বড়লেখায় শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত ৪ জয়িতার জীবন সংগ্রামের গল্প – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ফুলবাড়ীতে বিজিবি’র অভিযানে মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার সহকারি শিক্ষকদের সাটডাউন- বড়লেখায় কক্ষের তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ালেন অভিভাবকরা কুলাউড়ার মুরইছড়া  সীমান্তে  ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফের গুলিতে  যুবক নিহত কুলাউড়ায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের বার্ষিক টাউন হল মিটিং কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে হবে- ইউএনও মহিউদ্দিন বড়লেখায় প্রধান শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার

বড়লেখায় শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত ৪ জয়িতার জীবন সংগ্রামের গল্প

  • শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩

Manual7 Ad Code

আব্দুর রব ::

Manual3 Ad Code

নানা প্রতিবন্ধতকা ও দারিদ্রতার মধ্যেও জীবন সংগ্রামে উদ্যমী অনেক নারী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করে সমাজ ও দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। যারা কঠিন সংগ্রামে যোগ্যতা অর্জন করে চাকুরী ও স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে নিজেরা হয়েছেন স্বাবলম্বী, এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছেন অন্যদেরও। কিন্তু জীবন সংগ্রামে বিজয়ী এদের প্রতিষ্ঠা লাভের দুর্বিসহ গল্প জানে না অনেকেই।

Manual2 Ad Code

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সৌমিত্র কর্মকার জানান, বড়লেখায় ২০২২ সালের জয়িতা অন্বেষণে অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও চাকুরী, সংসার ও নারী নির্যাতনের বিভীষিকা মূছে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানো এমন চারজন সফল নারীকে খোঁজে এনে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবসে সম্মাননা দিয়েছে বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। এরা হলেন হাসি রাণী দত্ত, ছালেহা বেগম, সালমা বেগম ও শাহানাজ আক্তার।

Manual2 Ad Code

শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী হাসি রাণী দত্ত গোলাপগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার সামান্য রোজগারে চলতো সংসার। ৫ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। হঠাৎ বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে সংসারের সমস্থ ভার পড়ে হাসি রাণী দত্তের উপর। আর্থিক টানাপোড়েন স্বত্তেও তিনি নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় লেখাপড়া চালিয়ে যান। গ্রামের একমাত্র মেয়ে হিসেবে তিনি ১৯৬৩ সালে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেননি। সংসারের চাকা সচল ও ভাইবোনদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়াসহ সমস্থ কিছুর হাল ধরেন তিনি। এ সময় তিনি সরকারী প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়ে যান। এরমধ্যে তার বাবাও মারা যান। তখন তিনি নিজেই সবকিছু সামাল দেন। ৪ ভাইবোনকে লেখাপড়া করিয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই আজ সু-প্রতিষ্ঠিত। ১৯৬৬ সালে তিনি বিবাহসূত্রে বড়লেখায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং উপজেলার বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুনামের সাথে চাকুরি করেন। তিনি ২ ছেলেমেয়েকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। বড়ছেলে স্বনামধন্য ডাক্তার। ছোট মেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে পোস্ট গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করেছেন। তিনি মা হিসাবে যেমন সফল তেমনি শিক্ষক হিসাবেও সফল ও সার্থক। হাসি রাণী দত্তের জীবন সংগ্রাম, তার পথ চলা, শিক্ষা ক্ষেত্রে তার অবদান নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের অনুকরনীয় এবং অনুসরনীয় দৃষ্টান্ত।

সফল জননী ছালেহা বেগমের স্বামী ছিলেন বড়লেখা উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম। ২০০৯ সালে হার্টএটাকে তিনি মারা গেলে চোখেমুখে অন্ধকার দেখেন। কিভাবে তিনি তার (ছয়) সন্তানকে মানুষ করবেন? অভাব অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে বড় মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ করে বিয়ে দিয়ে দেন। ছেলেমেয়েদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য তিনি যখন যে কাজ পেতেন তাই করতেন। তিনি হাস-মুরগী, গরু-ছাগল পালন করে সংসারের ব্যয় মিটিয়েছেন। তিনি সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে নিজের কানের সোনার দুল পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। কষ্ট হলেও তার ছেলেমেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তার বড় ছেলে বি,বি,এ (ম্যানেজমেন্ট) অধ্যায়নরত অবস্থায় হাওর প্রকল্প এর তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে চাকরিরত আছেন। মেজো মেয়ে মৎস্য অধিদপ্তরে উপসহকারী মৎস্য কর্মকর্তা (১০ম গ্রেড) হিসাবে কর্মরত। সেজো মেয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত আইজিএ প্রজক্টের ফ্যাশন ডিজাইনার ট্রেডের প্রশিক্ষক। ছোট ছেলে সিলেট এমসি কলেজ হতে সম্প্রতি জুওলজি বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। ছোট মেয়ে ডিগ্রী ৩য় বর্ষের ছাত্রী। কঠিন দারিদ্রের মাঝেও ছালেহা বেগম তার সন্তানদের মানুষ করতে যে লড়াই করেছেন তা সত্যই প্রশংসনীয়।

নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করা নারী সালামা বেগম : কেউ যদি দূরদর্শী হয়, আকাঙ্খা বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়, সমাধান আছে- এমন ধারণা নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়, তাহলে সাফল্য আসবেই। এমনই এক সাহসী নারীর প্রতীক সালমা বেগম। দারিদ্র তার চলার পথকে করেছে কন্টকময়। সালমা বেগম নিজের চেষ্টাতে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। ভিটে-মাটি বিক্রি করে সন্তানের সুখের আশায় মা বাবা সালমা বেগমকে বিয়ে দেন। তাদের একটি মেয়ে সন্তান হয়। তার স্বামী প্রায়ই যৌতুকের জন্য সালমা বেগমকে নির্যাতন করে। মাদকাসক্ত স্বামী একসময় তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। এতে থেমে যায়নি তার পথ চলা। তিনি সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সারাদিন সেলাই কাজ করে গ্রামের মানুষের কাপড় জামা তৈরী করে দেন। সেলাই করে যে আয় রোজগার হয় তা দিয়ে সংসার চালান। এরমাঝে অনেক আশা নিয়ে তিনি ২য় বিবাহ করেন। ২য় বিবাহ বেশিদিন টিকেনি। স্বামীর সাথে বিচ্ছেদের পরও ভেঙ্গে পড়েননি। সেলাই কাজকে পেশা হিসাবে বেছে নেন। প্রচুর পরিশ্রম করে অবস্থার পরিবর্তন ঘটান। গ্রামের অনেক দরিদ্র মেয়ে তার কাছ থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন তারা স্বাবলম্বী। সংসার খরচের পর উদ্বৃত্ত টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করতে চান। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করে জীবন যুদ্ধে জয়ী সালমা বেগম।

Manual6 Ad Code

সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখা শ্রেষ্ঠ জয়িতা শাহানাজ আক্তার: জীবন সংগ্রামে লড়াই করা এক নারী শাহানাজ আক্তার। একজন সমাজ সেবক হিসাবে তিনি এলাকার যে কোন সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক বিরোধী আন্দোলন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে তিনি সোচ্চার ভূমিকা রাখেন। মানুষের প্রতি তার দরদ এবং ভালোবাসার স্বীকৃতি স্বরূপ এলাকার জনগণ তাকে ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপির সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করেন। মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর সমাজসেবার মত বিষয়টি তার কাছে আরো সহজ হয়ে যায়। তিনি এলাকার রাস্তা-ঘাট, পুল-কার্লভাট ইত্যাদি নির্মাণ ও উন্নয়নে জোরালো ভূমিকা রাখছেন। আর এই ভাবেই তিনি সমাজসেবায় অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!