কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের টাকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের টাকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু বড়লেখায় আস সুন্নাহ জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গোলটেবিল বৈঠক বড়লেখায় দিনদুপুরে ছিনতাই- সিলেট থেকে ২ ছিনতাইকারি গ্রেফতার : লুন্ঠিত টাকা ও মোবাইল উদ্ধার জুড়ীতে সরকারি বরাদ্দের সাথে ব্যক্তিগত অর্থ যোগ করে ইউপি সদস্যের ড্রেন নির্মাণ মাধবকুণ্ডে ছড়ায় অপরিকল্পিত দেওয়াল নির্মাণে ভাঙ্গন হুমকিতে ১০ খাসিয়া বাড়ি কমলগঞ্জে পূজা উদযাপন পরিষদের বৃক্ষরোপন কুলাউড়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাছের চারা বিতরণ আত্রাইয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা পেলো স্কুল ব্যাগ আত্রাইয়ে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের টাকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

  • সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::

সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় মাথাপিছু ৬ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার উপকারভোগীর মধ্যে এই টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তালিকায় নাম দিয়েও কোনো পরিবার পায়নি টাকা, আবার একই পরিবারের তিন, চারজনের নামে বিকাশে টাকা এসেছে। এই টাকা বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কমলগঞ্জ থানায় পৃথক অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার ২২টি চা বাগানে ৭ হাজার শ্রমিকের নামে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা প্রাপ্তির জন্য বাগান পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের ভোটার আইডি কার্ডের কপি ও বিকাশ নাম্বার তালিকাভূক্ত করে সমাজসেবা অফিসে জমা দেন। তাদের জনপ্রতি ৬ হাজার হারে বিকাশে টাকা প্রদান করা হয়। তালিকায় কেউ কেউ তাদের নিজেদের পরিবারের স্বামী, স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোনের নাম ও বিকাশ নাম্বার জমা দিয়েছেন। আবার অনেক নিরীহ চা শ্রমিক পরিবার সদস্যের নাম ও বিকাশ নাম্বার স্থান পায়নি। এছাড়াও একজনের আইডি কার্ডের তথ্য দিয়ে পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদকের ছেলের বিকাশে টাকা নেয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের এই টাকা বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে শ্রমিকরা গতকাল রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়াও শমশেরনগর বাগানের শ্রমিক নেতা গোপাল কানু শ্রীকান্তের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাগানের নারী শ্রমিক সবিতা রেলী।
অভিযোগ করে শমশেরনগর চা বাগানের শ্রমিক গোপাল গোয়ালা, রিশু বাগতি, নিলু রাজভর, জগদিশ বাউরী, বাবুল রেলী বলেন, চা বাগনের সাধারণ শ্রমিকদের নাম, ভোটার আইডি কপি নিয়ে কতিপয় নেতারা দুর্ণীতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা ইউএনও সাহেবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
শমশেরনগর চা বাগানের বড়লাইনের শ্রমিক রামাকান্ত যাদব বলেন, ‘তালিকায় আমার নাম ও ভোটারআইডি নাম্বার ঠিক আছে। টাকা আমি পাইলাম না। বিকাশ নাম্বার আমার নয়। আমি মেম্বাররে কইলাম আমার টাকা পাইলাম না।’ একই বাগানের শ্রমিক পারতালি তেলেঙ্গা, আদমটিলার শ্রমিক দুলাল শীল, রবিদাস টিলার প্রিতী পাল বলেন, আমাদের নাম, আইডি ও বিকাশ নাম্বার নিয়ে তালিকায় নাম দেয়া হয়েছে। এরপরও আমরা টাকা পাইনি।
বাগানের ভজনটিলার শ্রমিক শিমুল লোহার বলেন, ‘অন্যের নামে আমার বিকাশে টাকা আসে। পরে আমার পাশের বাড়ির বাসিন্দা জয়প্রকাশ রাজভর এসে আমার মোবাইল নিয়ে টাকা তুলে আমাকে ২ হাজার দিয়ে বাকি টাকা সে নিয়ে গেছে।’ বড় লাইনের বাসিন্দা ছবি লোহার জানান, আমার আইডি ও নামে ৬ হাজার টাকা ডুকে নির্মল ছত্রির বিকাশে। এটি জানার ১৫ দিন পরে আমাকে ৪ হাজার টাকা দেয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপকারভোগী তালিকায় শমশেরনগর চা বাগানের শ্রমিক নেতা নির্মল দাস পাইনকা, তার স্ত্রী. মেয়ে ও তার আপন ভাইয়ের স্ত্রী, ভাই, বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও ৩ মেয়ের নাম। একইভাবে শমশেরনগর চা বাগান পঞ্চায়েত সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু, স্ত্রী রিনা কানু, ভাইয়ের বউ রিপা কানু, বোন হেমন্তি কানু, ভাই হৃদয় প্রকাশ কানু, ভাইয়ের স্ত্রী শিপা কানুর নাম ও বিকাশ নাম্বার। এছাড়াও চা শ্রমিক সুরনারায়ন রেলী সরাইয়ার পরিবারের ৮ জনের নাম ও বিকাশ নাম্বার পাওয়া যায়।
শমশেরনগর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু গোপাল বলেন, ‘তালিকা দিয়েছেন অনেকেই। যে যেভাবে তালিকা দিয়েছে, সেভাবে টাকা আসছে। আমার ছেলের বিকাশে যার টাকা আসছে, সে-ই আমার ছেলের নাম্বার দিয়েছে। আমার পরিবারে দু’জনের নামে টাকা এসেছে। ভাইয়েরা তো আলাদা পরিবার। তারাও তো প্রাপ্য।’
এব্যাপারে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালী কমিটির সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা বলেন, ‘আমার জীবনে এভাবে কখনো হয়নি। তবে অসুস্থতায় চিকিৎসার কথা বলেছিলাম। তাই পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ আমার পরিবারের তালিকা দিয়েছে। এজন্য আমি খুবই দু:খিত।’
কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ইউসুফ মিয়া বলেন, এধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর কয়েকটি বাগানের অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এরকম কিছু ঘটতে পারে বলে আগেই আমি বারবার সতর্ক করেছি। সমাজসেবা অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছি। এবিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews