এইবেলা, বড়লেখা :
হাকালুকি হাওরের বিলগুলোতে পাখি নিধনে অসাধু শিকারি চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। পাখি নিধনকারিরা যেন অপ্রতিরোধ্য। সংঘবদ্ধ শিকারি চক্র রোববার রাতে মালাম বিলে বিষটোপ দিয়ে পাঁচ শতাধিক অতিথি পাখি নিধন করেছে। সকালে স্থানীয় লোকজন উৎসব করে মৃত পাখি সংগ্রহ করেছে।
বড়লেখা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইনের নির্দেশে স্থানীয় সহকারি ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
অভিযোগ ওঠেছে জলমহালের ইজাদার নিয়োজিত পাহারাদার, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের গার্ড ও স্থানীয় ভিসিজি (গ্রাম সংরক্ষক দল) সদস্যদের উৎকোচ দিয়ে অসাধু শিকারিরা বিলে বিষটোপ ও ফাঁদ পেতে দেশিয় ও অতিথি পাখি নিধন করছে। এতে হাওরে প্রতি বছর অতিথি পাখির আগমণ হ্রাস পাচ্ছে।
জানা গেছে, এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ জলাভুমি হাকালুকি হাওরে প্রতি শীতের শুরুতে শীতপ্রধান নানা দেশের পাখি আসতে থাকে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত হাওরের জলাশয়গুলো (বিল) এসব অতিথি পাখির কলতানে মূখরিত হয়ে উঠে। এবার হাওরে তেমন পাখির দেখা মিলেনি। যে কয়টি বিলে কিছু পাখির আগমণ ঘটেছে সেখানেও হানা দিচ্ছে অসাধু শিকারিরা। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে হাওরের চাতলা, নাগুয়া, পিংলা বিলসহ কয়েকটি বিলে বিষটোপে ব্যাপক পাখি মারা যেতে দেখা যায়। অন্যবছর শিকারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তৎপরতা, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে দেখা গেলেও এবার তা চোঁখে পড়েনি। সোমবার সকালে মালাম বিলের তীরবর্তী বাসিন্দারা বিলের পারে ব্যাপক হাঁস জাতীয় মৃত পাখি পড়ে থাকতে দেখেন। অনেকেই উৎসব করে তা সংগ্রহও করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায় হাওরপাড়ের বর্নি ইউনিয়নের কাজিরবন্দ ও নোয়াগাঁয়ের চিহ্নিত পাখি শিকারি আলী রাজা ও সফিক মিয়ার নেতৃত্বে শিকারী চক্র রোববার রাতে মালাম বিলে বিষটোপ দিয়ে ব্যাপক পাখি শিকার করেছে। বিলের পাহারাদার মুহিবুর রহমানের সাথে আঁতাত করেই শিকারি চক্র বেশ কয়েকদিন ধরে পাখি নিধন করছে। শিকারিরা দেড়/দুইশ’ পাখি ধরে নিলেও তাদের বিষটোপে রোববার রাত ও সোমবার সকালে মালাম বিলে অন্তত ৫শ’ পাখি মারা গেছে।
বড়লেখা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, খবর পেয়েই তিনি হাকালুকি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি তহশিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন। পাখি নিধনে জড়িত চক্রের সদস্যদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply