ষ্টাফ রিপোর্ট ::
শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের ডাকা সালিসীদের ভয়ে সালিস বৈঠকের একদিন পূর্বেই সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে শাহীন আলম (২৫) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন।
সোমবার দুপুরে নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
নিহত শাহীন উপজেলার উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম বুরুঙ্গা ছড়ার ফরিদ উদ্দিনের জেষ্ঠ সন্তান।
সোমবার সন্ধায় তাহিরপুর থানার এসআই নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সোমবার সন্ধায় নিহতের পিতা উপজেলার বুরুঙ্গা ছড়ার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন জানান, আমার বড় ছেলে শাহীন আলমের সাথে গত এক বছর পুর্বে পাশর্^বর্তী দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের বিন্নারবন হাফানিয়া গ্রামের ইউনুছ মিয়ার মেয়ে নার্গিস বেগমের বিয়ে হয়। আমার স্ত্রীর সাথে (শ্বাশুড়ি) প্রায় তিন মাস পুর্বে ঝগড়াঝাঁটি করে পুত্রবধূ তার বাবার বাড়ি চলে যায়। এরপর শাহীনের শ্বশুড় ইউনুছ মিয়া তার অপর মেয়ের জামাই আব্দুস ছাক্তার মিয়া নিজ গ্রাম বিন্নারবন হাফানিয়ার ও মেয়ের জামাতা বুরুঙ্গাছড়া গ্রামের কয়েকজন সালিসীকে নিয়ে সোমবার সকাল ১০টায় জামাতা শাহীনের বাড়িতেই সালিস বৈঠকের আয়োজন করান।
এদিকে রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শাহীনের বাড়িতে যান গ্রামের আব্দুল হান্নান নামে এক সালিসী। তিনি শাহীনকে সোমবারের ডাকা সালিস বৈঠকে সালিসীদের নিকট স্ত্রীকে নিয়ে ফের সংসার করার কখা বলার পরামর্শ দিয়ে রাতেই ফিরে আসেন।
এরপর সালিসীদের ভয়ে ভোররাত সাড়ে ৪টা হতে সাড়ে ৬টার মধ্যে বসত ঘরের নিজ শয়নকক্ষে শাহীন শয়ন কক্ষের আড়ার সাথে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্বহত্যা করেন।
সোমবার ভোরে শাহীনের মা হনুফা বেগম ছেলের কক্ষ্যে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে পরিবার ও প্রতিবেশীরা ছুঁটে আসেন।
শাহীনের পিতা ফরিদ উদ্দিন বলেন,আমার ছেলের স্ত্রী ঝগড়াঝাটি করে বাড়ি ছেড়ে চলে য্ওায়ায় মূলত তার শশুড় ইউনূছ আলী ও তার সাথে থাকা প্রভাবশালী চক্র সালিসের নামে আমার ছেলেকে আত্বহত্যার প্ররোচনায় প্রভাবিত করায় ছলে আমার সালিসীদের ভয়ে গলায় ফাঁস লঅগিয়ে আত্বহত্যা করেছে। তিনি বলেছেন,থানা পুলিশের পরামর্শে আপাতত অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছি, পুলিশ সঠিক তদন্ত করলেই আত্বহত্যার প্ররোচনার ঘটনা বেড়িয়ে আসবে।
সোমবার সন্ধায় নিহত শাহীনের শশুর উপজেলার বিন্নারবন হাফানিয়া গ্রামের ইউনুছ মিয়ার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত থাকায় তার পক্ষে নিহত শাহীনের ভায়রা ভাই আব্দুস ছাক্তার আত্মহত্যার প্ররোচনায় প্রভাবিত করার বিষয়টি অস্বীকার করার এক পর্যায়ে বলেন, সোমবার শাহীনের বাড়িতে সালিস বৈঠকে বসার কথা ছিল আমাদের। সালিসে আমাদের গ্রামের কয়েকজন ছাড়াও বুরুঙ্গা ছড়া গ্রামের সালিসী আব্দুল হান্নান সহ আরো কয়েকজন উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
তিনি আরো বলেন,আমার শ্যালিকা মূলত তার শাশুড়ি হনুফার বেগমের সাথে বনিবনা না হওয়ায় ঝগড়াঝাটির পর পিতার বাড়িতে চলে আসে, শাহীনের আত্বহত্যার প্ররোচনার জন্য আমার শশুড় বা আমরা দায়ী নই।##
Leave a Reply