আল আমিন আহমদ :
ঈদুল আজহায় বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার সীমান্ত দিয়ে গবাদিপশু চোরাচালান ও চামড়া পাচার রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন (বিয়ানীবাজার)। শুক্রবার দুপুরে এই ব্যাটালিয়নের নবাগত অধিনায়ক লে. কর্ণেল আরিফ বড়লেখা, বিয়ানীবাজার ও জুড়ী উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে ব্যাটালিয়ন মিডিয়া বিফ্রিং রুমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, মাদক, মানব পাচার ও অস্ত্র পাচার প্রতিরোধ এবং আন্ত:সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবির চলমান নানা কার্যক্রম তোলে ধরেন। এসময় তিনি সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সীমান্তবাসী, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল আরিফ বলেন, ঈদের কয়েক দিনের ছুটিতে দেশের জনগণ বিশেষ করে তার ব্যাটালিয়নের আওতাধীন এলাকার লোকজন যাতে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারেন সেজন্য বিজিবি সীমান্তে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। কোরবানির চামড়া যাতে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার না হয় সেজন্য বিজিবি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সীমান্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিজিবি অধিনায়ক আরো বলেন, বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন (বিয়ানীবাজার) এর আওতাধীন প্রায় ১১৪ কিলোমিটার সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে গত প্রায় দেড় মাসে পুরুষ, নারী ও শিশুসহ ৩১৬ জন অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিককে বিএসএফ পুশইন করেছে। পুশইনকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় বিজিবি আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাম ঠিকানা নিশ্চিত হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে যথাযথ আইন অনুসরণপূর্বক বিয়ানীবাজার, বড়লেখা ও জুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। সাম্প্রতিককাল সীমান্তে বিএসএফের পুশইন প্রতিরোধে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি সীমান্তবর্র্র্তী জনসাধারণকে সচেতন ও সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে থাকতে পরামর্শ দিয়েছে। পুশইন ঠেকাতে বিজিবিকে সহায়তা প্রদান করতে স্থানীয় আনছার ও গ্রামপুলিশদের টর্চলাইটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রদান করা হয়েছে। বিএসএফ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পুশইন করায় বিজিবি বিএসএফের সাথে সেক্টর পর্যায়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ, বিওপি/ক্যাম্প কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক এবং ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।
লে.কর্ণেল আরিফ বলেন, সীমান্ত এলাকার প্রতি ইঞ্চি সীমান্ত সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকার শান্তি, নিরাপত্তা ও অপরাধমুক্ত পরিবেশ বজায়ে স্থানীয় জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো সন্দেহজনক ব্যক্তি বা তৎপরতা পরিলক্ষিত হলে তিনি স্থানীয় জনসাধারণকে দ্রুত বিজিবিকে অবহিত করার আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বাস করেন সীমান্তবাসীর সহযোগিতাই বিজিবির সবচেয়ে বড় শক্তি।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, বড়লেখা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তরের বড়লেখা প্রতিনিধি আব্দুর রব, জুড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন, বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তরের বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি সুয়াইবুর রহমান স্বপন, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক জালালাবাদের বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি তোফায়েল আহমদ, হারিছ মোহাম্মদ, সাংবাদিক আল আমিন আহমদ, মনিরুল ইসলাম, সমকাল প্রতিনিধি আহমদ ফয়সল, সাংবাদিক মস্তফা উদ্দিন।
Leave a Reply