বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখায় রিয়াজ উদ্দিন নামে এক নিরীহ ব্যক্তিকে খুন করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেল সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমন নামের ক্ষুদ্র ভাঙ্গারী ব্যবসায়ি। ঠান্ডা মাথায় রিয়াজকে খুন করে লাশের পাশে নতুন ম্যানিব্যগে মহিউদ্দিন নামে অপর এক ভাঙ্গারী ব্যবসায়ির পাসপোর্ট সাইজের ছবি রেখে সে পালিয়ে যায়। ভেবেছিল ওই ছবি দেখলেই পুলিশ মনে করবে মহিউদ্দিন হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে। তবে তার শেষ রক্ষা হয়নি।
চাঞ্চল্যকর রিয়াজ উদ্দিন (২৫) হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে র্যাব-১ এর সহযোগিতায় বড়লেখা থানা পুলিশ ঘটনার মুল হোতা সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমনকে (৩২) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম কর্মকর্তা) পারভেজ রানা ও বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান।
শুক্রবার সকালে আসামী ইমনকে বড়লেখা থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ইমন জানিয়েছে, লেনদেন সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরেই মঙ্গলবার রাতে রিয়াজ উদ্দিনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ধান ক্ষেতে লাশ ফেলে দিয়ে সে ঢাকায় চলে যায় এবং আত্মগোপন করে।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ দোহালিয়া গ্রামের মৃত ফরিদ আলীর ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (৩০) রাজমিস্ত্রীর কাজসহ দিনমজুরীর কাজ করে স্ত্রী ও মাকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রতুলি বাজারে ভাঙ্গারীর দোকানে বস্তা উঠানোর কাজ আছে বলে রতুলী বাজারের উদ্দেশ্যে সে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি না ফেরায় মা ও পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান পাননি। পরদিন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় কৃষকরা মাধবছড়ার পশ্চিমে ধানক্ষেতে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে রিয়াজ উদ্দিনের মা কনাবি বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে থানা পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও ওই ক্লুলেস হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান জানান, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া আলামতের সূত্র ধরে হত্যাকান্ডের মুল রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ তৎপরতা চালায়। ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে তথ্য প্রযুক্তি ও র্যাবের সহযোগিতায় প্রধান আসামীকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। থানায় এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই বাছাই ও এর পেছনে অন্য কারো সম্পৃক্ততা আছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
Leave a Reply