কমলগঞ্জে কীটনাশকমুক্ত শীতকালীন সবজী চাষে সফল শিক্ষক শান্তু মনি কমলগঞ্জে কীটনাশকমুক্ত শীতকালীন সবজী চাষে সফল শিক্ষক শান্তু মনি – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখায় পৌর যুবদল নেতার মামলায় ২ যুবলীগ নেতা গ্রেফতার বড়লেখায় শিক্ষক ও সাংবাদিক মইনুল ইসলামের ইন্তেকাল : শোক প্রকাশ নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিটার মিনিবার নাইট ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন এফসি ডার্ক নাইট একজন মেহেদী হাসান রিফাতের গল্প : স্বপ্ন থেকে সাফল্যের পথে আত্রাইয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা : ১৪ টি যানবাহন জব্দ কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবার খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব “সেং কুটস্নেম” কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি আটক কুলাউড়ার হাজিপুর ইউনিয়নে জিপিএ-৫ ও এ গ্রেড পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

কমলগঞ্জে কীটনাশকমুক্ত শীতকালীন সবজী চাষে সফল শিক্ষক শান্তু মনি

  • বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ ::  প্রতি বছরের মতো এবারও নিজ উদ্যোগে সবজি চাষ করেছেন শিক্ষক শান্তু মনি সিংহ। সবজি চাষে ছেলের সঙ্গে ৬৫ বছর বয়সী রাজেশ্বরী সিনহা এ কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করেছেন।

ক্ষেতে করেছেন বাহারি ধরনের সবজি। গাছের ডালে দোল খাচ্ছে লম্বা লম্বা দেশি বেগুন,লাউ বেগুন, ফুলকপি, বাধাঁকপি, লাউ, আলু, ব্রোকলী, কাচাঁমরিচ, ফরাশ, লাইশাক,সরিষা,মুলা। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, সবজিগুলোর ভারে যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে গাছের ডাল। একেকটি বেগুনের গাছে ৩কেজি থেকে ৪কেজি। আবার ফুলকপি ও বাধাঁকপি আকারে বড় হওয়ায় সেগুলোর ওজন প্রায় সাড়ে ৩কেজি। অন্য সবজিগুলো তো আছেই। মা’কে সাথে নিয়ে শিক্ষক শান্তু মনি ভালোই চাষ করেছেন এসব সবজির। এখন আশা করছেন লাভের। সম্পূর্ন বিষমুক্ত (কীটনাশক) ছাড়াই এসব সবজির চাষ করেছেন। বাজারে নিতে হয়না সবজিগুলো। বাড়িতে এসে বিক্রিতারা নিয়ে যান। স্বাদ ও বিষমুক্ত থাকায় চাহিদাও অনেক।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় সরেজমিনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার তিলকপুর গ্রামে পূর্ব পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, ৩০শতক ফসলি জমিতে বাহিরী ধরনের চাষ করেছেন শিক্ষক শান্তু মনি। এর মধ্যে ৪পাঠে আলাদা করে চাষ করেছেন তিনি এসব সবজির। তবে একদম কিটনাশক ছাড়া গাছগুলো রোপন করেছেন। গাছগুলোর দিকে তাকালেই মন ছুঁয়ে যায়। সবজিগাছের পরিচর্যা করতে দেখা যায় ৬৫ বছর বয়সী রাজেশ^রী সিনহাকে, তিনি শিক্ষক শান্তু মনির মা।

শিক্ষক শান্তু মনি সিংহা জানান,‘আমি কমলগঞ্জের তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি। ১৭ বছর ধরে এ পেশায় আছি। আমার দাদা যাদব সিংহা কৃষিকাজে রাষ্ট্রপতি পুরুষ্কার অর্জন করেছেন। তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। দাদা আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছেন চাকরির পাশাপাশি কৃষিকাজ করে কিভাবে স্বাবলম্বি হওয়া যায়। তাই দাদার এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছি আমি। ভালো ফলন ও লাভ বেশি হওয়া এসব সবজি চাষ করছি। তবে পাখি ও পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে আলাদা যতœ নিতে হয়। গাছে হলুদ রংয়ের কাগজ দিয়ে মার্ক করে রাখলে পোকা এসে পড়ে না। ফসল ভালো উৎপাদন করা যায়।’

