সৈয়দ ছায়েদ আহমদ, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: ‘‘একটাই পৃথিবী, একটাই বাংলাদেশ’’ ‘‘চাই আইন ও নীতির কার্যকর প্রয়োগ ও সুরক্ষিত পরিবেশ’’ এই শ্লোগান নিয়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পালিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এ উপলক্ষ্যে রোববার সকাল ১১ টায় শ্রীমঙ্গল চৌমহনা চত্ত্বরে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), টিআইবি শ্রীমঙ্গলের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সনাক শ্রীমঙ্গল সভাপতি শিক্ষক দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে ও টিআইবি এরিয়া কো-অডিনেটর পারভেজ কৈরী’র সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সানক সদস্য শিক্ষক অয়ন চৌধুরী, সাংবাদিক সৈয়দ ছায়েদ আহমেদ, সমাজকর্মী নিতেশ সুত্রধর, সংবাদকর্মী এস কে দাশ সুমন প্রমুখ।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা র্দণীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) সভাপতি ও সনাক সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ নেসার আহমদ, সনাক সদস্য শাহ আরিফ আলী নাসিম, পরিমল সিং বাড়াইক, এনজিও সংগঠন এমসিডা’র সভাপতি মিজানুর রহমান আলমসহ সনাক, ইয়েস সদস্য, সংবাদকর্মী ও সুশীল সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজন।
বক্তারা বলেন, পরিবেশ সংক্রান্ত আইন ও নীতির কার্যকর প্রয়োগই পারে প্রকৃতির সাথে ভারসাম্য রেখে জীবনযাপন এবং বাংলাদেশের টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে। আর এজন্য প্রয়োজন পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ। যার মাধ্যেমে পরিবেশের জন্য টেকসই এবং সাশ্রয়ী ও বিকল্প উন্নত জীবন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা সম্ভব।
তাই বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২২ সামনে রেখে প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনায় শুদ্ধাচার নিশ্চিতে টিআইবি নিম্নোক্ত দাবিসমূহ উত্থাপন করেছে।
বন ও জলাভূমিসহ পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করার সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুসারে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটিয়ে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে;
পরিবেশ দূষণ রোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বচ্ছতার সাথে সম্পাদনে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে;
পরিবেশ সুরক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সকল পর্যায়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, আদিবাসী এবং নারীসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কার্যক্রম বাস্তবায়নে তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে;
সঠিক পরিকল্পনাসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে প্রণোদনা ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের উপর ‘কার্বন ট্যাক্স’ আরোপ করতে হবে;
বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালনির ব্যবহার বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে একটি স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করে প্রশমন বিষয়ক কার্যক্রম স্বচ্ছতার সাথে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে; এখাতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরসহ পরিবেশ রক্ষায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনসহ আইন প্রয়োগে সকল প্রকার ভয়, চাপ ও আর্থিক প্রলোভনের ঊর্ধ্বে থেকে দূষণের জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে;
বন, নদী, জলাশয় এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অবৈধ দখলের সাথে জড়িতদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে;
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের ক্ষতি রোধ এবং জীবন-জীবিকা ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ নির্মীয়মান কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো স্থগিত করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ কৌশলগত, সামাজিক ও পরিবেশগত সমীক্ষা সম্পাদন সাপেক্ষে অগ্রসর হতে হবে;
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে সকল উন্নয়ন কার্যক্রমে পরিবেশ সুরক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে; এবং
পরিবেশের জন্য টেকসই এবং প্রাত্যহিক জীবনধারণের জন্য সাশ্রয়ী ও বিকল্প ব্যবস্থা প্রবর্তনে পরিবেশ সুরক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রমে নাগরিক অংশগ্রহণ এবং শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে।#
Leave a Reply