ফাগুয়া উৎসবে চা-শ্রমিকদের পূর্ণ বোনাস প্রদানের দাবি জানিয়েছে চা-শ্রমিক সংঘ ফাগুয়া উৎসবে চা-শ্রমিকদের পূর্ণ বোনাস প্রদানের দাবি জানিয়েছে চা-শ্রমিক সংঘ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
টানা খরার পর স্বস্তির বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরেছে চা বাগানগুলো কমলগঞ্জে গাছ কাটতে গিয়ে দিনমজুরের মৃত্যু কমলগঞ্জে ট্রাক্টর উল্টে ইট চাপায় নিহত-১ আহত-২ অবৈধ পথে অর্জিত সম্পদ বিক্রি করছেন নাদেল বড়লেখায় নিসচার উদ্যোগে ফিলিস্তিনে ইসরাইলী গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ বড়লেখায় সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় শিশু ভাতিজা হত্যার দায়ে চাচির যাবজ্জীবন কারাদন্ড ৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায়  বদলে গেছে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের চিত্র কমলগঞ্জে দুর্বৃত্তদের আগুনে কৃষকের সবজি বাগান পুড়ে ছাঁই : ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি কমলগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে ষাড় গরু বিতরণ

ফাগুয়া উৎসবে চা-শ্রমিকদের পূর্ণ বোনাস প্রদানের দাবি জানিয়েছে চা-শ্রমিক সংঘ

  • বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: চা-শ্রমিকদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ফাল্গুন মাসের মাসের দোল পুর্ণিমার সময় ফাগুয়া (লাল পূজা) উৎসবে প্রাপ্য উৎসব বোনাস সকল চা-বাগানে প্রদান করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে চা-শ্রমিক সংঘ। চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি রাজদেও কৈরী এবং সাধারণ সম্পাদক হরিনারায়ন হাজরা এক যুক্ত বিবৃতিতে অভিযোগ করেন চা-বাগান মালিকদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি এবং চা-শিল্পে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরির গেজেট (এস. আর.ও. নং ২৪৬-আইন/২০২৩) অনুযায়ী ফাগুয়ায় সকল চা ও রাবার-শ্রমিক উৎসব বোনাস পাওয়ার অধিকারী।
আগামী ১৪ মার্চ চা-শ্রমিকদের ফাগুয়া উৎসব শুরু হবে কিন্তু এবছর এখনো অধিকাংশ বাগানের চা-শ্রমিকরা ফাগুয়া উৎসব বোনাস পাননি, এমন কি এনটিসির বাগানগুলো, দেউন্দি টি কোম্পানী, রাজনগর, ফুলতলা, ইমাম-বাওয়ানী চা-বাগানসহ বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরিও নিয়মিত মতো পরিশোধ করা হচ্ছে না। সিলেটের বড়জান, কালাগুল, ছড়াগাঙ চা-বাগানের শ্রমিকদের তিন মাসের মজুরি ও ৬ সপ্তাহের রেশন বন্ধ রয়েছে। আবার শমসেরনগর, দেওছড়া, ডবলছড়া, দিনারপুর, ইছামতি চা-বাগানে ফাগুয়ায় উৎসব বোনাস প্রদান করা হলেও অনেক শ্রমিককে পূর্ণ বোনাস না দিয়ে আংশিক বোনাস দেওয়া হয়েছে, এনটিসির বাগানগুলোতেও অর্ধেক বোনাস হিসেবে ১,৮০০ টাকা প্রদান করা হবে বলে শ্রমিকদের জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রমআইন-২০০৬ (অদ্যাবধি সংশোধিত) এর ২(২ক) ধারা এবং বাংলাদেশ শ্রমবিধিমালা-২০১৫ এর ১১১(৫) বিধি অনুযায়ী সকল শ্রমিককে সমান হারে উৎসব বোনাস প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমন কি ২০২৩ সালের ১০ আগষ্ট চা-শিল্প সেক্টরে নিম্নতম মজুরির গেজেটে (এসআরও নং ২৪৬-আইন/২০২৩) অনুযায়ী উৎসব বোনাস সকল শ্রমিকের হারে প্রদান করার আইন আছে। কিন্তু প্রাপ্য উৎসব বোনাস ৩,৭১২ টাকার স্থলে কর্মে উপস্থিতি উপর নির্ভর করে চাতলাপুর, শমসেরনগর, দেওছড়া, কানিহাটি চা-বাগানের অনেক শ্রমিককে উৎসব বোনাস কম প্রদান হচ্ছে। চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির পরও দীর্ঘদিন যাবত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। বর্তমান মজুরির মেয়াদ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর উত্তীর্ণ হলেও নতুন করে মজুরি নির্ধারণ করা হয়নি। যার কারণে দৈনিক মাত্র ১৭৮.৫০ টাকা মজুরিতে বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতির বাজারে চা-শ্রমিকদের অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। তার উপর শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত করা হলে শ্রমিকরা কোথায় যাবে? চা-বাগান মালিকদের সাথে সম্পাদিত সর্বশেষ মজুরি চুক্তি (২৩ ডিসেম্বর ২০২৩) অনুযায়ী প্রতি বছর একজন চা-শ্রমিক ৫২ দিনের মজুরির সমপরিমান উৎসব বোনাস প্রাপ্য হবেন, যার ৬০ শতাংশ দুর্গা পূজায় এবং অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ ফাগুয়ায় পাবেন। সেই হিসেবে ফাগুয়ায় একজন শ্রমিক ৩,৭১২.৮০ টাকা উৎসব বোনাস পাবেন।
চা-শ্রমিক সংঘের নেতারা অবিলম্বে সকল চা ও রাবার শ্রমিকদের পূর্ণ বোনাস হিসেবে ৩,৭১২.৮০ টাকা প্রদান এবং যে সকল চা-বাগানে মজুরি বকেয়া আছে তা অবিলম্বে পরিশোধ করার দাবি জানান।
এছাড়াও চা-শ্রমিকনেতারা সুস্থভাবে বেঁচে থাকা ও উৎপাদনে সক্রিয় থাকার প্রয়োজনে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে ৬ সদস্যের পরিবারে ভরণ পোষণের খরচ হিসাব করে ২০২৩-২০২৪ মেয়াদের জন্য নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ এবং একটি পরিবারের সাপ্তাহিক প্রয়োজনের অনুপাতে চাল, আটা, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, চা-পাতাসহ পূর্ণ রেশন প্রদান, ভূমির অধিকার প্রদান, চা-শিল্পে নৈমিত্তিক ছুটি (বছরে ১০ দিন) কার্যকর ও অর্জিত ছুটি প্রদানে বৈষম্যসহ শ্রম আইনের বৈষম্য নিরসন করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মজুরি ও উৎসব বোনাস প্রদানে সকল অনিয়ম বন্ধ, শ্রমআইন মোতাবেক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান, বকেয়া মজুরিসহ নিয়মিত সকল চা-বাগানের শ্রমিকদের মজুরি-রেশন পরিশোধ, প্রতি মাসের পিএফ চাঁদা ফান্ড অফিসে জমা প্রদান এবং ৯০ দিন কাজ করলেই সকল শ্রমিককে স্থায়ী করার দাবি জানান। অন্যথায় চা-শ্রমিকরা বেঁচে থাকার তাগিয়ে ২০২২ সালের আগষ্ট মাসের আন্দোলনের শিক্ষা থেকে নতুন করে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে বাধ্য হবে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews