এইবেলা, কমলগঞ্জ ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমুহে মানা হচ্ছে না মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ভর্তির নীতিমালা। করোনাকালীন সময়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকার পরও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ প্রায় দ্বিগুণ ফি আদায় করা হচ্ছে।
ফলে নিম্নআয়ের পরিবার সদস্যরা নতুন ক্লাসে ভর্তির জন্য হিমশিম খাচ্ছে। আবার অর্থাভাবে কেউ কেউ ঝরে পরছে। অভিভাবকসহ উপজেলার বিদ্যালয় সমুহে শিক্ষকদের সাথে আলাপকালে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত গত বছরের ১৮ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি ছাড়া অন্যকোন ফি আদায় করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এতে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকূল্যে মফস্বল এলাকায় ৫শ’ টাকা, পৌর (উপজেলা পর্যায়ে) এলাকায় ১ হাজার ও জেলা সদরের পৌর এলাকায় ২ হাজার টাকার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বেশি টাকা নেয়া যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়। তবে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি উপেক্ষা করে করোনাকালীন সময়েও কমলগঞ্জ উপজেলার মফস্বল এলাকার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা আদায় করা হচ্ছে। সেশন চার্জ সহ সর্বসাকূল্যে ৫শ’ টাকা বলা হলেও তারা ভর্তি ফি হিসাবে সাড়ে ৭শ’ থেকে সাড়ে ১১শ’ টাকা হারে আদায় করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
মুন্সীবাজারে কালিপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় ১১শ’ ৫০ টাকা, শমশেরনগর এ.এ.টি.এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৯শ’ ৫০ টাকা, পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয় ৯শ’ টাকা, পদ্মা মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় ৭শ’ ৭০ টাকা, তেতইগাঁও রশীদ উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় ৭শ’ ৫০ টাকা হারে আদায় করা হচ্ছে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দাবি বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষকদের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন খাতে বেশকিছু খরচ রয়েছে। এসবের জন্য ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই হারে ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে।
শমশেরনগর এ.এ.টি.এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির ধর, হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সালাহউদ্দীন তরফদার বলেন, ভর্তিতে আমরা ৯শ’ ৫০ টাকা হারে নিচ্ছি। আহমদ ইকবাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫শ’ টাকা ও অন্যান্য খাত মিলিয়ে ৬শ’ ৫০ টাকা নিচ্ছি। পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়েজ আহমদ বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ৯শ’ টাকা হারে ভর্তি ফি নিচ্ছি। মুন্সীবাজার কালীপ্রশাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের খরচের জন্য আনুষঙ্গিক খাত মিলিয়ে ১১শ’ ৫০ টাকা হারে আদায় করছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন্নাহার পারভীন বলেন, বিদ্যালয় সমুহে বিভিন্ন খাতে খরচ করতে হয়। সেজন্য কমিটি সমুহের সিদ্ধান্তে ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে। তবে বাড়তি ফি আদায় বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, অতিরিক্ত ফি না নেয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বলে দিয়েছি। তাছাড়া ভর্তির সময়ে নির্ধারিত ফি এর বাইরে কোন খাতে টাকা নেয়া হলে পৃথক রসিদ দিয়ে ও অভিভাবকদের বুঝিয়ে টাকা নিতে হবে। অন্যতায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#
Leave a Reply