চালডাল চাই না : নদী ভাঙন ঠেকান! – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ফুলবাড়ীতে বিজিবি’র অভিযানে মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার সহকারি শিক্ষকদের সাটডাউন- বড়লেখায় কক্ষের তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ালেন অভিভাবকরা কুলাউড়ার মুরইছড়া  সীমান্তে  ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফের গুলিতে  যুবক নিহত কুলাউড়ায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের বার্ষিক টাউন হল মিটিং কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে হবে- ইউএনও মহিউদ্দিন বড়লেখায় প্রধান শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার

চালডাল চাই না : নদী ভাঙন ঠেকান!

  • মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০

Manual1 Ad Code

আবীর আকাশ ::

নদীভাঙ্গা মানে ভূমি ভেঙে নিয়ে বা গুলিয়ে পানির সাথে মিশিয়ে নেয়া। মাটি ও পানি মিশ্রিত পানি চলতি পথে ওজন বেড়ে গেলে সুদূর কোথাও খসিয়ে দেয় আর এতে করে ক্রমান্বয়ে পলির আস্তরণ পুরু হয়ে দ্বীপ জেগে উঠে। এই দ্বীপ ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়ে বিস্তীর্ণ চরে পরিণত হয়। নদীভাঙ্গা মানে নদী ভেঙে যাওয়া নয়, নদী ভূমি ভেঙে নেয়া।

কথায় আছে -‘ আগুনে পুড়লে কিছু থাকে, নদী ভেঙ্গে নিলে কিছুই থাকেনা। ‘নদী সর্বগ্রাসী হয়, সর্বনাশী হয়, সর্ব ত্যাগী হয়। নদী কখনো সুখবর নিয়ে আসে না, অভিশপ্ত, দীর্ঘশ্বাস আর যন্ত্রণা নিয়ে নদী খুব ধীরে ধীরে প্রতিটি ঢেউয়ের ঘাড়ে চেপে ধ্বংস নিয়ে লোকালয়ে হানা দেয়। বিষাক্ত সর্পের মত ছোবল মেরে ভূমি কেড়ে নিয়ে মানুষের স্বপ্ন ভেঙে তছনছ করে দেয়।

বাংলাদেশে প্রতিবছরই বিস্তীর্ণ এলাকা নদীভাঙ্গনের শিকার হয়। প্রতিবছর এভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয় আর ঘরবাড়ি, ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় অসংখ্য মানুষ। এ বছরও জুন মাস থেকেই অনেকগুলো জেলায় নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

Manual6 Ad Code

লক্ষ্মীপুরের সদরের চররমনী,চরবংশী, কমলনগর উপজেলার চরকালকিনী,চর লুধুয়া ঘুরে দেখা যায় ভয়ঙ্কর নদী ভাঙন। বিস্তৃর্ণ চরচরাঞ্চল, বাড়িঘর, গাছপালা নদীতে ভেঙ্গে পড়তে দেখা গেল। এমনো দেখেছি একটি বাড়ি যখন নদীতে পড়ছে, সেটির মালিকরা তখনো বাড়িটি থেকে ইটকাঠ খোলার চেষ্টা করছিলেন।

মোহাম্মদ আলী নামের একজন জানালেন প্রথমবার তাঁর নিজের কয়েক বিঘা জমিসহ বাড়িঘর নদীতে তলিয়ে যায়।এ নিয়ে তার বাড়ী ৭ বার ভাঙনের মুখে পড়ে।

অপর ভাই হযরত আলী বলছিলেন , ১৯৮৮ সাল থেকেই তিনি ভাঙনের মুখোমুখি হচ্ছেন। সেই থেকে একের পর এক নদী ভাঙনে পড়ে বার বার তার ঘর বদল করতে হয়েছে। এরপর থেকে নিঃস্ব আলী অন্যের জমিতেই বসবাস করেন।

Manual7 Ad Code

এক সপ্তাহ আগে নিজের বাড়ী হারিয়েও নদী পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাসিনা খাতুন। মেঘনার পাড়ে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি হাত দিয়ে দেখালেন, ওই যে দুরে যেখানে জল পাক খাচ্ছে, সেখানেই ছিল তার বাড়ী। গাছপালা, গোয়ালঘর ছিল, কিন্তু এখন আর তার কিছুই নেই।

তিনি বলছিলেন, দুইমাস ধরেই নদী একটু একটু করে ভাঙ্গতে শুরু করে। বাড়ির কাছাকাছি চলে আসায় গত বৃহস্পতিবার তিনি ঘর ভেঙে সরিয়ে নেন। শুক্রবারই তার ভিটেমাটি নদীতে তলিয়ে যায়। নতুন বসতি করাও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানালেন কয়েকজন। নদীতে নিজের ঘরবাড়ি জমিজমা হারানোর পর, নিম্নআয়ের বেশিরভাগ মানুষই ঢাকা ও বড় শহরগুলোতে পাড়ি জমায়।

