্য ২০ লাখ টাকা চুক্তিতে ‘জামাল প্লাজা’ ভাড়া দেয় তাজ উদ্দিন। ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তাজ উদ্দিন চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করে নওশাদ ও তানজিমের নিকট থেকে ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করে। শর্ত অনুযায়ী টাকা পেয়েই জামাল প্লাজা বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্ত টাকা গ্রহণ করেও ভুক্তভোগি নওশাদকে মার্কেটসহ জামাল প্লাজা বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করে তাজ উদ্দিন। এরই মধ্যে অন্য কয়েকজনের সাথে জামাল প্লাজা ভাড়া ও বিক্রির পায়তারা শুরু করলে ভুক্তভোগী নওশাদ প্রতারক তাজ উদ্দিনের ওপর চাপ দিতে থাকেন। আজ নয় কাল করে প্রায় দেড় বছর নওশাদতে ঘুরাতে থাকে। একপর্যায়ে অগ্রিম টাকা গ্রহণ ও চুক্তিপত্রের কথা অস্বীকার করে তাজ উদ্দিন ও তার সহযোগিরা নওশাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। অবশেষে তিনি প্রতারক তাজ উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে গত বছরের ২ ফেব্রæয়ারী মৌলভীবাজার সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারণা মামলা করেন। এই মামলায় প্রতারক তাজ উদ্দিনের সহযোগী জনৈক মোতাহির মিয়া ও রাহেলা সিদ্দিকাকেও আসামী করা হয়। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) প্রেরণ করেন। পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত গত ৩০ জানুয়ারী প্রধান আসামী তাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তাজ উদ্দিন আপন বড়ভাই কাতার প্রবাসী হাজি জামাল উদ্দিনের দক্ষিণভাগ বাজারস্থ প্রায় দুই কোটি টাকার ‘জামাল প্লাজা’ ২য় তলা মার্কেটসহ ৩০ শতাংশ ভূমি জামাল উদ্দিন সেজে ২০১৮ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের নামে রেজিষ্ট্রী করে নেয়। বিল্ডিংয়ে ভাইয়ের নাম পরিবর্তন করে জামাল প্লাজার স্থলে তাজমহল নামকরণ করে। জামাল উদ্দিনের কোটি টাকার বিল্ডিং আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হলে সাবরেজিষ্ট্রী অফিসসহ উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরবর্তীতে এই জাল দলিল দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মার্কেটের কিছু অংশ বিক্রির কথা বলে বায়নামা দলিল করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতে থাকে। যারা ক্রয় করার জন্য বায়নামার টাকা দিয়েছে তারা দলিল তল্লাশি করতে গিয়ে জানতে পারেন তার নামীয় দলিলটি জাল। তার হয়রানীর শিকার ভুক্তভোগীদের বিচার সালিশকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও সে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। গন্যমান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতারক তাজ উদ্দিনের দায়েরি একাধিক মিথ্যা মামলা আদালতে খারিজ হয়েছে।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply