কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানের আশপাশে বখাটেদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতকারী মহিলা ও স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের স্বাভাবিক যাতায়াতের মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
জানা গেছে, কমলগঞ্জ পৌর এলাকার সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দয়াময় সিংহ উচ্চ বিদ্যালয়, মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়, কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়, এএটিএম উচ্চ বিদ্যালয়, আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজ, কমলগঞ্জ সরকারি গণ মহাবিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে ইদানিং বখাটেদের উৎপাত চরম আকার ধারণ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে দলবদ্ধভাবে অবস্থান নিচ্ছে উঠতি বয়সি বখাটেরা।
তারা পথে ঘাটে ছাত্রীসহ মহিলাদের উত্ত্যক্ত করে আপত্তিকর মন্তব্য করছে। এতে করে শিক্ষার্থীসহ মহিলা পথচারীরা বিব্রতবোধ করছেন। লোক লজ্জায় কেউই এর প্রতিবাদ বা আইনশৃংঙ্খলা বাহীনির কাছে বিচার প্রার্থী হতে পারছে না। কোনো সচেতন মানুষ বখাটেদের প্রতিবাদ করে বা বাঁধা দিলে উল্টো প্রতিবাদকারীরা রোষানলে পড়তে হচ্ছে। বখাটেরা অনেক রাজনৈতিক দলের সাথেও সম্পৃক্ত অথবা কোন প্রভাবশালীর ছেলে রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে. কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন স্থানে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সবগুলোর প্রধান ফটকের সামনে বা আশপাশে বখাটেদের দৌরাত্ম্য মারাত্মক লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ করে ছাত্রীদের চলাচলের পথে বিভিন্নভাবে সমস্যা সৃষ্টি করছে বখাটেরা। নিরাপত্তার কথা ভেবে ছাত্রী ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকগণ এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না। এতে করে বখাটেদের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন ভুক্তভোগীরা। অপরদিকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্তকারী গ্রুপগুলো নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষেও লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু বখাটেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় দাপটের সঙ্গে রাস্তায় হৈ-হুল্লোড় করে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রী ও পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়।
স্কুলের সামনে দোকানপাট, বাসস্টেশন, সিএনজি স্টেশনসহ বিভিন্ন পয়েন্টের সামনে বসে বখাটে ছেলেরা আড্ডা জমায়। এমনকি স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের পিছু নিয়ে তাদের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যার কারণে স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা বিব্রতবোধ করছে। নাম প্রকাশে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বখাটেরা পিছু নিয়ে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অনেক ভয় করে। তাদের ছবি ও ভিডিও তুলতে গেলে ছাত্রীদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ারও হুমকি দেয় বখাটেরা।
কমলগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রীর অভিভাবক মুঠোফোনে জানান, আমার মেয়ে চা বাগান এলাকা থেকে গিয়ে স্কুলে পড়াশোনা করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ছুটির পর থানার পাশে নতুন ব্রিজের উপর মেয়েকে আটকিয়ে উত্যক্ষ করে এবং মোবাইল নাম্বার চায়। এমনিতে দীর্ঘদিন ধরে করোনার কারণে স্কুল বন্ধ ছিলো, কিন্তু স্কুল খুলে যাওয়ায় এখন বখাটেদের কারনে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান জানান, আমরা ইভটিজিং বন্ধে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করেছি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ছাত্রীরা যেন নির্ভয়ে স্কুল-কলেজে যেতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান।
Leave a Reply