এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বনবিভাগের যোগসাজশে প্রতিদির রাতের আধারে গাছ পাচার করে একটি সংঘবদ্ধচক্র। গাছপাচারকারীদের ব্যবহৃত গাড়ীতে এলাকার দু’টি রাস্তা চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারে মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় গাড়ির (ট্রাক) আসা যাওয়া। শেষ রাত পর্যন্ত এসব গাড়ির চলাচলের শব্দ শোনা যায়। এসব গাড়িতে গাছ ও মাটি বোঝাই করা থাকে। অনেক সময় দিনের বেলায়ও গাছ বোঝাই গাড়িকে যাতায়াত করতে দেখা যায়। গাছ ও মাটি পাচারকারী চক্রের গাড়ী চলাচলের জন্য বিজয়া- পাঁচপীর জালাই এবং রংগীরকুল গাজীর মহল হতে পাঁচপীর হয়ে গুগালিছড়া-রতœা পর্যন্ত যাতায়াতের রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের গাছ ও মাটি বহনের জন্য এ দুটি রাস্তাকে নিরাপদ হিসেবে ব্যবহার করছে। যার ফলে দুটি রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং কালভার্ট ভেঙে গিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় লোকজন গাছ ব্যবসায়ীদেরকে রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা বললে তারা তাতে কোন কর্ণপাত না করে উল্টো দম্ভোক্তি করে বলে, সরকারি রাস্তা, নস্ট হলে সরকারই ঠিক করবে। স্থানীয় লোকজন আরও বলেন, এসব ব্যবসায়ীরা কুলাউড়া রেঞ্জের গাজীপুর বনবিট অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই বীরদর্পে গাছ পরিবহন করছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, বন বিভাগের লোকজনকে ম্যানেজ করেই তারা গাড়ি দিয়ে গাছ পরিবহন করেন। গাজীপুর বিট অফিস থেকে লাইন ক্লিয়ারেন্স ছাড়া কেউ গাছ কেটে নামাতে পারে না। এজন্য বিট অফিসে ট্রাক প্রতি ৫শ টাকা, টাটা পিক-আপ প্রতি ৩শ টাকা এবং ট্রলি প্রতি ২শ টাকা হারে দিয়ে লাইন ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। আর যে ব্যবসায়ী এ নিয়ম অমান্য করবেন তিনি গাছ নামাতে পারবেন না। লাইন ক্লিয়ারেন্স নেই এমন চালান তারা মাঝে মধ্যে আটক করে বিট অফিসে নিয়ে যান। গাছ নামানোর খবর আদান- প্রদান এবং লাইন ক্লিয়ারেন্স করে দেয়ার জন্য গাজীপুর বন বিটের সোর্স রয়েছে। মূলত এসব সোর্সরাই মাঝে মাঝে গাছের চালান ধরায় আবার বড় অংকের টাকার মাধ্যমে দফারফা করে দেয়।
গাজীপুর বনবিট এলাকার লোকজন জানান, কুলাউড়া রেঞ্জে নতুন রেঞ্জার যোগদানের পর কাঠ ও বাঁশ পাচার আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। সন্ধ্যা হলেই গাজীপুর বিট অফিসে বেড়ে যায় পাচারকারীদের আনাগোনা। সম্প্রতি কুলাউড়ায় জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিনিময় সভায় কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু খাসিয়া কর্তৃক বাঁশমহাল জবর দখল নিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সভায় অভিযোগ উত্থাপন করেন। কিন্তু রেঞ্জ কর্মকর্তা এব্যাপারে কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি। সম্প্রতি গাজীপুর রিজার্ভ ফরেস্টের রেহানা ফাঁড়ি এলাকায় বিপুল পরিমাণ বনভূমি জবর দখল করে পানচাষ করছে খাসিয়ারা।
গাজীপুরের বিট অফিসার মনিরুল ইসলাম জানান, রেহানা এলাকায় বনভূমি জবর দখলের বিষয়ে কোন সুদুত্তোর দিতে পারেননি।
কুলাউড়া রেঞ্জার রেজাউল হক জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ গাড়ী আটকে খবর দিলে ব্যবস্থা নেবো।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, অবিলম্বে এব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। #
Leave a Reply