অনেকেই আবার অন্যের জমি বছর ভিত্তিতে ভাড়া নিয়ে, ঘর তুলে বসবাস করেন। কিন্তু এখন সেসব জমি ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে বর্ষার পানি উঠে থাকায় তাদের পক্ষে বসতি করাও সম্ভব হচ্ছে না। অন্যসময়ের তুলনায় জমির ভাড়াও এখন অনেক বেশি বলে জানালেন কয়েকজন অসহায় নারী।

রেজিয়া বেগম নামের এক বৃদ্ধা মহিলা জানালেন তার কষ্টেসৃষ্টে বেঁচে থাকার কথা।তিনি বলেন নতুন করে বাড়ি করার জন্যে একজনের কাছে জমি ভাড়া করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে প্রতি ‘করা’র (প্রায় দুই শতাংশ) জন্য ছয়শ করে টাকা চাওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ তার বাড়ি করার জন্যে বছরে পাঁচহাজারের বেশি করে টাকা দিতে হবে। তাই সেখান থেকে ফিরে এসে বিলের মধ্যে তাঁর খুলে আনা ঘরটি রেখেছেন। কিন্তু সেখানেই এখন পানি জমে আছে। তাই বাধ্য হয়ে স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলের নীচতলায় ফ্লোরে থাকছেন।

তিনবছর ধরেই মেঘনার এই অংশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা ভাঙতে শুরু করেছে। নানা চেষ্টার পর জেলার রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার শহরটি রক্ষা করা গেলেও এখানে চিত্র একেবারেই উল্টো। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইসমাইল মোল্লা বলেন, এই এলাকার ভাঙ্গন ঠেকাতে কখনোই কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

নবীগঞ্জ এলাকার স্থানীয় আবুল কাশেম মাতাব্বর বললেন, ‘‘নদীর ভাঙ্গনের বিষয়ে আমরা উপজেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসনসহ সবাইকে জানিয়েছি। কিন্তু এই নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে কখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেটা আমি কখনোই দেখিনি। আমার মনে হয়না, এই এলাকারও কেউ কখনো দেখেছে। ’’

ইতোমধ্যে চারদশকে প্রায় (কমবেশ)দেড় লাখ হেক্টর জমি নদীতে হারিয়ে গেছে।প্রতিদিনই যে হারে নদী ভূমি গ্রাস করছে তাতে আগামী চার দশকে লক্ষ্মীপুর জেলা মানচিত্র আর ইতিহাসে ঠাঁই পাবে।

কয়েক দশক ধরেই সবচেয়ে বেশি ভাঙ্গন প্রবণ এলাকা কমলনগর উপজেলার চরকালকিনী, লুধুয়া,চররমনী,।চররমনী গ্রাম রক্ষা বাঁধ বেড়ি ইতোমধ্যে ছিঁড়ে গেছে কয়েক জায়গায়। আবার রায়পুরের চরবংশী এলাকার মোল্লার হাট, পানি কাটা নদী ভাঙন তীব্র।

চর ভৈরবী থেকে রামগতি পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাতেও প্রচুর নদী ভাঙ্গছে। রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, কমলনগর,রামগতি এর মধ্যে রয়েছে। আবার মেঘনার ক্ষেত্রে একটা ব্যতিক্রমী বিষয় রয়েছে যে, তার একটা মুল প্রবণতা আছে পূর্ব দিকে সরে যাওয়ার, যেটা এখনো রয়েছে।এ কারনেই লক্ষ্মীপুর জেলা ভয়ানক হুমকির মুখে পড়েছে।

Manual1 Ad Code

বাংলাদেশে অনেকগুলো নদীরেই ভাঙ্গন প্রবণতা থাকলেও, মূলত পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদীতেই সবচেয়ে বেশি ভাঙ্গনের ঘটনা ঘটে। গত চারদশকে এসব নদীতে বাংলাদেশের দেড় লাখ হেক্টরের বেশি জমি বিলীন হয়েছে।

একটি গবেষণার উদাহরণ টেনে বলতে হয়, ‘‘বাংলাদেশে সব মিলিয়ে প্রতিবছর প্রায় ছয় হাজার হেক্টর জমি নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে। সত্তরের দশক থেকে স্যাটেলাইটের ইমেজ পরীক্ষা করে তারা নদীগুলোর তখনকার অবস্থা আর এখনকার অবস্থা বিচার করে দেখতে পেয়েছিল যে, গত চার দশকে বাংলাদেশের প্রধান তিনটি নদীতে দেড় লাখ হেক্টর জমি হারিয়ে গেছে। আর ফেরত পাওয়া গেছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার হেক্টর জমি। সেই হিসাবে বাংলাদেশ নদীতে একলক্ষ হেক্টর জমি হারিয়েছে। ’’

এখানেও একটি পার্থক্য রয়েছে যে, নদীতে যেসব জমি হারিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো কিন্তু উর্বর জমি, রাস্তা ঘাট, স্কুল কলেজ বাড়িঘর রয়েছে। কিন্তু যে জমি উঠছে, সেটাও ব্যবহার উপযোগী হতে আরো অনেক বছর দরকার হবে।’
তাদের হিসাবে, শুধুমাত্র এই বছরেই নদী ভাঙনে ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে।

ছোটছোট নদীগুলোর ভাঙন ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ কিছুটা সক্ষম হলেও, প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি সমন্বিত পরিকল্পনা আর বরাদ্দের অভাবে বড় নদীর ক্ষেত্রে উদ্যোগগুলো সফল হয়নি।

লক্ষ্মীপুরে কমলনগর মেঘনা পাড়ে কয়েকটি পাকা, আধাপাকা বাড়ি ভেঙ্গে ফেলার কাজ চলছে। । কারণ নদী মাত্র কয়েকগজ দুরেই পৌঁছে গেছে। তাই গ্রামবাসীরা নিজেরাই নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ইটকাঠ রক্ষার চেষ্টা করছেন। আশেপাশে বড়বড় গাছগুলোও কেটে কেটে ট্রাকে তোলা হচ্ছে। গত একমাসে এই এলাকার চারটি গ্রাম নদীতে তলিয়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানালেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব খলিফার ঘরবাড়ি, বাবা দাদার কবরস্থান কয়েকদিন আগেই মেঘনায় তলিয়ে গেছে। প্রতিদিন এসে তিনি অথৈই পানির দিকে তাকিয়ে নিজের বাড়ির স্থানটি চেনার চেষ্টা করেন।

মেঘনা নদীর বুকে হাত দেখিয়ে আইয়ুব খলিফা বলছিলেন, ”ওই যে ওইখানে আমার বাড়ি ছিল। চল্লিশ বছর আগে এ বাড়িটি আমরা করেছিলাম। কিন্তু এখন আর তার কিছুই নেই। তারও সামনে আমাদের আরেকটি বাড়ি ছিল। সেটি একমাস আগে নদী নিয়ে গেছে।”

অনেক বছরের মধ্যে এই এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আর যেকোনো সময় বাড়িঘর হারানোর আতংকে আছেন খলিলুর রহমান।

‘‘নদী যে এত কাছাকাছি চলে আসবে, তা কারও কল্পনায়ও ছিল না। আমাদের বাড়ি এখনো ভাঙ্গনের শিকার হয়নি। কিন্তু নদী দুই আড়াইশ গজ দুরে রয়েছে। তাই আমরাও প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভয়ে থাকি, নদী পাড়ে এসে বসে থাকি। কারণ কখন কোনদিকে নদী যাবে, তা বোঝা যায়না।’’

Manual4 Ad Code

তাদের দাবি, তাদের জন্য সরকারি কোন রিলিফের দরকার নেই, বরং কর্তৃপক্ষ নদী ভাঙ্গন ঠেকানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। বলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নাসির আহমেদ।

নাসির আহমেদ বলছেন, ‘‘ আপনি এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন, এখানে ২৪ ফুট রাস্তা ছিল, রাস্তার দুইপাশে বাড়িঘর ছিল। ছোট বড় অনেকগুলো খাল ছিলো এখানে, আজ একটা খালও নেই। সেই গ্রামের পর ছিল আমাদের জমি, সেটার পরে ছিল নদী। এই পুরো জায়গাটি গতবছর আর এ বছর মিলিয়ে ভেঙ্গে গেছে। ’’

এরকম আরো সাধারন জনতা বলেন , ‘‘আমরা সরকারের কাছে চাল ডালের মতো কোন সাহায্য চাই না। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি, নদী ভাঙ্গন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। বিশেষ করে, নদীর ওই কোনাটা কেটে দেয়া হোক। তাহলেই আমাদের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বেঁচে যাবে। তাহলেই আমরাও বেচে যাবো।’’