শিক্ষক শান্তু মনি সিংহা আরোও জানান, ‘৩০ শতক জমিতে তিনি আলাদা আলাদা করে চাষ করেছেন সবজিগুলো। ৫শতক যায়গায় করেছেন ফুলঁকপি,৫শতক জায়গায় করেছেন বাধাকপি,৫ শতক জায়গায় করেছেন আলু,৫শতক জায়গায় করেছেন দেশি বেগুন,৫শতক জায়গায় করেছেন মুলা, ৫শতক জায়গায় করেছেন কাচাঁমরিচ, ফরাশ, লাইশাক,লাউ,সরিষা। ফলনও ভালো হয়েছে এখন লাভের আশায় দিন গুনছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৩০শতক জায়গায় খরচ হয়েছে ৩৫হাজার টাকার মতো। প্রায় ২০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি। পুরা সবজি জমিতে আছে এখনো। আমার খরচের টাকা বাদে লাখখানি টাকা আয় হবে ধারনা করছি। শুধু বিক্রিই করছিনা এসবজিগুলো। আমাদের আত্মীয় স্বজন,পারাপর্শী,বন্ধু বান্ধব সবাইকে তাদের বাড়িতে দিয়ে থাকি আবার কেউ জমিতে এসে এসব সবজি যে যার মতো নিয়ে যাচ্ছেন। কোন ধরনের বিষ না দেওয়ায় সবাজিগুলো খেতে স্বাদও বেশি।’

শিক্ষক শান্তু মনি সিংহার মা রাজেশ^রী সিনহা বলেন,‘আমার শুশুর কৃষি কাজ করে রাষ্টপ্রতি শিকৃতি পেয়েছেন। কারন ভালো কাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায় এটাই বাস্তব। আমার শুশুরও তা পেয়েছেন। তারপর আমার স্বামী কৃষি কাজ করতেন। করে আমাদের সংসার চালাতেন। আমার স্বামী আমাদের মাঝে এখন আর নাই।’

তিনি বলেন,‘আমার ছেলে শিক্ষকতা করে। সে খুব সকাল ঘুম থেকে উঠে আমাকে সাথে নিয়ে আগে জমিতে যায়। সেখানে জমিতে কি প্রয়োজন আছে আমরা মা ছেলে মিলে পরামর্শ করে দেই। পরে ছেলে স্কুল টাইম হলে স্কুলে চলে যায়। আবার স্কুল থেকে এসে জমিতেই কাজ করে।’

পাশের গ্রাম থেকে সবজি কিনতে আসা আব্দুর রাজ্জাক রাজা বলেন, ‘বাজারে যেতে হয় না আমাদের সবজি আনতে এখানে অল্পমূল্যে বিষমুক্ত ভালো সবজি পাওয়া যায়। তাই এখান থেকে নিয়ে যাচ্ছি।’

এদিকে উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়ন থেকে আসা আলমগীর হোসেন বলেন ‘আমি রাস্তা হয়ে এদিকে যাচ্ছিলাম দেখলাম এখানে সবজি খেত। উনার দেখলাম বিক্রি করছেন তাই আমার বাড়ির জন্য ২টা ফুলকপি নিলাম, ১টা বাধাকপি নিলাম। দামও সস্তা খুব সুস্বাদু হবে আশা করছি।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজিত রায় বলেন, কমলগঞ্জে কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষে মাঠে প্রান্তরে অনেক সময় ব্যয় করছেন। জমির পরিচর্যার পাশাপাশি বীজতলা তৈরি, চারা উৎপাদন, রোপণের বিষয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষক শান্তু মনি সিংহ সবজী চাষের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews