কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের ক্যামেলিয়া লেক থেকে ডবলছড়া খাসিয়াপুঞ্জি পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার কাঁচা সড়ক। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এর ফলে স্থানীয় বাজারসহ ডবলছড়া সীমান্তের একটি চা বাগান ও খাসিয়াপল্লির মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শমশেরনগর ইউনিয়নের প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের দুরাবস্থা। এতে করে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা। অনেকেই আবার চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে আসার আগে পথেই মারা যাচ্ছেন। বিশেষ করে বৃদ্ধা ও গর্ভবতী নারীরা রাস্তার বেহাল থাকার কারণে বিপাকে পড়ছেন। জনদুর্ভোগ লাগবে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান যানবাহন চালক ও এলাকাবাসী।
চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ, শমশেরনগর বাজার চৌমুহনী থেকে ক্যামেলিয়া সড়ক পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা পাকা রয়েছে। এরপর ক্যামেলিয়া সড়ক থেকে ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার কাঁচা সড়কের অধিকাংশ স্থানে ছোট-বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চলাচলের
অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবত এ সড়ক সংস্কারে কেউ নজর দিচ্ছেন না। চা বাগান পুঞ্জি এলাকায় প্রায় সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ঘুরতে আসেন। অনেক সরকারি কর্মকর্তারাও আসেন। সবাই দেখে যান এবং বলেন সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলবেন যেন এই রাস্তাটা দ্রুত সংস্কার করা হয়। এসব শান্তনা মূলত তারা দেন। আসলে কাজের কাজ কখনো হয়নি।
বৃষ্টি হলেই খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয় সড়কটিতে। সড়কের এই দুরাবস্থায় স্কুল, কলেজগামী ও পণ্য পরিবহনসহ যাতায়াতে দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কটিতে চলাচলকারী রিকশা, ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাসের যন্ত্রাংশ। ফলে নষ্ট গাড়ি মেরামত করতে গিয়ে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে চালকদের। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা সড়কটি সংস্কারের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় আশাহত স্থানীয়রা।
স্থানীয় স্নাতক ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী দিপু বলেন, বাড়ি থেকে আমার কলেজের দুরত্ব ২৫ কিলোমিটার। বাড়ি থেকে ৭ কিলোমিটার সড়ক আমি হেঁটে যাই। পরে সেখান থেকে গাড়ি করে কলেজে যাতায়াত করি। কিন্তু ভাঙা রাস্তায় চা বাগানের ট্রাক্টর ও অন্যান্য যানবাহন চলাচলের কারণে প্রচুর ধুলাবালি হয়। এ ছাড়া বেহাল রাস্তার কারণে প্রায়ই হাঁটার রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহন তুলে দেন চালকরা। এজন্য দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা থাকে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পাইড়তেলী কুর্মী বলেন, সড়কের এমন অবস্থার কারণে প্রায় দুর্ঘটনায় পড়তে হয় স্থানীয়দের। আমি ইউনিয়ন পরিষদ ও এমপি স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি দ্রুত হবে।
শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জুয়েল আহমেদ বলেন, এই রাস্তার জন্য আমি মাসিক সমন্বয় সভায় কথা বলেছি। সেখানে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারসহ অনেকজন ছিলেন। তারা বলেছেন দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের ভিতরে কাজ শুরু হবে।#
Leave a Reply