এইবেলা, বড়লেখা :
বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। এব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষার্থী অভিভাবক বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী মাহি আবিদ, ইউপি সদস্য মকসুদ আহমদ রানা, রিফাত বিন শাওন, শিক্ষার্থী অভিভাবক শাবুল আহমদসহ অনেকের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৪৮ সালে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত সময়ে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধনে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপন করা হয। কিন্তু বর্তমান অধ্যক্ষসহ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য ধ্বংস করে টিলা কেটে এবং সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে। এতে মার্কেটের পাশে বখাটেরা দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। বিদ্যালয়ের দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে ভর্তি ফি’র নামেও মাসিক বর্ধিত বেতন আদায় করে ওই টাকা হতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেআইনীভাবে ১২ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক বেতন প্রদান করা হচ্ছে। এতে দরিদ্র অভিভাবকদের ওপর চরম চাপ পড়ছে। এ নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা, ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। অপরদিকে প্রতি বছর ছাত্রছাত্রী ভর্তি কালীন দরিদ্র ছাত্রছাত্রীর নিকট থেকে ভর্তি ফি কম নেওয়ার জন্য এলাকার গণমান্য ব্যক্তিরা সুপারিশ করেন। বিষয়টিকে পাশ কাটাতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধিক ভর্তি ফি আদায়ের লক্ষে স্থানীয় একটি এজেন্ট ব্যাংকে বিদ্যালয়ের নামে একাউন্ট খুলে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভর্তির টাকা জমা দিতে চাপ প্রদান করেন। ২০২৪ সালের ভর্তি ফি কথিত এজেন্ট ব্যাংকে জমা দিয়ে রশিদ সাথে নিয়ে আসলে ভর্তি করা হয়। এতে শাহবাজপুর এলাকার দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যার ফলে শত শত শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে গাছ ও টিলা কেটে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। যার ফলে বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীসহ এলাকার সচেতন মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এলাকাবাসির ক্ষোভকে সাময়িক প্রশমিত করতে বিদ্যালয়ের পশ্চিম দিকে মার্কেট নির্মাণের কথা বলেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ গত ২/৩ দিন ধরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ ও স্কুলের ঐতিহ্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্কুলের পূর্ব দিকে স্কুলের ভূমির সাথে সরকারি সড়কের ভূমি ঢুকিয়ে মার্কেট নির্মাণ করছেন। যার ফলে স্কুলের শত বছরের গাছ ও টিলা কাটা পড়বে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যার রফিক উদ্দিন আহমদ জানান, প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম-দুর্নীতির সমুদয় বিষয় তিনি পূর্ব থেকে অবহিত। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অভিযোগটির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে সুপারিশ করেছেন।
এব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুল বাছিত জানান, গভর্নিংবডির অনুমোদনক্রমে তিনি সব কার্যক্রম চালাচ্ছেন। স্কুলের নিজস্ব ভূমিতে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে এবং বর্তমানেও একাংশে নির্মাণ কাজ চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজরাতুন নাঈম জানান, অভিযোগ পেয়েছেন। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply