বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখার মুহাম্মদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার চারতলা ভিত বিশিষ্ট চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ ১৮ মাসে সম্পন্ন করার চুক্তি করলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মেয়াদের অতিরিক্ত ৫০ মাসেও তা সম্পন্ন করেননি। এতে ভবন সংকটে কয়েক বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ ও স্বাভাবিক পাঠদানে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসির অভিযোগ একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ যথাসময়ে ঠিকাদার সম্পন্ন না করার ব্যর্থতার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানা গেছে, ‘নির্বাচিত মাদ্রাসা সমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বড়লেখা উপজেলার মুহাম্মদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় চারতলা ভিতের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ১৮ মাসে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের চুক্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ঠিকাদার ভবনের ভিত স্থাপন করে দীর্ঘদিন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন। সর্বশেষ গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর দ্রুত কাজ সম্পন্নে লিখিত তাগিদপত্র প্রদান করেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রতীশ চন্দ্র সেন।
রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একাডেমিক ভবনের চারতলার ছাদ ঢালাই ও কয়েকটি কক্ষের আংশিক দেওয়াল নির্মাণ ব্যতিত ফ্লোর, দরজা-জানালা, গ্রীলের কাজসহ অনেক কাজ এখনও অসমাপ্ত। নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের ধীর গতির কারণে আরো ছয় মাসেও ভবনটির শতভাগ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন নিয়ে ভোক্তভোগিরা শঙ্কিত। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলিম উদ্দিন জানান, মাদ্রাসাটি দাখিল, আলিম ও ফাজিল পরীক্ষার উপজেলার মধ্যে একমাত্র সেন্টার মাদ্রাসা। পাবলিক পরীক্ষার সময় ভবন সংকটের কারণে মারাত্মক ভোগান্তি পোয়াতে হচ্ছে। এছাড়া মাদ্রাসার স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। এসব বিবেচনা করেই সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ভবনটি দিয়েছিল। ২০২১ সালের জুনের মধ্যেই ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে ৪ বছর ধরে নানা দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন। এব্যাপারে ইতিপূর্বে একাধিকবার তিনি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদনও করেন।
ভবন নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা শিক্ষা প্রকৌশলের উপ-সহকারি প্রকৌশলী নয়ন চন্দ্র দাস জানান, ঠিকাদার ব্যক্তিগত নানা সমস্যা দেখিয়ে কয়েকবার মেয়াদ বর্ধিত করেছেন। সর্বশেষ আগামি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ সম্পন্নের চূড়ান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে কাজ সম্পন্ন না করলে চুক্তি বাতিল করা হবে।
Leave a Reply