কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের ইংরেজিতে লিখা অভিযোগপত্র ও চিঠি প্রদান করা হয় – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
একদল অপকর্ম করে পালিয়েছে, আরেকদল সেই অপকর্মের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে : শফিকুর রহমান আধ্যাত্মিক, মানবিক দর্শন ও লোক ক‌বি সাধক হাসন রাজার মৃত্যুবার্ষিকী আজ আজ বড়লেখা মুক্ত দিবস : মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আলোচনা সভা প্রয়াত ডা. পবন চন্দ্র দেবনাথের ছোট ভাই ব্রজেন্দ্র দেবনাথ আর নেই কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ফুলবাড়ীতে বিজিবি’র অভিযানে মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার সহকারি শিক্ষকদের সাটডাউন- বড়লেখায় কক্ষের তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ালেন অভিভাবকরা

কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের ইংরেজিতে লিখা অভিযোগপত্র ও চিঠি প্রদান করা হয়

  • রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

Manual8 Ad Code

এইবেলা, কমলগঞ্জ ::

সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারে উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকলেও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বিভিন্ন চা বাগান সমুহে তা মানা হচ্ছে না। ১৯৫২ সালে সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারের আত্মবলিদানের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতি মাতৃভাষার স্বীকৃতি অর্জন করে। ভাষা আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে আজ সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক।

Manual2 Ad Code

এমনকি সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও ঔপনিবেশিক মানসিকতায় কিছু চা বাগান সমুহে তা মানা হচ্ছে না। আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি চা বাগানের নিরক্ষর শ্রমিকদের এখনও ইংরেজিতে লিখা অভিযোগপত্র ও চিঠি প্রদান করা হচ্ছে। ফলে চা বাগানের লেখাপড়া না জানা শ্রমিকরা ভোগান্তি ও হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় ডানকান ব্রাদার্স লিমিটেড কোম্পানীর পরিচলনাধীন আলীনগর চা-বাগানের একজন স্থায়ী নারী শ্রমিক অর্চনা গোয়ালা এবং শমসেরনগর চা-বাগানের শ্রমিক সবিতা রিকিয়াশন। সবিতা, অচর্নার মতো চা-শ্রমিকরা প্রতিদিন ২৩ কেজি কাঁচা চা-পাতা উত্তোলনের বিনিময়ে ১০২ টাকা মজুরি পেয়ে থাকেন। এই দিয়েই তাদের সংসার চালানোর পাশাপাশি সন্তানের লেখাপাড়া, চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ নির্বাহ করতে হয়।

বাগান কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অথবা কোম্পানীর কোন নিয়ম পালনে ব্যতয় ঘটলে আবার শ্রমিকদের বক্তব্য অনুযায়ী কোন কারণে কর্তৃপক্ষ কোন শ্রমিকের উপর অসন্তুষ্ট হলেই শ্রমিকদেরকে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) প্রদান করা হয়। নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই অভিযোগপত্রের জবাব শ্রমিককে প্রদান করতে হয়। সবিতা, অর্চনা, দেওরাজ, স্বরসতিসহ চা বাগানের শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই আমরা চা শ্রমিকরা পড়ালেখা তেমন একটা জানি না। এসব অভিযোগপত্রের জন্যে নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব প্রদান করতে হয়। তখন আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। বিভিন্ন লোকের কাছে ধর্না দিয়ে অনেক ভোগান্তি পোহানোর পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব দিতে হয়।

তারা আরও বলেন, শ্রমিকদের কেউ কেউ কোন মতে নাম লিখতে শিখেছে। অন্যরা টিপসহি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তাদের সন্তানরা কিছু কিছু শিক্ষা গ্রহণ করছে। তবে ইংরেজি বুঝার মতো চা বাগান খোঁজে দু’একজন লোক পাওয়াও দুরহ ব্যাপার।

শ্রমিকরা বলেন, বৃটিশ আমল থেকে এখন পর্যন্ত ইংরেজিতে অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে। ফলে এর জবাব লিখতে তারা বাগানের বাইরের শিক্ষিত লোকদের কাছে ধর্না দিতে হয়।

Manual8 Ad Code

শমশেরনগর ইউপি সদস্য ও মাসিক চা মজদুর সম্পাদক সীতারাম বীন বলেন, বৃটিশ আমল থেকে এখন পর্যন্ত তাদের ইংরেজিতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হচ্ছে। তারা ইংরেজি পড়তে ও লিখতে পারেন না। ফলে ইংরেজিতে দেয়া অভিযোগপত্রের জবাব লিখতে বাগানের বাইরের শিক্ষিত লোকদের কাছে গিয়ে ধর্না দিতে হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঔপনিবেশিক নিয়মে আগে সবগুলো চা বাগানে ইংরেজিতে শ্রমিকদের অভিযোগপত্র দেয়া হতো। কমলগঞ্জ উপজেলার ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসি) ও ব্যক্তি মালিকানাধীন চা বাগান সমুহে অধিকাংশ অফিসিয়েল কাজ ইংরেজিতে হলেও চা শ্রমিকদের চার্জশিট বা কাগজপত্র বাংলায় প্রদান করা হয়। তবে ডানকান ব্রাদার্সের মালিকানাধীন চা বাগান সমূহে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর এখনও ইংরেজিতে চার্জশিট দেয়া হচ্ছে। পূর্বের ধারাবাহিকতায়ও সম্প্রতি শমশেরনগর চা বাগানের ফাঁড়ি দেওছড়া চা বাগানের কয়েকজন শ্রমিককে ইংরেজিতে চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে।

আদালতে নির্দেশ উপেক্ষা করে ইংরেজিতে চার্জশিট প্রদান বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট ইমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উচ্চ আদালতের সকল আদেশ অধিনস্থ আদালত সহ সর্বোচ্চ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রদত্ত আদেশের সুস্পষ্ট লংঘন বলে আমি মনে করি।’ তিনি আরও বলেন, কমলগঞ্জের শমশেরনগর সহ দেশের বিভিন্ন চা বাগানে ঔপনিবেশিক আমল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ইচ্ছে করে এই ধারা অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, ইংরেজি চার্জশিটের ফলে চা শ্রমিকদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। চা বাগানে উচ্চ আদালতের এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হওয়া উচিত।

ইংরেজিতে চার্জশিট প্রদান সম্পর্কে জানতে চেয়ে শমশেরনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেনের মোবাইল ফোনে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগানের একজন স্টাফ জানান, দীর্ঘ সময় থেকে প্রচলিত হয়ে আসা ইংরেজীতে অভিযোগপত্রসহ সববিষয়েই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে এটি পরিবর্তন কিছুটা সময় সাপেক্ষ।

শ্রীমঙ্গলস্থ কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান বলেন, কিছু কিছু চা বাগানে ইংরেজীতে অভিযোগ ও চিঠিপত্র প্রদান করছে এমনটি দেখা যায়। তবে বাংলা ভাষা ব্যবহারে আমরা তাদের বলে থাকি। আশা করা হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে সবকিছু বাংলায় ব্যবহার হবে।

Manual3 Ad Code

উল্লেখ্য, দেশের সব অফিস আদালতে সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে ইতিপূর্বে উচ্চ আদালত নির্দেশনা প্রদান করেছেন।#

Manual6 Ad Code

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!