জুড়ী প্রতিনিধি :: বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ ভাগ ইউনিয়নের পাথারিয়া সংরক্ষিত বনে সামাজিক বনায়নের নামে বাগান করার অজুহাতে আগুন দিয়ে প্রায় ৪০ হেক্টর জায়গা জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার জুড়ী মুমিত আসুক চত্বরে মানববন্ধন করতে প্রস্তুতি নিয়েছিল পাথারিয়া বন্য প্রাণী সংরক্ষণ টিম। সে অনুযায়ী প্রচারণা চালিয়েছিল টিমের সদস্যরা। একই স্থানে সোমবার রাতে হঠাৎ করে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন। একই স্থানে উভয় পক্ষের সভাকে কেন্দ্র করে অনাকাক্ষিত ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে জুড়ী থানা। একই স্থানে কর্মসূচি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরিবেশ কর্মীরা। এতে পরিবেশ কর্মীদের পূর্বঘোষিত মানববন্ধন স্থগিত হলেও শান্তি সমাবেশ ও মিছিল করে আওয়ামী লীগ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি মাসুক মিয়ার সভাপতিত্বে এ শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রন্জন দাস, জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল ইসলাম, ফুলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ সাজু, সহ সভাপতি সাইরুল আলম,যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জুয়েল রানা, সাংগঠনিক শাহ আলম, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আদনান আশফাক প্রমুখ।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি মাসুক মিয়া সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, পাথারিয়া বন্য প্রাণী সংরক্ষণ টিম মানবন্ধন আমার জানা নেই । আমরা সারা দেশের ন্যায় দেশব্যাপী বিএনপি জামাতের অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করি।
পাথারিয়া বন্য প্রাণী সংরক্ষণ টিমের সমন্বয়কারী খোরশেদ আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন মহোদয়ের এলাকার সংরক্ষিত বন আগুনে পুড়ল ৭ দিন। আমরা সেখানে গিয়ে সরেজমিনে দেখার পর বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানোর পর ও তারা টালবাহানা শুরু করেন। প্রাকৃতিক বনকে প্রকৃতির হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। এটা নিয়ে বানিজ্য না করার জন্য আমরা যে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলাম সেই স্থানে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দেওয়ার কারনে তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা মানববন্ধন করিনি।
মানববন্ধন ও শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের বিষয়ে জানতে চাইলে জুড়ী থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে টহল অব্যাহত ছিল অতিরিক্ত কোন পুলিশ মোতায়ন করা হয়নি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশ নিয়মিত টহল পরিচালনা করে থাকে।
৭ মার্চ থেকে পাথারিয়া সংরক্ষিত বনের প্রায় ৪০ হেক্টর জায়গা পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, বন বিভাগের লোকজন সেখানে সামাজিক বনায়ন করার জন্য সংরক্ষিত বাশ ও গাছ কেটে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। সেখানে থাকা বিভিন্ন ধরনের পশু, পাখি, কীটপতঙ্গরা ও মারা যাচ্ছে আগুনে। স্থানীয় সংবাদকর্মী ও পরিবেশ কর্মীরা সরেজমিনে পরিদর্শন করার পর বন বিভাগের লোকজন আগুন বন্ধ করে একটি তদন্ত টিম গঠন করে দেয়। কারা আগুন দিয়েছে সে বিষয়টি এখন ও তদন্তাধীন রয়েছে।#
Leave a Reply