গুরুত্বের ভিত্তিতে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা। রামগতি, কমলনগর, চররমনী, চরবংশী নদী ভাঙ্গন পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীগুলোয় ভাঙন এবং তার প্রতিরোধের কাজ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। অনেক স্থানেই তারা সিমেন্টের ব্লক, বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, “লক্ষ্মীপুরে নদী ভাঙ্গন এতটাই ব্যাপক যে, তাদের পক্ষে তা পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব নয়। তাই তারা চেষ্টা করছেন গুরুত্বপূর্ণ শহর ও স্থাপনা রক্ষা করার।”

ফারুক আহমেদ বলছেন, ‘‘প্রতিবছরই নদী ভাঙ্গছে। এখন আমরা দুর্বল স্থানগুলো সনাক্ত করে করে সেখানে প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ দ্বারা আমরা নদীতীরগুলোকে শক্ত করার চেষ্টা করছি।’’

কিন্তু অনেক স্থানেই নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সেটা কেন জানতে চাইলে ফারুক আহমেদ জানালেন, তারা প্রায়োরিটি ভিত্তিক এলাকাগুলো সনাক্ত করে কাজ করছেন।

তিনি বলছেন, ‘‘বিষয়টি হলো গুরুত্বের। বাংলাদেশে নদী ভাঙ্গন এতো বেশি হয় যে, অর্থ ও আমাদের সামর্থ্য বিবেচনায় কোনটা আগে, কোনটা পরে, সেরকম করে কাজ করতে হচ্ছে । পদ্মা, মেঘনা, যমুনার সব তীর রক্ষা করা বিশাল কাজ, এটা চাইলেও সম্ভব না। এ কারণে কোন কোন এলাকায় আগে কাজ হচ্ছে, কোথাও পরে। আমার চেষ্টা করছি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, শহরগুলো আগে রক্ষা করার। তবে সব জায়গাতেই আমাদের কাজ করার ইচ্ছা আছে।’’

নদী ভাঙ্গন ঠোকানোর খাতে এ বছর দুই হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, পানির নীচের এই উন্নয়ন কাজেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়ে থাকে। তবে তা নাকচ করলেন কর্মকর্তারা।

নদী পাড়ের মানুষেরা গভীর রাতেও বাড়িঘর সরানেরা কাজে ব্যস্ত থাকে। তারা চাইছেন, নদী নিয়ে যাবার আগেই যতটা সম্ভব পরিবারের জিনিসপত্রগুলো রক্ষা করতে।নদী ভাঙনে মতো অনেকের চোখে শূন্যতা, কারণ সামনে কি রয়েছে, তা তাদের কারোই জানা নেই।

আশায় বুক বেঁধে অনেকেই বলেন, “রামগতির আলেকজান্ডার বাঁধ সেনাবাহিনীকে দিয়ে বাঁধানোর ফলে বাঁধ টিকে গেছে। আলেকজান্ডার শহর রক্ষা পেয়েছে।নদী চলার পথ পরিবর্তন করে নিয়েছে। এতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা সুবিধা নিতে পারেননি বলে কমলনগর হাজির হাট এলাকার মাতাব্বর হাটে বরাদ্দকৃত বাঁধ নারায়নগঞ্জের ঠিকাদার দ্বারা করোনার ফলে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার আগেই নদীতে ভেঙে গেছে। কারন লুটপাট করে সরকারী টাকা রাজনৈতিক ও প্রকল্পের সাথে যুক্ত নোংরা মানুষগুলো নিয়ে যাওয়ায় কাজের মান খুবই নিম্মমানের হয়েছে।”

সদরের চররমনী এলাকায় নদী ভাঙন ঘুরে দেখা যায়,প্রায় দু’শ গজ জেগে ওঠা চর কেটে পানির প্রবাহ সোজা করে দিলে পানি আঘাত এসে গ্রামে লাগে না। শত শত একর জমি ভেঙে গেছে শুধু মাত্র পানি ভেসে ওঠা চরে বাধা খেয়ে মতির হাটের উত্তরে চররমনীতে গিয়ে আছড়ে পড়ে।এতে বাড়ীঘর, চরচরাঞ্চল বেড়ী ভেঙে গেছে।জরুরী ভিত্তিতে জেগে ওঠা চরের মাত্র দু’শ গজ কেটে পানির প্রবাহ উত্তর দক্ষিন সোজা করে দিলেই রক্ষা পাবে হাজার হাজার পরিবার, জমি ও ঘরবাড়ী।

লেখক: কবি প্রাবন্ধিক কলামিস্ট ও সাংবাদিক।
সম্পাদক: আবীর আকাশ জার্নাল।

abirnewsroom@gmail.com

এইবেলা/জেএইচজে

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

Deprecated: Function WP_Query was called with an argument that is deprecated since version 3.1.0! caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!