এইবেলা, কমলগঞ্জ ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দলই চা বাগানে উপজেলা প্রশাসন, চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও মালিক পক্ষের যৌথ বৈঠক শেষে দ্রুততম সময়ে মামলা প্রত্যাহার ও বিতর্কিত ব্যবস্থাপককে বদলীর আশ্বাসে দীর্ঘ ৩৭ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার চা বাগান খুলেছে। বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দলই চা বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় আকস্মিক কর্তৃপক্ষ নোটিশ দিয়ে দলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছিল।
মালিক পক্ষের নোটিশে গত ২৮ জুলাই থেকে দলই চা বাগান দীর্ঘ ৩৭ দিন বন্ধ ছিল। এ নিয়ে গত ২৯ জুলাই থেকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগ তিন দফা বৈঠক, মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে ১৭ আগষ্টের বৈঠকের পরও দলই চা বাগান বন্ধ ছিল। এ নিয়ে শ্রীমঙ্গলস্থ শ্রম অধিদপ্তর কর্মকর্তার কার্যালয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পরও কোন লাভ হয়নি। সর্বশেষ গত বুধবার মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের পরামর্শে ও নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আবারও দলই চা বাগান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রীমঙ্গল এর উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান, কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান, দলই চা বাগান কোম্পানীর উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী, সহ সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, মনু-দলই ভ্যালী সভাপতি ধনা বাউরী, সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা, দলই চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নায়েক, সাধারণ সম্পাদক সেতু রায়সহ চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। শারিরীক অসুস্থতার জন্য বৈঠকে উপস্থিত না থাকলেও দলই চা বাগান কোম্পানির এজিএম খালেদ মঞ্জুর খান মোবাইল ফোনে শ্রমিকদের দাবী দাওয়া মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। তবে দলই চা বাগানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক মো. জাকারিয়াসহ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ব্যাপক আলোচনা শেষে বিতর্কিত দলই চা বাগানের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে বদলী ও চা শ্রমিকদের জন্য বন্ধকালীন মজুরী ও বাগান কতৃপক্ষের দায়েরকৃত মামলা দ্রুততম সময়ে প্রত্যাহারের আশ্বাস দেওয়া হয়। এর পর বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দলই চা বাগানের শ্রমিকরা দীর্ঘ ৩৭ দিন পর প্লান্টেশন এলাকায় চা পাতা উত্তোলন কাজে যোগ দেয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাম ভজন কৈরী বলেন, দলই চা বাগানের বিতর্কিত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামের বাগানে প্রবেশ না করা, চা শ্রমিকদের জন্য বন্ধকালীন মজুরি দেওয়া ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের নামে দায়েরকৃত মামলা দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রত্যাহারের আশ্বাস প্রদান করেন মালিক পক্ষ। এ অশ্বাসে সন্তোষ প্রকাশ করে দীর্ঘ ৩৭ দিন পর দলই চা বাগানের শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক দীর্ঘ ৩৭ দিন পর দলই চা বাগান খোলা ও চা শ্রমিদের কাজে যোগদানের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দলই চা বাগান মালিক পক্ষের দেওয়া আশ্বাস পূরণ হলে আর দলই চা বাগানে সমস্যা থাকার কথা নয়। তিনি জরুরী ভিত্তিতে দলই চা বাগানের শ্রমিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় শ্রম আইন লঙ্ঘন করে দলই চা বাগান কর্তৃপক্ষ। পরে তারা চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করে। পরদিন ২৮ জুলাই সকাল থেকে বেআইনিভাবে বন্ধ করে দেওয়া এবং বিতর্কিত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। ২২ আগস্ট রাতে দলই চা বাগান কোম্পানির এজিএম খালেদ মঞ্জুর খান বাদী হয়ে মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, চা শ্রমিক নেতাসহ ১৩ জনের নামে গতিরোধ করে মারধর, গাড়ি ভাঙচুর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply